কৃষিঋণ বিতরণ কমেছে

কৃষিখাতে ঋণ বিতরণের পরিমাণ কমেছে। অর্থবছরের প্রথম ৮ মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) এ খাতে ঋণ বিতরণ কমেছে প্রায় ২ শতাংশ।

ছবি সংগৃহীত
ছবি সংগৃহীত

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ব্যাংকগুলো কৃষি খাতে ৯ হাজার ৯১৪ কোটি ১০ লাখ টাকার ঋণ বিতরণ করেছে। আগের বছরের একই সময়ে বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ছিল ১০ হাজার ১০৭ কোটি ৮৫ লাখ টাকা।

এ হিসাবে ৮ মাসে ঋণ বিতরণ কমেছে ১৯৩ কোটি ৭৫ লাখ টাকা বা ১ দশমিক ৯১ শতাংশ।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অন্য খাতের তুলনায় কৃষিঋণে সুদহার কম হওয়ায় ব্যাংকগুলো অনাগ্রহ দেখাচ্ছে। আর ঋণ নিতে গিয়ে বিভিন্ন ধরনের হয়রানি এবং মামলার ভয়ে কৃষকরা ব্যাংক বিমুখ হয়ে পড়ছেন।

প্রতিবেদনে দেখা গেছে, চলতি অর্থবছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মোট লক্ষ্যমাত্রার ৬৩ দশমিক ৭৬ শতাংশ ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। আগের অর্থবছরের একই সময়ে এই বিতরণের হার ছিল ৬৯ দশমিক ২৬ শতাংশ।

বেসরকারি ও বিদেশি ব্যাংকগুলোর তুলনায় রাষ্ট্রায়ত্ত ও বিশেষায়িত খাতের ব্যাংকগুলো ঋণ বিতরণে পিছিয়ে রয়েছে।

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, রাষ্ট্রীয় মালিকানার সোনালী, জনতা, অগ্রণী, রূপালী, বেসিক, বাংলাদেশ কৃষি ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক পুরো অর্থবছরের ৯ হাজার ২৪০ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ৮ মাসে ৫ হাজার ৮৩৫ কোটি ৯৫ লাখ টাকা বিতরণ করেছে।

আগের অর্থবছরের একই সময়ে ৮ হাজার ৯৫০ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে বিতরণ করেছিল ৬ হাজার ৫৪১ কোটি ২৮ লাখ টাকা। এ হিসাবে তাদের বিতরণ কমেছে ৭০৫ কোটি ৩৩ লাখ টাকা।

আর বেসরকারি ও বিদেশি ব্যাংকগুলোর জন্য চলতি অর্থবছরে ৬ হাজার ৩১০ কোটি টাকা ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। ৮ মাসে তাদের বিতরণ হয়েছে ৪ হাজার ৭৮ কোটি ১৫ লাখ টাকা। আগের অর্থবছরের একই সময়ে ৫ হাজার ৬৪৫ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে বিতরণ ছিল ৩ হাজার ৫৬৬ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। সে হিসাবে ৮ মাসে বেসরকারি ও বিদেশি ব্যাংকগুলোর ঋণ বিতরণ বেড়েছে ৫১১ কোটি ৫৮ লাখ টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কৃষিঋণ ও আর্থিক সেবাভুক্তি বিভাগের মহাব্যবস্থাপক প্রভাষ চন্দ্র মল্লিক বলেন, চলমান হরতাল-অবরোধের কারণে ঋণ চাহিদা কিছুটা কমেছে। কারণ কৃষক ঋণ নিয়ে পণ্য উৎপাদন করলেও বাজারজাত করতে পারছে না। কৃষকদের এ সমস্যার কথা মাথায় রেখে বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের জন্য কিছু সুবিধা দিচ্ছে। তবে ব্যাংকগুলো যেন কৃষকদের সঠিকভাবে এসব সুবিধা দেয় সে বিষয়ে কঠোর তদারকি করবে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ বিষয়ে প্রতি মাসেই ব্যাংকগুলোর সঙ্গে আলাদাভাবে বৈঠক করা হচ্ছে।