

আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে গম রপ্তানিতে টনপ্রতি অন্তত ৩৫ ইউরো শুল্ক আরোপ করবে রাশিয়া। দেশটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মুদ্রা রুবলের দরপতন রাশিয়ার অর্থনীতিকে ধাক্কা দেওয়ায় দেশিয় বাজারে পণ্যটির দাম কমিয়ে আনতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার এক ডিক্রি জারি করে সরকার শুল্ক আরোপের এই ঘোষণা দিয়েছে।
এএফপির বরাত দিয়ে শুক্রবার টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক খবরে বলা হয়েছে, চলতি বছরে রুবলের দাম ডলারের বিপরীতে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়। ডলার আর রুবলের এই মূল্য পার্থক্য কমিয়ে আনতে শুল্ক আরোপ করা হচ্ছে।
প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, এ বছরে রাশিয়ায় গম উৎপাদন রেকর্ড ছাড়িয়ে না গেলেও তার কাছাকাছি গেছে। তবুও দেশিয় বাজারে পণ্যটির দাম ছিল উর্ধ্বমুখী। এদিকে কৃষকরা চাইছেন বিদেশি মুদ্রার সাথে সমন্বয় করে গম রপ্তানি করতে।
চীনের উপ-প্রধানমন্ত্রী আরকাদি ভরকোভিস বৃহস্পতিবার বলেছেন, রপ্তানির ক্ষেত্রে কৃষকরা প্রতিটন গমে প্রায় ২২৫ ইউরো করে পাবেন। অন্যদিকে দেশিয় বাজারে বিক্রিতে টনপ্রতি ১৬০ ইউরো করে পাবেন। আগামী বছরের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে এই শুল্ক আরোপ কার্যকরী হয়ে ৩০ জুন পর্যন্ত চলবে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত কয়েক সপ্তাহে আন্তর্জাতিক বাজারে গমের দাম অনেক বেড়ে যায়। এতে ব্যবসায়ীরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিল যে, গম রপ্তানিতে বিশ্বে ৩য় স্থানে থাকা রাশিয়া তাদের রপ্তানি বন্ধ করে দিতে পারে; ২০১০ সালে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে কম উৎপাদন হওয়ায় করা যেমনটি রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল।
রাশিয়ার গম উৎপাদনকারীদের একটি বাণিজ্য সংগঠন দাবি করে, সরাসরি রপ্তানি বন্ধ করার চেয়ে শুল্ক আরোপ তুলনামূলক শ্রেয়। তবে কৃষকদের আয় কমে যেতে পারে; আগামী বছরের উৎপাদনে প্রভাব ফেলতে পারে- এমন যে কোনো পদক্ষেপের ওপরও লক্ষ্য রাখতে হবে।
এদিকে কৃষক ইউনিয়নের এক সংগঠন সতর্ক করে বলেছে, গম রপ্তানির ওপর শুল্ক আরোপে আন্তর্জাতিক বাজার বিশেষ করে তুর্কি, মিশর ও ইরানের মতো দেশে রাশিয়ার খ্যাতি ও বিশ্বাসযোগ্যতা হারানোর সম্ভাবনা রয়েছে।
দেশটির সরকারি তথ্যানুযায়ী, গত জুলাইতে রাশিয়ার রপ্তানি মৌসুম শুরু হয়েছে। এ মৌসুমে ২৮ মিলিয়ন টন গম রপ্তানি হওয়ার কথা রয়েছে। ইতোমধ্যে যার ২১ মিলিয়ন টন রপ্তানি শেষ হয়েছে। গত জুন মাসে শেষ হওয়া মৌসুমে দেশটি ২৫.২ মিলিয়ন টন রপ্তানি করে।
এস রহমান/