

হীরা বাণিজ্যে ভারতের আধিপত্য হুমকির মুখে পড়েছে চীনের উত্থানে।
শুক্রবার এক খবরে রয়টার্স জানিয়েছে, চীনে প্রক্রিয়াজাত হীরার উৎপাদন বাড়ার ফলে এ খাতে বিশ্বের শীর্ষ উৎপাদক ভারতের অবস্থান টালমাটাল হয়ে পড়েছে।
গত পাঁচ বছরে চীনের প্রক্রিয়াজাত হীরার রপ্তানি ৭২ শতাংশ বেড়ে ৮৯০ কোটি মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে।
উল্লেখিত সময়ে এ খাতে ভারতের প্রবৃদ্ধি মাত্র ৪৯ শতাংশ। যদিও ১ হাজার ৪০০ কোটি মার্কিন ডলারের হীরা রপ্তানির মাধ্যমে শীর্ষ অবস্থান অক্ষুণ্ন রেখেছে দেশটি।
কিন্তু চীনের উত্থানের কারণে অচিরেই এ ক্রমে পরিবর্তন আসতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
জাতিসংঘের তথ্যানুযায়ী, গত দশকে হীরা বাজারে চীনের দখল তিনগুণ বেড়ে ১৭ শতাংশে উন্নীত হয়েছে, যেখানে ভারতের শেয়ার ১৯ থেকে ৩১ শতাংশে উঠানামা করেছে।
রয়টার্স জানিয়েছে, চলতি বছরেও ভারতের হীরা রপ্তানিতে স্পষ্ট পতন পরিলক্ষিত হয়েছে। লোকসানের মুখে পড়ে কর্মীদের ছুটি দিতে বাধ্য হয়েছেন ভারতীয় ব্যবসায়ীদের অনেকেই।
প্রসঙ্গত, আফ্রিকা এবং রাশিয়ার খনি থেকে আহরিত অশোধিত হীরা মধ্যস্বত্ত্বভোগীদের মাধ্যমে ভারতের ব্যবসায়ীরা সংগ্রহ করেন।
ওই হীরা প্রক্রিয়াজাত করে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই, ইসরায়েলের তেলআবিব এবং বেলজিয়ামের আন্তারাপের মতো প্রধান বিক্রয় অঞ্চলগুলোতে সরবরাহ করে দেশটি।
কিন্তু চীন সরাসরি আফ্রিকার খনি থেকে আহরিত অশোধিত হীরার ‘নিয়ন্ত্রণ’ নেওয়ার মাধ্যমে পূর্বের প্রতিষ্ঠিত বাণিজ্যপথকে ভেঙ্গে দিয়েছে। এসব খনিতে চীনা কোম্পানিরগুলোর অংশীদারিত্বও রয়েছে।
ফলে বাজারের দখল টিকিয়ে রাখতে পৃথিবীর শীর্ষ হীরা সরবরাহকারী এবং বন্ধু রাষ্ট্র রাশিয়ার দ্বারস্থ হতে বাধ্য হয়েছে ভারত।
চলতি মাসে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ভারত সফরে সময় অমসৃণ হীরা সরাসরি সরবরাহের ব্যাপারে দু’দেশের মধ্যে বেশ কয়েকটি চুক্তিও হয়েছে।
তবে ভারতের ব্যবসায়ীয়া জানিয়েছেন, প্রতিযোগিতায় দেশটির টিকতে কর এবং শুল্ক নীতিতে পরিবর্তন আনতে হবে।
এ ব্যাপারে ভারতের হীরা এবং অলংকার বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান র্যাপাপোর্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান মার্টিন র্যাপাপোর্ট বলেন, চীন যেকোনো মুহূর্তে হীরা প্রক্রিয়াজাতকারীর শীর্ষ অবস্থান থেকে ভারতকে সরিয়ে দিতে পারবে না। তবে খনি থেকে অশোধিত হীরা আহরণকারীদের আকৃষ্ট করতে ভারতকে সেকেলে কর নীতিতে পরিবর্তন আনতে হবে।
অবশ্য ভারত সরকার চাইছে চীনের বিনিয়োগ বান্ধব ব্যবসায় অঞ্চলের ন্যায় বিশেষ এলাকা গড়ে তুলতে, যেখানে চালান আকারে অমসৃণ হীরা আমদানি এবং অবিক্রিত প্রক্রিয়াজাত হীরা পুনঃআমদানি করা যাবে।
দেশটির হীরা ব্যবসায়ীরা মনে করেছেন, এটা নিঃসন্দেহে ভালো পদক্ষেপ।
এ সম্পর্কে ভারত ডায়মন্ড বোর্সের সদস্য মেহুল শাহ বলেন, এ ধরনের পদক্ষপে ভারতের হীরা ব্যবসার আয় বাড়াবে এবং প্রতিযোগিতা টিকে থাকতে সহায়ক হবে।