‘বিশেষ সুবিধায়’ রাজি না হওয়ায় আটকা বেতন-ভাতা

  • sahin rahman
  • December 22, 2014
  • Comments Off on ‘বিশেষ সুবিধায়’ রাজি না হওয়ায় আটকা বেতন-ভাতা
rupali+bank+2
rupali+bank+2
ছবি সংগৃহীত

শ্রম আদালতের রায় উপেক্ষা করে ২৩ কর্মকর্তা-কর্মচারীর বকেয়া বেতন আটকে রেখেছে রূপালী ব্যাংক লিমিটেড। অভিযোগ উঠেছে, ‘বিশেষ সুবিধা’ না পাওয়ায় এসব কর্মকর্তা-কর্মচারীর বকেয়া বেতন তোলার অনুমোদন দিচ্ছেন না রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এম ফরিদ উদ্দীন নিজেই।

ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালের অক্টোবর মাসে শ্রম আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে পরিচালনা পর্ষদ বিভিন্ন অঞ্চল ও শাখার ৩৬ জন অস্থায়ী কর্মচারীকে স্থায়ী করে। আদালত তাদের বকেয়া বেতন-ভাতা প্রদান করারও নির্দেশ দেয়। কিন্তু ওই নির্দেশের প্রায় ৪ বছরেও তাদের ২৩ জন তা বুঝে পাননি। বাকি ১৩ জন ২০১৩ সালে তাদের পাওনা বেতন-ভাতা পান।

এই ৩৬ জন বিভিন্ন সময়ে অস্থায়ীভিত্তিতে নিয়োগ পান। আদালতের নির্দেশে নিয়োগের তারিখ থেকেই তাদের স্থায়ী করা হয়।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, এমডির একক কর্তৃত্বের কারণে এ ব্যাপারে ভুক্তভোগীদের কেউই মুখ ফুটে কোনো কথা বলারও সাহস পাচ্ছেন না। সম্প্রতি পর্ষদ সভায় স্থায়ীকৃতদের পাওনা টাকা পরিশোধের তাগিদ দেওয়া হলে এমডি এড়িয়ে যান।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভুক্তভোগীরা জানান, প্রশাসনিক শাখার উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মোহাম্মদ জাহাঙ্গীরসহ কয়েকজন কর্মকর্তা এমডির কাছের লোক হওয়ায় তারা ‘তাদের লোকদেরই’ টাকা পাওয়ার ব্যবস্থা করেছেন।

তারা বলেন, আমরা শত চেষ্টা করেও ‘তাদের কাছের’ হতে না পারায় টাকা পাচ্ছি না। বকেয়া পাওনার একটি অংশ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দিলে এ ব্যাপারে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন তাদের কেউ কেউ। আমরা দিতে রাজি না হওয়ায় বেতন আটকে রয়েছে।

অনুসন্ধানে আরও জানা গেছে, এমডি এম ফরিদ উদ্দীন তার পছন্দের বাইরে কিছু করতে রাজি নন। অনেক ক্ষেত্রে ব্যাংকের পরিচালনা বোর্ডের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নেও অনীহা প্রকাশ করেন তিনি। বোর্ড অনেকবার নিয়োগ, পদোন্নতি, ঋণ প্রদান-আদায় ও এলসিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে তার অনিয়ম নিয়ে তাকে সতর্কও করেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যাংকের একজন পরিচালক জানান, এমডি ফরিদ উদ্দিনের মেয়াদ আর ৬ মাসের মতো আছে। তার পুনরায় এমডি হওয়ার সুযোগ নেই। যার কারণে তিনি বোর্ডকে অনেক সময় তোয়াক্কাই করছেন না; নিজের মতো করে শেষ সময়ে নিজের লোকদের সুবিধা দিয়ে যাচ্ছেন।

নাম গোপন রাখার শর্তে রূপালী ব্যাংকের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, “এমডি স্যার যা বলেন, আমরা তাই করি। আমরা বোর্ডের অধীনে চাকরি করি না। এমডিই আমাদের সব। তার সিদ্ধান্তই আমরা মানি।”

কেন তাদের পাওনা বেতন দেওয়া হচ্ছে না সে ব্যাপারে ব্যাংকের প্রশাসন ও মানবসম্পদ বিভাগের ডিজিএম মোহাম্মদ জাহাঙ্গীরের সঙ্গে সম্প্রতি কথা বলার চেষ্টা করা হয়। তবে তিনি কোনো কথা বলতে রাজি না হয়ে জনসংযোগ কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন।

এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য ফরিদ উদ্দীনের অফিসে গিয়েও তার সাক্ষাৎ মেলেনি। এছাড়া ফোনে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।

এসএই/