

বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে একটি কেন্দ্রীয় শোধনাগার (এনভায়রনমেন্ট ট্রিটমেন্ট প্লান্ট-ইটিপি) নির্মাণের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয় পরির্দশনের সময় তিনি এই নির্দেশ দেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাজধানীর বিভিন্ন বর্জ্য ১৩৫টি পয়েন্টে বুড়িগঙ্গা নদীতে নির্গত হচ্ছে। পুরো নগরীর বর্জ্য যাচ্ছে এখানে। এসব বর্জ্য পয়ঃনিষ্কাশন লাইন বন্ধ করলে রাজধানী দূষিত হয়ে পড়বে। তাই নদীর তীরে একটি ওয়াল তৈরি করে বর্জ্যগুলো শোধনের পর নদীতে ফেলতে হবে। এতে ঢাকা এবং বুড়িগঙ্গা নদীর পানি দূষণের হাত থেকে রক্ষা পাবে।
তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় শোধনাগার (এনভায়রনমেন্ট ট্রিটমেন্ট প্লান্ট-ইটিপি) নির্মাণে অনেক টাকা ব্যয় হবে। কিন্তু যে ক্ষতি হচ্ছে সে তুলনায় ওই টাকা কিছুই না। বর্তমানে বুড়িগঙ্গাকে দেখলেই চোখে পানি আসে।
এক্ষেত্রে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়কে যৌথভাবে কাজ করার নির্দেশ দেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, রাজধানীর হাতিরঝিলে একটি ইটিপি স্থাপন করা হবে। এটা করা না হলে হাতিরঝিলের পানিও দূষিত হয়ে পড়বে।
তিনি বলেন, রাজধানীর পান্থপথে একসময় খাল ছিল। কিন্তু সেখানে বক্স খালভার্ট নির্মাণ করে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এভাবে সেগুনবাগিচা, পল্টন খালও বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে সামান্য বৃষ্টিতে বিভিন্ন এলাকা তলিয়ে যায়।
বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়কে বক্স কালভার্ট নির্মাণে কোনো ছাড়পত্র না দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় বিভিন্ন সড়কের মোড়গুলোকে ফাঁকা রাখার নির্দেশ দেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এক সময় রাস্তার পাশে রেইন্ট্রি গাছ ছিল। ওই সময় রাস্তা দিয়ে গেলে বেশ ঠাণ্ডাও লাগতো। কিন্তু এখন সেখানে অন্য প্রজাতির গাছ লাগানো হচ্ছে। যা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর।
তিনি বলেন, উত্তরাঞ্চলে ইউক্যালিপ্টাস গাছ লাগানোর ঝোঁক লক্ষ করা যাচ্ছে। কিন্তু এই গাছ মাঠির রস শুষে নিচ্ছে বেশি। এতে মাটি নষ্ট হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সমুদ্রে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বাংলাদেশের কিছুর অংশ তলিয়ে যেতে পারে। এ বিষয়টা মাথায় রেখেই পরিকল্পনা নিতে হবে। নদী-খালগুলোকে খনন করে পানির ধারণ ক্ষমতা বাড়াতে হবে।
তিনি বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করতে হবে এবং বাংলাদেশেকে রক্ষা করতে হলে মাটি ও পরিবেশকে রক্ষা করতে হবে। এজন্য বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের ভূমিকা অপরিসীম।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা সমুদ্রসীমা অর্জন করেছি। চর কুকরি মুকরিসহ আরও বিপুল এলাকা জেগে উঠেছে। আমরা নিজেদের এসব সম্পদকে যদি কাজে লাগাতে পারি তাহলে উন্নত দেশে পরিণত হওয়া সম্ভব।
এ সময় বন ও পরিবেশমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জুসহ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।