বাজারে আসছে সৌরশক্তিচালিত রিকশা ও গাড়ি

  • Emad Buppy
  • May 13, 2014
  • Comments Off on বাজারে আসছে সৌরশক্তিচালিত রিকশা ও গাড়ি
solar-rickshaw
solar-rickshaw
সৌরশক্তিচালিত রিকশা

পরিবশদূষণ ও বিদ্যুতের অপচয় রোধ করতে আগামি বছর থেকে বাজারে আসছে সৌরশক্তিচালিত রিকশা।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যপ্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের সহকারি অধ্যাপক ড. এম শামীম কায়ছার ও মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (এমআইএসটি) প্রভাষক আবু রায়হান মো. সিদ্দিক মিলে তৈরি করেছেন এই রিকশাটি। এর মূল্য ৭০ হাজার টাকা।

গবেষণায় দেখা গেছে, একটি অটোরিকশা বছরে যে পরিমাণ বিদ্যুৎ গ্রহণ করে, তাতে বছরে ১৪ হাজার ২৩৪ টাকার বিদ্যুতের অপচয় হয়। এই দিক থেকে সৌরশক্তিচালিত রিকশাটি বিদ্যুতের অপচয় রোধ করবে।

সৌরশক্তিচালিত রিকশা প্রকল্পের পর ড. এম শামীম কায়ছারের স্বপ্ন সৌরশক্তিচালিত গাড়ি। তার সঙ্গে কাজ করছেন বিভাগের আরেক শিক্ষক শামীম আল মামুন। ছোট্ট এ গাড়ি তৈরির খরচ পড়বে মাত্র এক লাখ টাকা। এ বিষয়ে জানাতে গিয়ে তিনি বললেন, প্রকল্পটির জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন থেকে আর্থিক সাহায্য পেয়ে গেছি। আশা করি, এ বছরের মাঝামাঝি তৈরি করে ফেলব।

ড. শামীম বলেন, ব্যাটারিচালিত রিকশায় চার্জ দিতে হয় বিদ্যুতে। একবারের চার্জে চলে পুরো দিন। বিদ্যুতের অপচয় হয় বলে এই রিকশাগুলো লাইসেন্স পায় না। তাই সৌরশক্তিচালিত রিকশা বানানোর পরিকল্পনা করেন তিনি। সহকর্মী-বন্ধুদের সহায়তায় কাজে নেমে পড়ার আগে তাঁর মনে হলো, ‘রিকশাচালকের ওপর কিছু গবেষণা হওয়া দরকার। এরপর রিকশাচালকদের ওপর বেশ কিছু গবেষণা করেন ড. কায়ছার।

তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন গড়ে ৮ থেকে ৯ ঘণ্টা রিকশা চালানোর ফলে একেকজন রিকশাচালকের প্রতি মিনিটে শক্তি খরচ হয় গড়ে ২৩ থেকে ২৬ কিলো জুল। টানা ১০ বছর রিকশা চালানোর ফলে বেশির ভাগ চালকের ডিএনএ গঠন ভেঙে পড়ে, হৃদরোগসহ নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও বেড়ে যায়।

সৌরশক্তিররিকশা তৈরির জন্য গবেষণায় এক লাখ টাকা অনুদান পাওয়ার পর ড. কায়ছার ও তার ছাত্র আবু রায়হান মো. সিদ্দিক দুজনে মিলে তৈরি করেন এই সৌরশক্তিচালিত রিকশা।

ড. শামীম কায়ছারের উদ্ভাবিত এ রিকশায় শক্তি সরবরাহ করবে দুটি সৌর প্যানেল। এগুলো থাকবে রিকশার হুডের ওপর। সূর্যালোক সংগ্রহ করে প্যালেন দুটি সে শক্তি সরবরাহ করবে ব্যাটারিতে।

ড. কায়ছার বললেন, ‘রিকশা চালাতে সাধারণত ৪৮ ভোল্ট শক্তি লাগে। তবে দুটো সোলার প্যানেল ২৪ ভোল্ট শক্তি উৎপাদনে সক্ষম। এজন্য একটি কনভার্টার ব্যবহার করা হয়েছে, যা ২৪ ভোল্টকে ৪৮ ভোল্টে রূপান্তরিত করে। গরমকালে গড়ে ৮.০৩ পরিমাণ সৌরশক্তি থাকে; শীতকালে ৫.০৫। সারা বছরের হিসেবে প্রতিদিন গড়ে ৪-৬.০৮ সৌরশক্তি পাওয়া সম্ভব।

জরুরি অবস্থায় বিদ্যুতের মাধ্যমেও ব্যাটারি চার্জ দেওয়ার সুবিধা রাখা হয়েছে এই রিকশায়। ফলে এ উপায়ে সৌরশক্তির পাশাপাশি প্রচলিত পদ্ধতিতেও ব্যাটারি চার্জ করা যাবে বলে জানালেন ড. কায়ছার।আগামি বছর বাণিজ্যিকভাবে সৌরশক্তির রিকশা উৎপাদনের পরিকল্পনাও আছে বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, প্রচলিত রিকশার ব্যাটারি কিনতেই ৭০ হাজার টাকা খরচ পড়ে। সৌরশক্তিচালিত রিকশা উৎপাদনেও খরচ তেমনই। ফলে অবশ্যই ভালো সাড়া পাব।

এমআর/কেএফ