
পাকিস্তানের প্রখ্যাত সাংবাদিক হামিদ মিরের ওপর আক্রমণকারীদের ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা করেছে দেশটির সরকার। পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশের তথ্যমন্ত্রী শারজিল মেমন জানিয়েছেন, হামলাকারীদের ধরিয়ে দিতে যে বা যারা পুলিশকে তথ্য দিয়ে সহায়তা করবে তাদেরকে ৫ কোটি রুপি পুরস্কৃত করা হবে।
এদিকে এ হামলাকে কেন্দ্র করে সরকার যখন বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহন করছে তখন পাকিস্তানের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থার (আইএসআই) দিকে আঙ্গুল তুলছে মির পরিবার। খবর ডন ও এনডিটিভির।
প্রতিবেদনে বলা হয়, হামিদ মীরের ওপর হামলায় কারা জড়িত ব্যাপারটি এখনও স্পষ্ট না হলেও তার ভাই আমির মীর জিও নিউজকে জানিয়েছেন, হামিদ আগে থেকেই তার পরিবার, প্রতিষ্ঠানের সহকর্মী, সরকার ও সেনাবাহিনীর বন্ধুদের জানিয়ে রেখেছিলেন, তিনি যদি কোনো ধরনের হামলার শিকার হন, তাহলে এজন্য দায়ী থাকবেন দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টার-সার্ভিসেস ইন্টিলিজেন্স’র (আইএসআই) প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল জহিরুল ইসলাম। আমিরের অভিযোগ, তার ভাইকে হত্যার জন্য এ পরিকল্পনা করেছে আইএসআই ও তার প্রধান।
এদিকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ রোববার দেশটির অভ্যন্তরীণ মন্ত্রীদেরকে এ বিষয়ে কি ব্যবস্থা নেওয়া যায় সে- জন্য এক বৈঠকের আহবান করেছেন।
তথ্যমন্ত্রী শারজিল মেমন জানান, সাংবাদিক হামলার বিষয়টি আন্তর্জাতিক মহলকে নাড়া দিয়েছে। তিনি বলেন, শনিবার হামিদ মিরের ওপর আক্রমণকারীদের ধরতে যে বা যারা পুলিশকে তথ্য দিয়ে সাহায্য করবে তাকে বা তাদেরকে ৫ কোটি রুপি পুরস্কার দেওয়া হবে। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা প্রকাশ করেন তিনি।
উল্লেখ্য, শনিবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে করাচির ফয়সাল সেনানিবাসের নাথা খান ব্রিগেডের কাছে শরয়ী ফয়সাল এলাকায় জিও টেলিভিশনের নির্বাহী সম্পাদক হামিদ মীরের গাড়ি লক্ষ্যে করে নির্বিচারে গুলি চালায় মোটর সাইকেল আরোহী চার বন্দুকধারী। এ সময় হামিদ মীরের শরীরে তিনটি গুলি লাগে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ভর্তির পর কিছুক্ষণ অচেতন থাকলেও এখন তিনি আশঙ্কামুক্ত বলে জানান চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
এর আগে, ২০১২ সালের নভেম্বর মাসেও তাঁকে হত্যার চেষ্টা হয়েছিল৷ সে সময় তার গাড়িতে বিস্ফোরক পেতে যায় দুর্বৃত্তরা। পরে অবশ্য টের পেয়ে বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয় করে নিরাপত্তা বাহিনী।
প্রসঙ্গত, হামিদ মীরই একমাত্র সাংবাদিক যিনি সাংবাদিক জীবনে অন্তত দুইবার আল-কায়েদা নেতা ওসামা বিন লাদেনের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন।