
উদ্ধার কাজে বিলম্বিত হওয়ায় তীরে অপেক্ষারত নিখোঁজ যাত্রীদের স্বজনদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। রোববার দুপুরের দিকে দক্ষিণ কোরিয়ার জিন্দু দ্বীপে এ সংঘর্ষ হয়। স্বজনরা বলছেন, তারা এই দ্বীপ থেকে রাজধানী সিওল অভিমুখে র্যালি বের করবেন। কিন্তু পুলিশ তাদের গতিপথ বন্ধ করে দিয়েছে। বিক্ষোভকারীদেরকে র্যালি না করে মুল দ্বীপেই ফিরে যেতে বলেছে শত শত পুলিশ। খবর বিবিসির
প্রতিবেদনে বলা হয়, উদ্ধারাভিযান দু’মাস পর্যন্ত সময় লাগতে পারে কর্তৃপক্ষের এমন ঘোষণায় তীরে অপেক্ষারত স্বজনদের অনেকেই উত্তেজিত হয়ে পড়েন। সকাল থেকে তারা রাজধানী অভিমুখে র্যালি বের করার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদেরকে ধামিয়ে দেয়। কিন্ত তারা তা মেনে নেয়নি। একপর্যায়ে পুলিশের সাথে তাদের সংঘর্ষ বাধে। তবে এ সংঘর্ষে নতুন কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সাগরে তীব্র স্রোত এবং শক্তিশালী ঢেউয়ের কারণে উদ্ধারাভিযান ব্যাহত হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, ডুবে যাওয়ার চার দিন পর রোববার ফেরির ভেতর থেকে বেশ কিছু মৃতদেহ বের করে আনা হয়েছে। কর্মকর্তারা বলছেন, জানালার কাঁচ ভেঙ্গে এ পর্যন্ত ১৭টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৯ এ। এখনো ২৫৩ জনেরও বেশি যাত্রী নিখোঁজ রয়েছে যাদের বেশিরভাগই শিশু।
এর একদিন আগে গ্রেপ্তার হওয়া ফেরির ক্যাপ্টেন লি জুন সিওক নিজের দায়বদ্ধতার কথা স্বীকার করে বলেন, “দক্ষিণ কোরিয়া জাতির কাছে আমি দুঃখিত, লজ্জিত আমি। কারণ ডুবে যাওয়ার মুহূর্তে ফেরিতে অবস্থানরত যাত্রীদের বাইরে আসার আদেশ দিতে দেরি করে ফেলেছি আমি। এই মুহূর্তে নিজের দায় স্বীকার ছাড়া আমার বলার কিছু নেই”
তিনি বলেন, ডুবে যাওয়ার সময় ফেরিতে যাত্রীদের অবস্থা দেখে আমি কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েছিলাম, ভয়ও পেয়েছিলাম। ফলে ভুলেই গিয়েছিলাম সবকিছু। তিনি বলেন, “আমি জানি না, এখন আমার কী করা উচিত”।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ক্যাপ্টেন লি জুন সিওককে দায়িত্বে অবহেলার জন্য উন্মুক্ত জলসীমায় অপরাধসংক্রান্ত আন্তর্জাতিক আইন বা ম্যারিটাইম ল’র মুখোমুখি হতে হবে। ফেরি ডুবে যাওয়ার পর একটি স্থানীয় আদালত ক্যাপ্টেন ও তার দুই সহকর্মীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করার পর তাকে গ্রেফতার করা হয়। ইতোমধ্যে পুলিশ লিকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবারের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন।
উল্লেখ্য, গত বুধবার দক্ষিণ কোরিয়ায় কয়েকশ যাত্রী নিয়ে ফেরিটি পশ্চিমাঞ্চলীয় বন্দর ইচিওন থেকে দক্ষিণাঞ্চলীয় পর্যটন দ্বীপ জেজুতে যাচ্ছিল। এর অধিকাংশ যাত্রীই ছিল একটি উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষক। তারা শিক্ষাসফরে যাচ্ছিলেন।
এস রহমান/