
উৎসব আর পার্বণের পালায় পুরো জাতি আজ উদযাপন করছে নববর্ষ। নতুন বছরের এই দিনে রাজধানীর পথে পথে বসে হরেক রকম পণ্যের বিক্রেতারা। কেউ বাঁশি, একতারা আবার কেউবা বিক্রি করে পুতুল, খেলনা। পথমেলায় বাদ পড়েনি আদি বাংলায় ব্যবহৃত বাঁশবেতের তৈরি গৃহস্থালি পণ্য।
বর্ষবরণের এই দিনটিতে বিক্রিবাট্টা ভালো হয় বলেই জানালেন বগুড়া থেকে আসা রশিদ মিয়া। বেতশিল্পী রশিদ গৃহস্থালির নানাধরণের পণ্য তৈরি করতে পারেন। রাজধানীতে বেতের তৈরি এসব পণ্যের চাহিদাও কম নয়। তাই প্রতিবছর এই দিনটিতে বেতশিল্পের নানা পণ্য নিয়ে হাজির হন রমনার প্রবেশদ্বারে।
রশিদ মিয়া এবারের পথমেলায় নিজের হাতে বেত দিয়ে তৈরি করেছেন পাখা, কুলা, ঢাকনি, ঝুড়ি, শতরঞ্জিসহ হরেক পদের গৃহস্থালি পণ্য।
রশিদ জানান, দেশ থেকে বেতশিল্প ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হতে চলেছে। অন্য কোনো কাজ তার জানা নেই বলেই এইকাজ করেই জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন তিনি। বছরের অন্য সময়েও বেতের তৈরি পণ্য নিয়ে ঢাকায় এসেছেন কিন্তু পয়লা বৈশাখে এসব পণ্যের চাহিদা বেশি থাকে বলেও জানান তিনি।
কোন পণ্যের দাম কত এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আজকের দিনে কোনো পণ্যই একদামে বিক্রি করেননি। কথার মাধ্যমে যাকে যে দামে বিক্রি করা যায় করেছেন। আজকে সব পণ্যেই লাভ করতে পারছেন তিনি।
তবে চড়া দাম নয় রশিদের বেতের তৈরি পণ্যের দাম কমই বলে জানালেন ক্রেতা মমিনুল। সরকারি চাকরিজীবী মমিমুল বলেন, লোকটা প্রথমে চড়া দাম চেয়েছিল। পরে দাম কমিয়েছে। আমি একটা বেতের বড় হাতপাখা কিনলাম ৯০ টাকায়। দামটা আশা করি কমেই রেখেছেন তিনি।
মমিনুলের বিরোধীতা করলেন গৃহিনী নাজমা। তিনি রশিদের প্রতি অভিযোগ করে বলেন, একটা ঝুড়ি কিনতে চাইলাম কিন্তু বিক্রেতা ওটা ২৫০ টাকার কমে দেবে না। এই ঝুড়ি অন্য জায়গায় দু’শ টাকার বেশি হবে না বলে দাবি করেন তিনি।
বসন্ত ও বর্ষ বিদায়ের পাশাপাশি নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে রাজধানীবাসীসহ সারাদেশের মানুষ ছুটে এসেছে রমনার ছায়ানট কিংবা চারকলার মঙ্গল শোভাযাত্রায়। অনুষ্ঠান উপভোগের পাশাপাশি তারা ক্রয় করছে বিভিন্ন পণ্য। বাঙ্গালির ঘরে ঘরে এখন বৈশাখী আমেজ। ‘মুছে যাক যত গ্লানি, ঘুচে যাক জরা, অগ্নি স্নানে শুচী হোক ধরা’ বছরের প্রথম দিনে এমনটাই কামনা করছেন দেশবাসী।
কেএফ