
মধ্যবিত্ত জীবনে সাধ আর সাধ্যের টানাপোড়েন লেগেই থাকে। এর মধ্যই তিল তিল করে জমা হয় কিছু সঞ্চয়। কখনো সম্পদ বিক্রির টাকা, কখনোবা পেনশন, এফডিআর অথবা প্রবাসী স্বজনের পাঠানো অর্থে আসে কিছু বিনিয়োগের সুযোগ। কিন্তু বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া তো সহজ নয়। পদে পদে ঝক্কি, লোকসান কিংবা প্রতারণার ঝুঁকি। অনেকেই এ ঝুঁকি নিতে চান না। মুনাফা কম হলেও হন্যে হয়ে নিরাপদ বিনিয়োগের ক্ষেত্র খোঁজেন। তাদের জন্য সঞ্চয়পত্র হতে পারে আদর্শ বিকল্প। আপনাদের জন্য দেওয়া হল সঞ্চয়পত্র সংক্রান্ত কিছু তথ্য:
সঞ্চয়পত্রের প্রকার:
বর্তমানে দেশে ১০ ধরনের সঞ্চয়পত্র আছে। এগুলো হচ্ছে-বাংলাদেশ সেভিংস সার্টিফিকেট, প্রতিরক্ষা সঞ্চয়পত্র;পাঁচ বছর মেয়াদী বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র;বোনাস সঞ্চয়পত্র;তিন বছর মেয়াদী সঞ্চয়পত্র;ছয় মাস অন্তর মুনাফা ভিত্তিক সঞ্চয়পত্র;পরিবার সঞ্চয়পত্র;তিন মাস অন্তর মুনাফা ভিত্তিক সঞ্চয়পত্র;জামানত সঞ্চয়পত্র ও পেনশনার সঞ্চয়পত্র।
সঞ্চয়পত্রের সুদ/মুনাফা:
সঞ্চয় প্রকল্পের সংখ্যা:
বর্তমানে টি সঞ্চয় প্রকল্প রয়েছে। এগুলো হ্চছে-বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র;পরিবার সঞ্চয়পত্র;তিন মাস অন্তর মুনাফা ভিত্তিক সঞ্চয়পত্র ও পেনশনার সঞ্চয়পত্র।
বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র ও পরিবার সঞ্চয়পত্র ৫ বছরমেয়াদী; তিন মাস অন্তর মুনাফা ভিত্তিক সঞ্চয়পত্র ৩ বছর মেয়াদী, পেনশনার সঞ্চয়পত্র ৫ বছরমেয়াদী।
সঞ্চয়পত্রের বিক্রয় কেন্দ্র:
বাংলাদেশ ব্যাংকের সকল শাখা অফিস,সকল বাণিজ্যিক ব্যাংক,জাতীয় সঞ্চয় পরিদপ্তরের অধীন ৭১টি সঞ্চয় ব্যুরো অফিস এবং সারাদেশে ডাকঘরে সঞ্চয়পত্র কিনতে পাওয়া যায়।
যারা কিনতে পারেন :
প্রকল্পগুলোর মধ্যে শুধু পাঁচ বছর মেয়াদী বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র ও তিন মাস অন্তর মুনাফা ভিত্তিক সঞ্চয়পত্র সবাই কিনতে পারেন। অন্য সঞ্চয়পত্রগুলো বিশেষ টার্গেট গ্রুপের জন্য নির্ধারিত।
এর মধ্যে পরিবার সঞ্চয়পত্র ১৮ বা তারচেয়ে বেশি বয়সী যে কোন বাংলাদেশী মহিলা,যে কোন বাংলাদেশী শারীরিক প্রতিবন্ধী (পুরুষ ও মহিলা) এবং ৬৫ ও তার বেশি বয়সের যে কোন বাংলাদেশী নাগরিক (পুরুষ/মহিলা)শুধু একক নামে কিনতে পারেন।
পেনশনার সঞ্চয়পত্র কিনতে পারেন অবসরপ্রাপ্ত সরকারী,আধা-সরকারী,স্বায়ত্তশাসিত,আধা-স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা/কর্মচারী,সুপ্রীম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি,সশস্ত্র বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সদস্য এবং উল্লিখিত ক্যাটাগরিতে মৃত চাকুরীজীবীর পারিবারিক পেনশন সুবিধাভোগী স্বামী/স্ত্রী/সন্তান।
প্রিয় পাঠক, এটি ২০১৪ সালের ফিচার। ইতোমধ্যে সঞ্চপত্রের সুদ হারে কিছু পরিবর্তন এসেছে। গুগল এনালেটিকসে দেখা যাচ্ছে, এখনও বিপুল সংখ্যক পাঠক এই ফিচারটি পড়ছেন। কেউ যাতে বিভ্রান্ত না হন, সে জন্যে সর্বশেষ তথ্য দিয়ে আরেকটি ফিচার প্রকাশ করেছে অর্থসূচক। এটি পড়তে পারেন নিচের লিংকে গিয়ে ।
তিন মাস অন্তর মুনাফা ভিত্তিক সঞ্চয়পত্র সকল শ্রেণী/পেশার বাংলাদেশী নাগরিক একক বা যুগ্ম নামে কিনতে পারেন। বিভিন্ন প্রকার সঞ্চয়পত্রের জন্য আলাদা আলাদা নির্দিষ্ট ফরম পূরণ করতে হয়।পেনশনার সঞ্চয়পত্রের ক্ষেত্রে ফরম এর সাথে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ কর্তৃক পুরণকৃত প্রাপ্ত আনুতোষিক ও ভবিষ্য তহবিলের সনদপত্র প্রদান করতে হয় ।
অপ্রাপ্ত বয়ষ্ক বা শিশুর নামেও সঞ্চয়পত্র কেনা যায়। চাইলে নির্ধারিত ফরম পূরণের মাধ্যমে উত্তরাধিকারী মনোনীত করা যায়।
বিনিয়োগ করবেন কোন সঞ্চয়পত্রে?
সঞ্চয়পত্র কেনার গ্রহণযোগ্য সর্বোচ্চ পরিমাণ:
চাইলেই যে কোনো পরিমাণ টাকার সঞ্চয়পত্র কেনা যায় না। বিভিন্ন প্রকার সঞ্চয়পত্রের সীমা বেঁধে দেওয়া আছে। এর মধ্য তিন মাস অন্তর মুনাফা ভিত্তিক সঞ্চয়পত্র ও পাঁচ বছর মেয়াদী বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্রে একক নামে ৩০ লাখ টাকা এবং যৌথ নামে ৬০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করা যায়। পরিবার সঞ্চয়পত্র ও পেনশনার সঞ্চয়পত্র কেবল একক নামে কেনা যায়। এই দুটি সঞ্চয়পত্রের অনুমোদিত সর্বোচ্চ সীমা যথাক্রমে ৪৫ ও ৫০ লাখ টাকা।