সামাজিক দায়বদ্ধতা (সিএসআর)-এর আওতায় নির্দিষ্ট এলাকায় শিক্ষাবৃত্তি প্রদানের কারণ জানতে চেয়ে ব্যাংক এশিয়াকে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আগামি ১০ এপ্রিলের মধ্যে এর কারণ ব্যাখ্যা করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
চিঠিতে ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালককে সম্বোধন করে বলা হয়েছে, “আপনার ব্যাংক কর্তৃক ১৪ মার্চ ২০১৪ তারিখে দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় ‘আমিও অনেক বড় হবো’ শিরোনামে দেশের কয়েকটি এলাকার শিক্ষার্থীদের মাঝে বৃত্তি প্রদানের উদ্দেশ্যে আবেদনপত্র আহ্বান করা হয়েছে। যা বাংলাদেশ ব্যাংকের অফসাইট সুপারভিশন থেকে ২৪ আগস্ট ২০১০ সালে প্রকাশিত সার্কুলারের পরিপন্হী। এমতাবস্থায়, কোন নীতিমালার আলোকে দেশের নির্দিষ্ট কয়েকটি এলাকার শিক্ষার্থীদের মাঝে বৃত্তি প্রদানের উদ্দেশ্যে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন প্রকাশ করা হয়েছে সে বিষয়ে ১০ এপ্রিল ২০১৪ তারিখের মধ্যে অত্র বিভাগের অবহিত করতে বলা হলো”।
এর আগে গত ৩১ মার্চ ‘ব্যাংক এশিয়ার প্রশ্নবিদ্ধ সিএসআর’ শিরোনামে অর্থসূচকে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে ব্যাংক এশিয়ার নির্দিষ্ট এলাকার শিক্ষার্থীদের মাঝে উপবৃত্তি প্রদান এবং এক্ষেত্রে নির্দিষ্ট বিষয় উল্লেখ করা নিয়ে প্রশ্ন তোলে অর্থনীতিবিদরা। এতে প্রকৃত করপোরেট প্রতিষ্ঠানের সামাজিক দায়বদ্ধতাকেও প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তারা। এর ফলে দেশের বিভিন্ন এলাকার দরিদ্র মেধাবি শিক্ষার্থীরা এবং যারা ভালো বিষয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পায়নি তাদেরকে অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তারা। এটাকে চরম বৈষম্যমূলক বলেও আখ্যায়িত করেন তারা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, করপোরেট প্রতিষ্ঠানের সামাজিক দ্বায়বদ্ধতা বা সিএসআর-এর মূল লক্ষ্য হলো সমাজের পিছিয়ে পড়া অসহায় জনগণের উন্নয়নের জন্য কাজ করা। এ কারণে প্রতিটি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে সিএসআর কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আর মোট সিএসআর খাতে ব্যয় করা অর্থের ৩০ শতাংশ শিক্ষা খাতে ব্যয় করতে হবে বলেও নির্দেশনা রয়েছে। এর মধ্যে প্রত্যন্ত অঞ্চলের দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষাবৃত্তি প্রদান ও শিক্ষা উপকরণ সরবরাহ অন্যতম।
উল্লেখ্য, গত ১৪ মার্চ একটি পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বৃত্তি পাওয়ার জন্য আবেদনপত্র আহ্বান করে ব্যাংক এশিয়া। এ বিজ্ঞাপনে দেশের ১৩টি জেলার ৩২টি এলাকা (থানা ও ইউনিয়ন) নিদিষ্ট করে সেসব এলাকার শিক্ষার্থীদের বৃত্তি পাওয়ার জন্য আবেদন করতে বলা হয়।
যারা ২০১৩ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে বিভিন্ন উচ্চ মানসম্পন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ডাক্তারি, ইঞ্জিনিয়ারিং, কৃষি, ব্যবসায় প্রসাশন, অর্থনীতি, পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, গণিত, কম্পিউটার সায়েন্স জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বা এ ধরনের মূল বিষয়ে ভর্তি হয়েছে শুধু তারাই এ বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারবে বলে বিজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়। বৃত্তি প্রাপ্ত শিক্ষার্থীকে প্রতি মাসে বৃত্তি বাবদ ২ হাজার টাকা এবং প্রতি বছর বই ক্রয় ও টিউশন ফি বাবদ ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে বলে ওই বিজ্ঞাপনে বলা হয়েছে।
এসএই/
ব্যাংক এশিয়ার সিএসআর নিয়ে ৩১ মার্চ অর্থসূচকে প্রকাশিত নিউজের লিংক: