
দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পই মূল চালিকাশক্তি। তাই এ শিল্পের উদ্যোক্তাদের এগিয়ে নেওয়ার বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করলেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু।
শুক্রবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এসএমই ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আয়োজিত ৫ দিনব্যাপী এসএমই মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, ৯০’র দশকে এসএমই উন্নয়নের ধারা শুরু হওয়ার পর দেশের আর্থ সামাজিক পরিবর্তন, দারিদ্র্য হ্রাস, বেকারত্ব দূরীকরণ, আয় বৈষম্য কমানো ও অধিক কর্ম সংস্থানসহ জাতীয় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রেখেছে। দেশের শিল্প উদ্যোক্তার প্রায় ৯০ শতাংশ এর আওতাভুক্ত। বর্তমানে জিডিপিতে এ খাতের অবদান ২৫ শতাংশের বেশি। ২০২১ সালের মধ্যে এ খাতের অবদান ৪০ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্যে এ খাতকে অগ্রাধিকার প্রদান করে বিশেষ গুরুত্ব ও সুবিধা দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে এসএমই খাতের বিকাশের কারণে বিশ্ব মন্দার মাঝেও বাংলাদেশ গত পাঁচ বছরে গড়ে ৬ দশমিক ১৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। এই সময়ে এ শিল্প খাতে শ্রমের অবদান প্রতিবছর শতকরা ৩ দশমিক হারে বাড়ছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে ২০২৫ সালের মধ্যে দেশের ২৫ শতাংশ মানুষ শিল্প উদ্যোক্তা হিসেবে পরিণত হবে।
এসএমই মেলা নিয়ে শিল্পমন্ত্রী বলেন, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে অংশ নেওয়া ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উদ্যোক্তাদের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্লাটফর্ম। এর মাধ্যমে তাদের উৎপাদিত পণ্য দেশের সকল স্তরের মানুষের কাছে পরিচিতির সুযোগ তৈরি হবে। এ মেলা উদ্যোক্তাদের মধ্যে পারস্পারিক সর্ম্পক তৈরির পাশাপাশি উৎপাদিত পণ্যের গুনগত মান উন্নয়ন ও প্রচার, বিক্রয় এবং বাজার প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করেবে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশের অর্ধেক জনশক্তি নারী হলেও শিল্প খাতে নারীর অবদান খুবই কম। শ্রম কাজের ২৬ শতাংশে নারীর অবদান থাকলেও জাতীয় অর্থনীতির অগ্রযাত্রায় তাদের অবদান ১০ শতাংশ ও ব্যবসায় অবদান মাত্র ১ শতাংশের সামান্য বেশি। তবে এসএমই খাতে নারীর অংশগ্রহণ উৎসাহিত করার কারণে এ খাতে তাদের অবদান ১০ ভাগের বেশি। আর জনগণের জীবন মানের উন্নয়ন ও শিল্পে নারীর অংশগ্রহণ বাড়ানোর জন্য এ খাতে তাদের আরও বেশি সম্পৃক্ত করার আহ্বান জানান তিনি।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মঈন উদ্দিন বলেন, দেশে কৃষিভিত্তিক সমাজের পরিবর্তন হওয়া শুরু হয়েছে। মানুষ ক্রমান্বয়ে শিল্পের দিকে ঝুকে পড়ছে। বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলার জন্য শিল্প নির্ভর অর্থনীতির উপর জোড় দিচ্ছে সরকার। এ লক্ষ্যে আগামি ৫ বছরে মোট শ্রমশক্তির ২৫ শতাংশ শিল্পের ওপর কাজে লাগানোর পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। আর এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখবে এসএমই খাত।
মেলায় পাটজাত পণ্য, চামড়াজাত সামগ্রী, পোশাক ডিজাইন ও ফ্যাশন ওয়ার, হ্যান্ডিক্যাফটস, কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য, গৃহস্থালী পণ্য, প্লাষ্টিক ও সিনথেটিক, ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক্স, লাইটিং সামগ্রীসহ অন্যন্য সেক্টরের স্বদেশী পণ্য নিয়ে মোট ১৫০টি স্টল রয়েছে।মেলায় সকল দর্শনার্থীদের প্রবেশাধীকার উন্মুক্ত রাখা হয়েছে।
এইউ নয়ন