
নকশীকাঁথা বাংলার ঐতিহ্য। পাখি, ফুল, লতা-পাতা ও বিভিন্ন চিত্র এঁকে আকর্ষণীয় করে তৈরি করা হয় নকশীকাঁথা। এবারের বৈশাখী মেলায় এসব নকশীকাঁথা ক্রেতাদের সামনেই তৈরি করা হবে আর সেখানেই বিক্রি করা হবে।
বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে প্রতি বছর বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) বৈশাখী মেলা আয়োজন করে। এ মেলায় দেশের গ্রামীণ শিল্প-সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়।
এবারের মেলায় শখের হাড়ি, নকশীকাঁথা, শতরঞ্জি, পুতুল ও কাঠের কারুশিল্প, নকশি হাতপাখা, শীতল পাটি, তামা-কাসা ও পিতলের কারুশিল্প, মৃৎ শিল্প, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের কারুপণ্য, টেরাকোটা শিল্প, বাত-বাঁশের কারুশিল্প, চামড়াজাত পণ্য, পাটপণ্য, উপজাতীয় বস্ত্র প্রভৃতি স্থান পাচ্ছে।
এবারের মেলায় ১৫০টি স্টল থাকবে বলে জানিয়েছেন বিসিকের প্রধান নকশাবিদ এস এম শামছুদ্দিন। তিনি বলেন, প্রতিবারের মত এবারও আমরা বৈশাখী মেলার আয়োজন করছি। মেলাটি ১ বৈশাখ থেকে ১০ বৈশাখ পর্যন্ত বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে আয়োজন করা হবে।
তিনি আরও বলেন, মেলায় মৃৎ শিল্প, কারু শিল্প, চামড়াজাত পণ্য,পাটপণ্য, উপজাতীয় বস্ত্রের স্টল থাকবে।
তবে নকশিকাঁথার জন্য বিনা মূল্যে কিছু স্টল বরাদ্দ দেওয়া হবে। সেখানে ক্রেতাদের সামনেই তৈরি করা হবে নকশীকাঁথা। পাশাপাশি বিক্রিও করতে পারবে।
শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু মেলার উদ্বোধন করবেন। এছাড়া সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের এনডিসি ড. রনজিৎ কুমার বিশ্বাস ও বাংলা একাডেমীর সভাপতি এমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন বিসিকের চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার। মেলায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ক্ষুদ্র, কুটির ও হস্তশিল্প খাতের উদ্যোক্তা এবং কারুশিল্পীদের উত্পাদিত পণ্যসামগ্রী প্রদর্শন করা হবে।
প্রসঙ্গত, ঢাকায় নববর্ষের উৎসবে বৈশাখী মেলার আনুষ্ঠানিক পরিচয় ঘটেছিল ১৯৭৮ সালে। শিল্পগুরু পটুয়া কামরুল হাসান প্রতিষ্ঠা করেছিলেন জাতীয় নকশাকেন্দ্র। যা এখন বিসিকের সঙ্গে একীভূত। এই নকশাকেন্দ্রের ব্যবস্থাপনাতেই নকশাকেন্দ্রের পরিচালক কামরুল হাসান দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের কারুশিল্পীদের তৈরি পণ্য ঢাকায় এনে একটি মেলার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তাঁকে সহায়তা করেছিলেন তখনকার প্রধান নকশাবিদ শিল্পী ইমদাদ হোসেন। মেলাটি হয়েছিল বাংলা একাডেমির সঙ্গে যৌথ আয়োজনে একাডেমির বটতলায়। সেবার মেলাটি তিন দিনব্যাপী আয়োজন করা হয়েছিল। কারুপণ্যের জনপ্রিয়তা ও বাজার সৃষ্টিই ছিল মেলার মুখ্য উদ্দেশ্য।
এইচকেবি/