নূহের (নোয়া) নৌকার কথা মোটামুটি সব কয়টি সেমেটিক ধর্মেই (মধ্যপ্রাচ্য ও তদসংলগ্ন এলাকায় উপত্তি ধর্ম) আছে। সব সেমেটিক ধর্মেই নূহকে সৃষ্টিকর্তার দূত মনে করা হয়। তবে তফাতটা হলো ইসলাম ধর্মে এই সব নবী বা দূতদের সম্মান দেখানোর জন্য তাদের কোনো প্রতিকৃতি করা হয় না। এমনকি ওই চরিত্রে অন্য কারও অভিনয়ও করাও নিষিদ্ধ।
আর সেই নিষিদ্ধের খড়গ এবার নেমে এলো নূহ (আঃ) নিয়ে তৈরি করা একটি চলচ্চিত্রের ওপর। আল্লাহর প্রেরিত পুরুষ বা নবীর চরিত্রে অভিনয়কারীর চেহারা প্রদর্শনের কারণে কাতার, বাহরাইন ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের পর ইন্দোনেশিয়াতে নোয়া নামের একটি চলচ্চিত্রের ওপর নেমে এলো নিষিদ্ধের খড়গ।
বার্তাসংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিভিন্ন ইসলামি দেশে ছবিটি নিষিদ্ধ করার জন্য ইতোমধ্যে প্রচারনা শুরু করেছে ইসলামপন্থীরা।
গত শুক্রবার চলচ্চিত্রটি যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম মুক্তি পায়। আগামি সপ্তাহে ছবিটি মুক্তি পাওয়ার কথা রয়েছে আরও কয়েকটি দেশে।
মঙ্গলবার ইন্দোনেশিয়ার সেন্সরবোর্ড জানিয়েছে, ইসলামিক মূল্যবোধে আঘাত করায় তারা ছবিটি প্রদর্শন করবেন না। ইসলামে নবীর চেহারা প্রদর্শন নিষিদ্ধ থাকায় ছবিটি নিষিদ্ধ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।
ইন্দোনেশিয়ার সেন্সর বোর্ডের সদস্য জয়নুত তৌহিদ সাদী বলেন, ইসলামে কোনো নবী চরিত্রের প্রকাশ নিষিদ্ধ, অর্থাৎ তার চেহারা প্রকাশ বা প্রচারের কোনো বিধান নেই৷ ছবিটি যে কেবল ইসলাম সম্প্রদায়কে আঘাত করেছে তা নয়, এর মাধ্যমে খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদেরও আঘাত করা হয়েছে।
এদিকে চলচ্চিত্রটিতে ইসলামী শিক্ষার পরিপন্থি বিষয় বিদ্যমান থাকায় এর প্রতিবাদে বিবৃতি প্রদান করেছে মিশরের আল-আযহার ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়৷ বিশ্ববিদ্যালয় এক বিবৃতিতে ঘোষণা করেছে আল্লাহর নবীগণ এবং মহানবী (সাঃ)-র সাহাবীদের ছবি প্রদর্শন করা হয় এমন শিল্পকর্ম নবী (আঃ) গণের মর্যাদা ও সম্মানের পরিপন্থি।
তবে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ন্যাশনাল রিলিজিয়াস ব্রডকাস্টার্স বডি যৌথভাবে দেয়া এক বিবৃতিতে বলেছে, ছবির কাহিনি দর্শকদের বোঝাতে হলে বলতে হবে বাইবেল থেকে কাহিনি নিয়ে সেটাকে সিনেমায় রূপান্তর করা হয়েছে, বাইবেলের প্রতিটি লাইন মেনে কাহিনি লেখা হয়নি।
চলচ্চিত্রটিতে নিউজল্যান্ডের অভিনেতা রাসেল ক্রো-কে নোয়া বা হযরত নূহ (আঃ) -র চরিত্রে দেখানো হয়েছে। এতে আরো অভিনয় করেছেন জেনিফার কনোলি এবং এমা ওয়াটসন।
প্যারামাউন্ট পিকচার নিবেদিত নোয়া মুভিটির পরিচালক ড্যারেন অ্যারোনোফস্কি। নূহ নবীর সময়কার ভয়াবহ বন্যাকে কেন্দ্র করে নির্মিত চলচ্চিত্রটির প্রিমিয়ার হয় ২৮শে ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রে।