
আগমি ২৭ ফেব্রুয়ারি রাজশাহীর বাঘা উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। নির্বাচনে নিজেকে জয়ী করতে পুরোদমে মাঠে নেমে পড়েছে প্রার্থীরা। শেষ মুর্হূতে নির্বাচনী প্রচারণায় মুখরিত হয়েছে বাঘার প্রতিটি অঞ্চল। প্রার্থীদের সাদা কালো পোষ্টারে ছেয়ে গেছে পুরো এলাকা।
তবে, বাঘা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াতের চার জন প্রার্থী থাকায় মাঠ পর্যায়ে এখনো পর্যন্ত এগিয়ে রয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী।
এ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক আজিজুল আলম (আনারস), বিএনপির মনোনীত প্রার্থী অধ্যাপক জাহাঙ্গীর হোসেন (ঘোড়া) বিএনপির বিদ্রোহী উপজেলা যুবদলের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন (দোয়াত কলম) ও জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আব্দুল গনি মন্ডল (মোটরসাইকেল) এবং উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা জিন্নাত আলী (কাপ-পিরিজ)।
অপরদিকে, পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে আ.লীগ মনোনীত বাবুল ইসলাম (টিউবওয়েল), বিদ্রোহী হাসমত আলী (মাইক), বিএনপির দলীয় প্রার্থী মোকলেসুর রহমান মুকুল (চশমা), বিদ্রোহী প্রার্থী শাহিন মন্ডল (তালা), ইসরাফিল হোসেন স্বতন্ত্র প্রার্থী (বাল্ব)¦ ও শফিউর রহমান শফি জাসদ ইনু (টিয়াপাখি) প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।
মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে আ’লীগ মনোনীত জয়জয়ন্তী সরকার (ফুটবল), বিদ্রোহী প্রার্থী ফাতেমা খাতুন লতা (কলস) ও বিএনপির একক প্রার্থী ফারহানা রুমি (প্রজাপতি) নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।
গত ১৯ ফেব্রুয়ারি জেলার মোহনপুর উপজেলার নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী জয়লাভের পর জেলা বিএনপিতে বাঘা উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আশার সঞ্চার হলেও স্থানীয়ভাবে এখানে বিপাকে রয়েছে বিএনপি। এছাড়া জামায়াত পৃথক প্রার্থী দেওয়ায় সবচেয়ে সুবিধায় রয়েছেন আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক আজিজুল আলম। মোহনপুরে ধরা খাওয়ার পর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে এখানে দলীয় প্রার্থীর হয়ে কাজ করছেন জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।
সব মিলিয়ে চেয়ারম্যান পদে এ উপজেলায় বিএনপি-জামায়াতের প্রার্থী রয়েছেন ৪ জন। ফলে ভোট কাটাকাটি আর দলীয় বিভেদের কারণে চরম বিপাকে পড়েছেন বিএনপির প্রার্থী ও দলীয় নেতা কর্মীরা।
অপরদিকে, একক প্রার্থী হওয়ায় এবং শীর্ষ নেতাদের উৎসাহে খোশ মেজাজে রয়েছে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আজিজুল আলম। মোহনপুরের পরাজয়ের গ্লানি মুছতে চান বাঘার আওয়ামী লীগের নেতাকমীরা।
গত নির্বাচনে একক প্রার্থী দিয়ে চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয় বিএনপির প্রার্থীরা। তবে এবার বিএনপি থেকে চেয়ারম্যান পদে তিনজন ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে দুইজন নিজেদের পক্ষে প্রচার প্রচারনা চালাচ্ছেন। তৃণমূলের মতামত উপেক্ষা করে প্রথমে অর্থের বিনিময়ে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থীরা। তবে কেন্দ্রের হস্তক্ষেপে প্রার্থী বদল হয়েও সংকট কাটেনি বিএনপির। বরং দলীয় কোন্দল আরো শক্তদানা বেধেছে।
ফলে এবার চেয়ারম্যান ও পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে একক প্রার্থী নিশ্চিত করতে না পেরে রীতিমত কোন্দলে জড়িয়ে বিপাকে পড়েছে বিএনপি।
তবে সব হিসাব নিকাশ ছাড়িয়ে বাঘায় এখন সর্বত্র উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচনী প্রচারণা চলছে। আমেজের মধ্য দিয়ে মধ্যরাত পর্যন্ত রাস্তার মোড়ে মোড়ে চলে নির্বাচনী আড্ডা-বৈঠক। একই সঙ্গে হাটে-মাঠে, পথে-প্রান্তরে আর হোটেলে রেঁস্তরায় লোকমুখে প্রার্থীদের পক্ষে-বিপক্ষে তর্ক-বির্তকের ঝড় উঠেছে। আর নির্বাচনী ঝড়ে হাওয়া দিতে প্রার্থীদের সমর্থকরাও রয়েছে তৎপর।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান, দুটি পৌরসভা ও ছয়টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত বাঘা উপজেলা দ্বিতীয় দফার তফসিল অনুযায়ী ভোট গ্রহণ হবে ২৭ ফেব্রুয়ারি। ইতোমধ্যেই ভোট গ্রহণের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। এ উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ২৯ হাজার ১৮২। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬৪ হাজার ৮৫৬ ও মহিলা ভোটার ৬৪ হাজার ৩২৬। মোট ৪৯টি ভোট কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
সাকি/