বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে ধর্মীয়ভাবে উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন

  • Emad Buppy
  • February 23, 2014
  • Comments Off on বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে ধর্মীয়ভাবে উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন
mijanur rohoman

mijanur rohomanবাল্যবিবাহ প্রতিরোধে ধর্মীয়ভাবে উদ্যোগ না নিলে এর প্রতিরোধ করা সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান।

এ বিষয়ে ধর্মীয় আইনের প্রগতিশীল ব্যাখ্যা দেওয়া প্রয়োজন অন্যথায় আইন করেও বাল্যবিবাহ পুরোপুরি থামানো যাবে না।

রোববার বিকেলে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আয়োজিত ‘প্রস্তাবিত বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন-২০১৪’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

মিজানুর রহমান বলেন, দারিদ্র্য ও সামাজিক নিরাপত্তার অভাবকে বাল্যবিবাহের মূল কারণ হিসেবে দায়ী করা হচ্ছে। কিন্তু বাল্যবিবাহ মুসলিম মেয়েদের ক্ষেত্রে কিছু সামাজিক নিরাপত্তা দিতে পারলেও অন্যান্য ধর্মের বেলায় কোনো নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে না।

বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্ট আপিল বিভাগের বিচারপতি এম ইমান আলী বলেন, বাল্যবিবাহ কেন হচ্ছে? অনেকের কাছে এটি ট্রেডিশনাল। অনেকেই ধর্মের দোহাই দেন। কিন্তু ইসলাম, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান কোনো ধর্মেই বাল্যবিবাহকে সমর্থন করে না।

এই আইনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, নাবালকদের বয়স ১৮ না হয় ২১ বছর যেকোনো একটি নির্ধারণ করার জন্য সরকারের কাছে তিনি আহ্বান জানান।

ছেলে-মেয়ে সকলের সমান অধিকার হওয়া উচিৎ মন্তব্য করে তিনি বলেন, ১৮ বছর পর্যন্ত ছেলে-মেয়েদের শিশু হিসেবে বিবেচনা করা হলেও ১৮ বছরের পর মেয়েরা সাবালক হয় কিন্তু ছেলেদের ক্ষেত্রে ২১ বছর পর্যন্ত সাবালক হওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হয়। ১৮ বছর হওয়ার পর ভোট দেওয়া থেকে শুরু করে সবকিছু করতে পারবে। কিন্তু বিয়ে করতে পারবে না। এভাবে তো সমান অধিকার দেওয়া হয় না।

অনুষ্ঠানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের প্রভাষক মাসুম বিল্লাহ এই আইনটির বেশ কিছু অসঙ্গতি তুলে ধরে বলেন, বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনটির ভাব, স্বভাব এবং অভাব রয়েছে। দেশে বাল্যবিবাহের প্রধান শিকার কণ্যাশিশু, কিন্তু এই আইনের কোথাও কণ্যাশিশু শব্দটিই উল্লেখ করা হয়নি।

তিনি বলেন, এই খসড়া আইনে বলা হয়েছে বাল্যবিবাহে চাপ প্রয়োগকারী এবং ওই শিশুর পিতামাতাকে সমান শাস্তি দেওয়া হবে। কিন্তু এখানে একটি বিষয় হচ্ছে যদি সেই পিতামাতা কারও চাপ প্রয়োগের ফলে বাল্যবিবাহ দিতে বাধ্য হয় তবে কেন তাদের চাপপ্রয়োগকারীর সমান শাস্তি হবে?

বাল্যবিবাহ বিষয়টি শিশু নির্যাতনের আওতায় পড়ে। তাই এই আইন বাস্তবায়ন করতে পারলে এই ধরণের শিশু নির্যাতন বন্ধ করা সম্ভব হবে বলেও বক্তারা জানান।

মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন- জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সার্বক্ষণিক সদস্য এবং শিশু অধিকার কমিটির সভাপতি কাজী রিয়াজুল হক, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব তাহমিনা বেগম, মানবাধিকার কমিশনের সদস্য অ্যাডভোকেট ফৌজিয়া করিম ফিরোজ, অধ্যাপক মাহফুজা খানম, মহিলা পরিষদ সদস্য এ্যাডভোকেট মাকসুদা আক্তার প্রমুখ।

জেইউ