মৃদুল চৌধুরীর অপহরণে র‌্যাব কিংবা পুলিশ সন্দেহের তালিকায় নেই

  • Emad Buppy
  • February 17, 2014
  • Comments Off on মৃদুল চৌধুরীর অপহরণে র‌্যাব কিংবা পুলিশ সন্দেহের তালিকায় নেই

শফিকুল ইসলামচট্টগ্রামের স্বর্ণ ব্যবসায়ী মৃদুল চৌধুরী অপহরণের ঘটনায় র‌্যাব কিংবা গোয়েন্দা পুলিশকে সন্দেহের তালিকায় রাখছেন না চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ কমিশনার শফিকুল ইসলাম। অপহরণ হওয়ার ছয় দিন পর কুমিল্লার কংশনগর থেকে উদ্ধার হওয়া মৃদুল চৌধুরীর সাথে চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ঘন্টাব্যাপী একান্ত আলাপ শেষে একথা জানান তিনি।

এ সময়  সাংবাদিকদের হাসপাতালে প্রবেশ ও মৃদুল চৌধুরীর সঙ্গে দেখা করতে দেয়নি পুলিশ।

শহিদুল ইসলাম জানান, মৃদুল চৌধুরীর সাথে কথা বলে আমারা নিশ্চিত হয়েছি যে, এ ঘটনার সাথে পুলিশ কিংবা র‌্যাব  কোনোভাবেই জড়িত নয়। মৃদুল চৌধুরী আমাদের জানিয়েছেন, অপহরণ হওয়ার পর তার চোখ বেধে ফেলা হলেও অপহরণকারীদের কাছে অস্ত্র ছিল না। আর সেটা তিনি হাত দিয়ে বুঝার চেষ্টা করেছেন। অপহরণকারীরা প্রথমে তার মুক্তিপণ হিসেবে ৫০ লাখ টাকা দাবি করবে বলে চিন্তা করেও পরে তা বাদ দেন বলে মৃদুল চৌধুরী আমাকে  জানান। আর এ সকল বিষয় বিবেচনা করে র‌্যাব কিংবা পুলিশ জড়িত নয় বলে আমরা ধরে নিয়েছি।

অপহরণের পর থেকে অপহরণকারীরা মুক্তিপণ দাবি না করা এবং তাকে উদ্ধারে দৃশ্যমান কোনো অভিযান না নেওয়ায় তার পরিবার, এলাকাবাসী ও ব্যবসায়ী সংগঠন র‌্যাব-পুলিশের সংশ্লিষ্টতাকে দায়ী করে আসছিল। অভিযুক্ত মেজর রফিকুল আমিনকে গ্রেপ্তারের দাবিতে চট্টগ্রামের বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠন ও এলাকাবাসী মানববন্ধন ও সমাবেশ করে আসছিল ।

উদ্ধারের খবর পেয়ে মৃদুলের ভাই শিমুল চৌধুরী সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে কুমিল্লায় পৌঁছান। শিমুল চৌধুরী অর্থসূচককে জানান, উদ্ধার হওয়ার পর মৃদুল ছয় দিন ধরে তার ওপরে চলা  অমানুষিক শারীরিক নির্যাতনের কথা জানিয়েছেন। শরীরে লাঠি দিয়ে আঘাতের ফলে ক্ষত ও আঘাতের চিহ্ন ছিল তার পুরো শরীরে।

সিএমএম আদালতে র‌্যাবের সদস্য মেজর রকিবুল আমিনসহ আরও তিনজনের  বিরুদ্ধে মৃদুল বাদী হয়ে মামলা করেন। এতে তিনি  উল্লেখ করেন, গেল বছর ৩ অক্টোবর  ৮০ ভরি গলানো স্বর্ণ ট্রেনে করে এক বিশ্বস্ত কর্মচারী ও ড্রাইবার বাবুল পালকে দিয়ে ঢাকার তাঁতীবাজারে পাঠান। কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে র‌্যাব-২ এর মেজর রকিবুল আমিন ও তার সোর্স বাবুলকে গাড়িতে তুলে তার কাছ থেকে ৮০ ভরি স্বর্ণ রেখে তাকে গাড়ি থেকে  নামিয়ে দেয়। পরবর্তীতে রকিবুলের সাথে যোগাযোগ করা হলে যাচাই বাছাই করে তার সোনা ফেরত দেওয়া হবে বলে জানায়। কিন্তু কিছুদিন যাওয়ার পর রকিবুল তা অস্বীকার করে এবং তা ফেরত চাইলে বিপদ হবে বলে হুমকি দেয়।

এদিকে, অপহরণের সাথে প্রথম থেকেই মেজর রকিবুল আমিন জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করার পাশাপাশি মৃদুল চৌধুরী নামে তিনি কাউকে চিনেন না বলেও দাবি করে আসছেন।

উল্লেখ্য, ১১ ফেব্রুয়ারি সকালে চট্টগ্রাম নগরীর পুরাতন টেলিগ্রাফ রোডের বাসা থেকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে মৃদুল চৌধুরীকে কালো রঙ্গের একটি মাইক্রোবাসে তুলে নেওয়া হয়। ছয়দিন পর আজ সোমবার ভোরে কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার কংশনগর থেকে তাকে উদ্ধার করে দেবপুর পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা। অপহরণের আগে মৃদুল চৌধুরী বাদী হয়ে ঢাকা সিএমএম আদালতে র‌্যাবের সদস্য মেজর রকিবুল আমিনসহ তিন জনের বিরুদ্ধে ৮০ ভরি স্বর্ণ লুটের মামলা করেন। র‌্যাবের বিরুদ্ধে মামলা করায় তাকে অপহরণ করা হয়েছে দাবি করে কোতয়ালী থানায় অপহরণ মামলা করে মৃদুলের পরিবার।