
সবজি চাষ করে সাফল্যের স্বপ্ন দেখছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার চাষীরা। ধান চাষে গত কয়েক বছর ধরে লোকসান গুনতে হচ্ছে কৃষকদের। প্রতি বিঘা জমিতে লোকসান দিতে হয়েছে হাজার হাজার টাকা। বর্তমানে ধানের বিকল্প হিসেবে সবজি চাষ করছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কৃষকরা।
সংসারের আর্থিক স্বচ্ছলতার সম্ভাবনা নিয়ে চাষ করছে আলু, টমেটো, ফুলকপি, লাউসহ বিভিন্ন সবজি। বর্তমানে দেশের খাদ্যের যোগান দিতে গিয়ে কৃষকরা যখন লোকসানের শিকার হতে হচ্ছে তখন চাষাবাদের কৌশল পরিবর্তন করে সবজি চাষে জোকে পড়েছে তারা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার দেওড়া গ্রামের কৃষক জাফর আলী ভূঁইয়া বেশ কয়েক বছর ধান চাষ করে তেমন লাভ না হওয়ায় চাষাবাদে প্রায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছিল। পরে একজন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে তিন বন্ধু মিলে গত বছর থেকে সবজি চাষ শুরু করেন। তিনি দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে সবজি চাষে মনোনিবেশ করেন। অল্প বিনিয়োগ করার পাশাপাশি অনেক শ্রমের বিনিময়ে গত বছর তাদের প্রায় অর্ধলক্ষ টাকা লাভ হয়েছিল। তাই তিনি এ বছর ৩ বিঘা জমিতে আলু রোপণ করেছেন। এ বছর আলু বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছেন চাষী জাফর আলী ভূঁইয়া।
কৃষক জাফর আলী ভূঁইয়া জানান, আলু চাষে সরাইল উপজেলা কৃষি অফিস ও উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তার কাছ থেকে বিস্তারিত পরামর্শ ও সহযোগিতা পেয়েছেন। তিনি আরও বলেন, আলু চাষ সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করছে কোল্ড ষ্টোর। দীর্ঘমেয়াদী সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা গেলে এখানকার আলু দেশের চাহিদা অনেকটা পূরণ করতে সক্ষম হতো।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত বছর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় আলু চাষ হয়েছিল ১৮৭০ হেক্টর জমিতে। আলু উৎপাদন হয়েছিল ৩৬ হাজার ৯৭৮ মেট্টিক টন। এ বছর জেলায় আলু চাষ হয়েছে ১৯৫৫ হেক্টর জমিতে। চলতি বছরে ৩৪ হাজার ৬৫৯ মেট্টিক টন আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এ বছর আলু উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে এমনটাই ধারণা করছে কৃষি অফিস।
সরাইল উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা অরুন চন্দ্র কর জানান, কৃষি অফিস সব সময় চাষিদের পরামর্শ দিয়ে আসছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সংরক্ষণাগার না থাকায় কৃষককে আলু বিক্রি করতে হবে উত্তোলন মৌসুমেই। তবে সংরক্ষণাগার থাকলে কৃষক আরও লাভবান হতে পারতো।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক মো. বছির উদ্দিন জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মাটি এবং আবহাওয়া আলু চাষের অনুকূলে। আর এতে প্রতি বছরই কৃষক পাচ্ছে বাম্পার ফলন।