
অবশেষে দেশের দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবলের অনিশ্চয়তা কাটছে। চলতি মাসেই এ ক্যাবলের জন্য আন্তর্জাতিক একটি কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে চুক্তিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। আগামি ৭ ফেব্রুয়ারি মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে এ চুক্তি স্বাক্ষর হবে। গত বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে এ চুক্তি স্বাক্ষরের কথা ছিল। কিন্তু প্রকল্প বাস্তবায়নকারী কোম্পানি ফ্রান্সের আলকাটেল লুজেন আর্থিক সংকটের জন্য সময় চাওয়ায় তা পিছিয়ে যায়। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপনের মাধ্যমে দেশ বাড়তি ১ হাজার ৪০০ জিবিপিএস (গিগাবাইট পার সেকেন্ড) ব্যান্ডউইথ পাবে। বর্তমান সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে ২০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ পেয়েছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে মাত্র ৪০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ ব্যবহার করতে পারছে দেশটি। বাকী ব্যান্ডউইথ এখনও অব্যহৃত। তারপরও ঝুঁকি কমাতে দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবলে যুক্ত হচ্ছে দেশ। আর এ লক্ষে যুক্ত হচ্ছে সাউথ ইস্ট এশিয়া-মিডল ইস্ট-ওয়েস্ট ইউরোপ কনসোর্টিয়ামের এসইএ-এমই-ডব্লিউই-৫ নামের আন্ত:দেশীয় ক্যাবল নেটওয়ার্কে।
এসইএ-এমই-ডব্লিউই-৫ প্রকল্পের ক্যাবলে দক্ষিণ এশিয়া,দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া,মধ্য এশিয়া,আফ্রিকা ও ইউরোপের ১৬ দেশ সংযুক্ত হচ্ছে। দেশগুলো হচ্ছে-বাংলাদেশ, ফ্রান্স, ইটালি, আলজেরিয়া, তিউনেশিয়া, মিশর, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, পাকিস্তান, ভারত, শ্রীলংকা, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও মায়ানমার।
এসইএ-এমই-ডব্লিউই-৫ প্রকল্পের আওতায় সাগরের নিচ দিয়ে ২৫ হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ ক্যাবল স্থাপন করা হবে। বাংলাদেশে ক্যাবলটি আসবে সিঙ্গাপুর থেকে মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলংকা ও মায়ানমার হয়ে। কনসোর্টিয়াম প্রকল্পের আওতায় কক্সবাজার পর্যন্ত ক্যাবল পৌঁছে দেবে। সেখান থেকে বাড়তি ৩শ কিলোমিটার ক্যাবলের মাধ্যমে এটি পটুয়াখালির কুয়াকাটায় নিয়ে যাওয়া হবে। কুয়াকাটাতেই হবে এর ল্যান্ডিং স্টেশন। ইতোমধ্যে সেখানে ১০ একর জমি কেনা হয়েছে।
দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবলে যুক্ত হতে বাংলাদেশকে ৬ কোটি ডলার, স্থানীয় মুদ্রায় প্রায় ৫শ কোটি টাকা ব্যয় করতে হবে। এর মধ্যে ইসলামিক উন্নয়ন ব্যাংক (আইডিবি) দেবে প্রায় ২৪০ কোটি টাকা। বাকী টাকার সংস্থান করবে বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি লিমিটেড। চুক্তি স্বাক্ষরের ২২ মাস পর এ ক্যাবলে ডাটা আদান-প্রদান শুরু হবে।