ব্যাংককে ক্ষুদ্র্রঋণ খাতে বিনিয়োগের পরামর্শ

green banking
governor_bb
ফাইল ছবি

ক্ষুদ্র্রঋণ প্রতিষ্ঠানগুলোকে আর্থিক ভাবে সহায়তার মধ্যদিয়ে ব্যাংকগুলোকে ঝুঁকিমুক্ত বিনিয়োগের পরামর্শ দিলেন বাংলাদেশ ব্যাংক এর গভর্নর ড.আতিউর রহমান। তিনি আজ শনিবার রাজধানীর মিরপুরে বাংলাদেশ ব্যাংক ট্রেনিং একাডেমিতে ক্রেডিট এন্ড ডেভেলপমেন্ট ফোরাম (সিডিএফ) আয়োজিত আজকের ক্ষুদ্র অর্থায়ন সম্মেলনের  এমন পরামর্শ দেন।

গভর্নর বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ দারিদ্র্য নিরসনে যে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে তাতে ক্ষুদ্রঋণের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। বাংলাদেশের ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানগুলো শুধু ক্ষুদ্রঋণ প্রদানই নয়, ঋণবহির্ভূত অন্যন্য সেবা প্রদানেও ব্যাপক সহায়ক বা মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করছে।’

তার মতে, দারিদ্র্য নিরসন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, জলবায়ু পরিবর্তন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা ও জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে অর্জিত সাফল্যের মূলে ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানগুলোর গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রয়েছে।

তবে দেশের উন্নয়নে যারা এমন ভূমিকা রাখছে তারা মাঝেমাঝেই তহবিল সংকটে পড়ছে। দেশের বিএশির ভাগে ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠান বর্তমানে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় গড়ে উঠা পিকেএসএফ-এর তহবিলের ওপর ভিত্তি করে তাদের ঋণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এ খাতগুলো থেকে প্রাপ্ত তহবিল ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানগুলোর চাহিদার তুলনায় পর্যাপ্ত নয়।তাই ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানগুলো তহবিলের জন্য ব্যাংকগুলোর স্মরণাপন্ন হচ্ছে।

গভর্নর মনে করেন,  এটিকে ব্যাংকগুলো ইতিবাচক বিবেচনা করে ক্ষুদ্রঋণ খাতে অর্থায়ন বাড়াতে পারে। এ খাতে আদায়ের হার অনেক বেশি হওয়ায় ব্যাংকের বিনিয়োগ কেবল লাভজনকই হবে না, ঝুঁকিও থাকবে অনেক কম।

এছাড়া, ক্ষুদ্রঋণ পরিশোধের মেয়াদকাল কম হওয়ায় বিনিয়োগকৃত অর্থ ঘূর্ণায়মান তহবিল হিসেবে ব্যবহারের সুযোগ  কাজে লাগিয়ে ব্যাংকগুলো প্রচলিত গ্রাহকের পাশাপাশি ক্ষুদ্রঋণ খাতের গ্রাহকদের ওপরও আস্থাশীল হতে পারে বলে জানান গভর্নর।

গভর্নর ‘মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরী অথরিটি (এমআরএ) এর নানা কর্মসূচির কথাও এ সময় তুলে ধরেন। তিনি জানান, এমআরএ’র সনদপ্রাপ্ত ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠান, গ্রামীণ ব্যাংক ও বিভিন্ন সংস্থার সুবিধাভোগীর সংখ্যা সাড়ে তিন কোটি এবং কর্মরত লোকবলের সংখ্যা প্রায় দেড় লাখ। আশির দশকের ২০০ কোটি  টাকার  ক্ষুদ্রঋণ খাত  আজ ৩০ হাজার  কোটি  টাকার সেক্টরে পরিণত হয়েছে।

বাংলাদেশের ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানগুলো যথাযথ নিয়মনীতির মধ্যে থেকে দরিদ্র মানুষের অর্থ ব্যবহারের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি নতুন নতুন সেবা প্রদান করতে পারে বলেও গভর্নর বার বক্তব্যে উল্লেখ করেন। আর এই কাঝে যেন ধারাবাহিকতা এবং সৃজনশীলতা ধরে রাখতে পারে সে দিকে এমআরএ বিশেষ নজর দিচ্ছে বলেও জানান তিনি।

তবে ক্ষুদ্রঋণ খাতের টেকসই উন্নয়নের জন্য ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক, এমআরএ, পিকেএসএফ, সিডিএফ সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে বলে মনে করেন তিনি।

তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, ক্ষুদ্রঋণ সম্মেলন ক্ষুদ্রঋণ খাতের সকল স্টেকহোল্ডারের মধ্যে আন্তঃসংযোগ বাড়িয়ে দেশের অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।