
রাজনীতিকদের খাম-খেয়ালির বশে সীমান্তের দেয়াল আলাদা করে দিয়েছে কয়েক লাখ কোরিয়ান পরিবারের সদস্যদের। দুই অংশের রাজনৈতিক বৈরিতার কারণে এই সব বিচ্ছিন্নদের একত্রিত হওয়া দূরের কথা বাৎসারিক পুনর্মিলনীও হয়ে উঠে না ঠিক মতো। সীমান্তের কাঁটাতার শূলের মত বিঁধেছে স্বজনহারাদের বুকে, কিন্তু তাদের আর্তনাদ ক্ষমতাসীনদের কান পেরিয়ে হৃদয়ে পৌঁছাতে পারে নি কখনো।
অবশেষে কোরিয়ানদের ভাগ্য নিয়ন্ত্রকরা সম্মত হয়েছেন বিচ্ছিন্ন স্বজনদের পুনর্মিলনী আয়োজনে। দক্ষিণ কোরিয়া সরকারে পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে এই কথা জানানো হয়েছে। খবর আল-জাজিরার।
২০১০ সালের পর এই প্রথম হারানো স্বজনদের সাথে সাক্ষাতের সুযোগ পাচ্ছেন দক্ষিণ এবং উত্তর কোরিয়ার নাগরিকরা। রাজনৈতিক নিষেধাজ্ঞার কারণে উভয় দেশের মধ্যে সব ধরনের চিঠি-চালাচালি এমনকি ইমেইল আদান-প্রদানও বন্ধ। তাই স্বজনদের খোঁজ-খবর জানার জন্য এই পুনর্মিলনীই একমাত্র ভরসা।
দক্ষিণ কোরিয়া সরকার জানায়, চলতি মাসের ২০ থেকে ২৫ তারিখ পর্যন্ত স্বজনদের সাথে দেখা করার সুযোগ পাবে কোরিয়ানরা। উত্তর কোরিয়ার মাউন্ট কোমগং রিসোর্টে এই পুনর্মিলনীর আয়োজন করা হবে।
তবে এই অল্প সময়ের মধ্যে কত সংখ্যাক কোরিয়ান পুনর্মিলনীর সুযোগ পাবে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিশেষজ্ঞরা। কেননা দক্ষিণ কোরিয়াতেই ৭২ হাজার স্বজনহারা রয়েছেন, যাদের অধিকাংশের বয়স ৮০ এর উপর।
উল্লেখ্য, গত শতাব্দীর মাঝামাঝি কোরীয় উপদ্বীপ বিভক্ত হওয়ার পর কয়েক লাখ কোরিয়ান স্বজনদের কাছ থেকে আলাদা হয়ে পড়েন। এই সব স্বজনহারাদের একত্রিত করার উদ্দেশ্যে ২০১০ সালে আয়োজিত সর্বশেষ পুনর্মিলনী দক্ষিণ কোরিয়ার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনে বাতিল করে উত্তর কোরিয়া।
আর উত্তর কোরিয়া স্বজনহারাদের পুনর্মিলনীকে রাজনৈতিকে অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ তুলেছিল দক্ষিণ কোরিয়া।