
ঝিনাইদহে ভূমি জরিপের কাজ দুই যুগেও শেষ হয়নি। ১৯৮৮ সালে শেষ হওয়া ভূমি জরিপের চূড়ান্ত মাঠ পর্চা জেলার বেশির ভাগ কৃষকদের হাতে পৌঁছেনি। ছাপার অজুহাত দেখিয়ে বছরের পর বছর হয়রানি করা হচ্ছে জমির মালিকদের। ফলে জমি ক্রয়-বিক্রয় নিয়ে সমস্যায় পড়ছেন অনেকেই।
ঝিনাইদহ সেটেলমেন্ট অফিস সূত্রে জানা গেছে, ১৯৮৮ সালের ১ জানুয়ারি থেকে জেলার ৬ উপজেলার প্রায় এক হাজার মৌজায় ভূমি জরিপ হয়। আপত্তির মামলা (ডিপি) নিষ্পত্তি হয়ে চূড়ান্ত ছাপার জন্য পাঠানো হয় ঢাকা ভূমি জরিপ অধিদপ্তরে। এরপর একে একে চলে গেছে ২৫ বছর। ২৬ বছরে পা দিয়েছে কৃষকদের অপেক্ষার প্রহর। কিন্তু ছাপানো চূড়ান্ত পর্চা এখনও কৃষকদের হাতে পৌঁছায়নি।
যশোর আঞ্চলিক সেটেলমেন্ট কর্মকর্তা জানান, ঝিনাইদহ সদর উপজেলায় ২৬৮টি মৌজা রয়েছে। এর মধ্যে ৫৮টি মৌজার ছাপা পর্চা কৃষকদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া ১৩টি মৌজার পর্চা যশোর অফিসে পৌঁছেছে। এখনো ১৯৭টি মৌজার কাগজ ঢাকার জরিপ অধিদপ্তরে রয়েছে বলে তিনি জানান।
জেলার বেশির ভাগ মৌজার কাগজ ঢাকায় আটকে আছে। বিলম্বের কারণ সম্পর্কে জোনাল সেটেলমেন্ট কর্মকর্তা ভবেশ চন্দ্র পোদ্দার জানান, ছাপার জন্য পর্যাপ্ত মেশিন না থাকায় বিলম্ব হচ্ছে।
ঝিনাইদহ সেটেলমেন্ট অফিসের অপর এক কর্মকর্তা জানান, চূড়ান্ত পর্চা না পাওয়ায় কৃষকরা নানামুখী সমস্যায় পড়ছেন। জমি ক্রয়-বিক্রয় ছাড়াও মামলা মোকদ্দমা ও নাম পত্তনে তাদের সমস্যা হচ্ছে। বেশি প্রয়োজন হলে কৃষকদের ছুটতে হচ্ছে যশোর আঞ্চলিক রেকর্ড রুমে। সেখানেও হয়রানি ও ভোগান্তির শেষ নেই।
আসাননগর গ্রামের কৃষক রজব আলী জানান, ছাপানো পর্চার জন্য অপেক্ষা করছেন ২৫ বছর। কিন্তু সেটেলমেন্ট অফিস থেকে জানানো হচ্ছে পর্চা ছাপানো হয়নি। এ পর্চা নিয়ে তারা ভোগান্তিতে পড়েছেন।
এ বিষয়ে ঝিনাইদহ সহকারী কমিশনার (ভূমি) কৃষকদের ভোগান্তির কথা স্বীকার করে জানান, আসলে এ ব্যাপারে আমাদের কিছুই করার নেই।
কেএফ