
পোশাক শ্রমিকদের ডাটাবেজ বা তথ্যভাণ্ডার তৈরির কার্যক্রম থমকে গেছে। প্রায় ৮ মাস আগে তথ্যভাণ্ডার তৈরির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছিল বিজিএমইএ। কিন্তু এ দীর্ঘ সময়ে উল্লেখ করার মত কোনো অগ্রগতি দেখাতে পারেনি সংগঠনটি।
জানা গেছে, গত ৮ মাসে মাত্র ৩৫০টি কারখানা তাদের শ্রমিকদের তথ্য জমা দিয়েছে বিজিএমইতে। তথ্য জমাদানকারী কারখানার সংখ্যা সংগঠনের মোট সদস্যের এক পঞ্চমাংশেরও কম। বর্তমানে এ সংগঠনে প্রায় দুই হাজার সদস্য রয়েছে।
নানা কারণে তথ্যভান্ডারের কাজ বেশিদূর এগোয়নি বলে জানিয়েছে পোশাক কারখানা মালিকদের এ সংগঠনটি। শিগগিরই এ বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন তারা।
সংগঠনটি বলছে, বিগত কয়েকমাস ধরে চলতে থাকা রাজনৈতিক অস্থিরতা, পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম বেতন কাঠামো নিয়ে টানাপোড়েন, কম্প্লায়েন্স ইস্যু নিয়ে মালিকরা ব্যস্ত থাকাকে দায়ী করছেন। তবে শিগগিরই এই কার্যক্রম আবার শুরু করা হবে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি।
বিজিএমইএ আরও বলছে, তাদের এখন প্রায় দুই হাজার সক্রিয় কারখানা রয়েছে। যার মধ্যে এই পর্যন্ত ৩৫০টি কারখানা এই তথ্যভাণ্ডারের অর্ন্তভুক্ত হয়েছে। আশুলিয়া অঞ্চলে ২৫০ টি কারখানার মধ্যে ১৬০টি এই সেবার আওতায় এসেছে।
বিজিএমইএ সূত্রে আরও জানা যায়, ইতোমধ্যে ৬০টি ছোট কারখানা এই সেবার অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। যে সব কারখানায় এক হাজারের কম শ্রমিক আছে তাদের ন্যূনতম ৭৫ হাজার টাকার বিনিময়ে এই সেবা দেওয়া হচ্ছে বলে জানায় সংগঠনটি।ইতোমধ্যে হামীম, নাসা, ক্লাসিক, স্টারলিং গ্রুপসহ বড় বড় কারখানা এই সেবার অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে বলে জানা গেছে।
গত ২০ মে-২০১৩ সোমবার বিজিএমইএ’র সভাপতি আতিকুল ইসলাম শ্রমিকদের ডাটাবেজ ও সার্ভিস বুক বাস্তবায়ন বিষয়ক কর্মশালায় বক্তৃতাকালে ৩১ আগস্টকে এ কাজের জন্য শেষ সময় হিসাবে উল্লেখ করেছিলেন।নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বিজিএমই’র কাছে শ্রমিকদের ডাটাবেজ জমা না দিলে কারখানার সব সুযোগ-সুবিধা বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ার করেছিলেন তিনি। তবে মালিকরা তার বেঁধে দেওয়া সময় সীমাকে তোয়াক্কা করেননি।নানা অজুহাত দেখিয়ে এতো দিন পার করেছেন তারা।
সংগঠনটির সহ-সভাপতি শহীদুল্লাহ আজীম অর্থসূচককে জানান,মূলত কারখানাগুলোর আর্থিক সংকটের কথা বিবেচনায় এনে মালিকরা ডাটাবেজ তৈরিতে উৎসাহ পায়নি। তাছাড়া বিগত কয়েক মাস রাজনেতিক অস্থিরতার কারণে এই শিল্পে কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।রপ্তানি আদেশ বাতিল হওয়ায় বিদেশি ক্রেতারা তাদের ব্যবসা অন্য দেশে সরিয়ে নিচ্ছে বলে জানান তিনি।
এই অবস্থায় শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধি, কম্প্লায়েন্স ইস্যূ নিয়ে জটিলতা, সব মিলিয়ে ডাটাবেজ তৈরির খরচের কথা মাথায় রেখে মালিকরা এগিয়ে আসেননি বলে স্বীকার করেন তিনি। তবে এবার বিজিএমইএ এই তথ্য ভাণ্ডার তৈরিতে শিগগিরই পদক্ষেপ নিবে বলে জানান তিনি।
তাজরীন ফ্যাশন ও রানা প্লাজার দূর্ঘটনার পর অনেক শ্রমিকের পরিচয় এবং বেতন নিয়ে যে সমস্যা তৈরি হয়েছিল তা যেন ভবিষৎতে আর না ঘটে সে জন্যই ডাটা বেইজ তৈরির সিদ্ধান্ত নেয় বিজিএমইএ।
শ্রমিকরা কে কোথায় কাজ করে,কাজে যোগদানের সময়,কোন গ্রেডে বেতন পেত, শ্রমিকের গ্রামের বাড়ি থেকে শুরু করে কারখানার যাবতীয় সকল তথ্য থাকছে এই সেবায়।