
রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কর্মচারীদের অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি চলছে। অ্যাম্বুলেন্সের অতিরিক্ত ভাড়া চাওয়ার প্রতিবাদ করায় কর্মচারীসমিতির সেক্রেটারিকে দালালরা মারধর করার প্রতিবাদে মঙ্গলবার অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি শুরু করেছে তারা।
জানা গেছে, দীর্ঘদিন একদল চিহ্নিত সন্ত্রাসী হাসপাতালের ভেতরে অবৈধভাবে অ্যাম্বুলেন্স বাণিজ্য করে রোগীদের হয়রানীসহ অতিরিক্ত অর্থ আদায় করে আসছিল। এ নিয়ে কর্মচারীরা প্রশাসনের কাছে একাধিকবার বহিরাগত অ্যাম্বুলেন্স উচ্ছেদের দাবি জানায়। কিন্তু এতে কোনো কাজ হয়নি।
মঙ্গলবার সকালে হাসপাতাল থেকে গাইবান্ধায় একটি লাশ নিয়ে যাওয়ার জন্য ৯ হাজার টাকা দাবি করে দালাল চক্র। কলেজের কর্মচারী সমিতির সেক্রেটারি রেজাউল ইসলাম রুমেলের বাড়ি গাইবান্ধায় হওয়ায় লাশের লোকজন তাকে খবর দেয়। তিনি এসে দালালদের বলেন ন্যায্য ভাড়া ২ হাজার টাকা, কেন তোমরা ৯ হাজার টাকা দাবি করছ। এক পর্যায়ে বাইরে থেকে ২ হাজার টাকায় অ্যাম্বুলেন্স ঠিক করে লাশটি পাঠানোর উদ্যোগ নেয় রুমেল। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে অবৈধ অ্যাম্বুলেন্স চালক ও দালালরা রুমেলকে এলোপাতাড়ি মারধর করতে থাকে। এ সময় তাকে রক্ষা করতে যায় কর্মচারী নুরুজ্জামান, ইমন ও নোমান। দালালরা তাদেরকে মারপিট করে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে হাসপাতাল ও কলেজের সব কর্মচারী ঘটনাস্থলে আসলে তারা পালিয়ে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় রুমেলকে হাসপাতালের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনার প্রতিবাদে হাসপাতাল চত্বর থেকে সকল অবৈধ অ্যাম্বুলেন্স দালাল উচ্ছেদের দাবিতে কর্মচারীরা বেলা সাড়ে ১২ টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি শুরু করে মাঠে নেমে আসে। তারা পরিচালকের দায়িত্বে থাকা ডেপুটি ডাইরেক্টর আব্দুস সালামের সাথে দেখা করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। এক পর্যায়ে পুলিশের সহযোগিতা নিয়ে হাসাপাতালের বিক্ষুব্ধ কর্মচারীরা চত্বর থেকে সকল ধরনের অবৈধ অ্যাম্বুলেন্স এবং দালালকে উচ্ছেদ করে ক্যাম্পাসের বাইরে পাঠিয়ে দেয়। বর্তমানে সেখানে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
সমিতির সভাপতি শাহীনুর ইসলাম শাহীন জানান, আমরা এই দালাল সিন্ডিকেটের চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের নাম প্রশাসন ও হাসাপাতাল কর্তৃপক্ষকে দিয়েছি। তাদেরকে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি নিশ্চিত করা এবং ক্যাম্পাস থেকে অবৈধ অ্যাম্বুলেন্স ও দালালদের নির্মূল করার ব্যবস্থা না নেয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। তিনি জানান দাবি আদায়ে শিক্ষক শিক্ষার্থী, চিকিৎসকসহ ক্যাম্পাসের ১৮টি সংগঠন মিলে সংগ্রাম কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রয়োজনে আমরা আরও কঠোর কর্মসূচি দেব।
হাসপাতালের পরিচালকের দায়িত্বে থাকা উপ-পরিচালক আব্দুস সালাম জানান, “অবৈধ অ্যাম্বুলেন্স ব্যবসা ও হাসপাতালকে দালালমুক্ত করতে আমরা বদ্ধপরিকর। বিষয়টি আমরা প্রশাসনকে অবহিত করে শক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি। কর্মবিরতির কারণে যে অসুবিধা সৃষ্টি হয়েছে তা এমার্জেন্সি টিম করে সেরে নেওয়ার চেষ্টা চলছে।
সাকি/ এআর