পাঁচ বস্তা টাকাসহ ব্যাংক ডাকাতির মূল হোতা সোহেল গ্রেপ্তার

ব্যাংক ডাকাত
এই সুড়ঙ্গ দিয়ে সোনালী ব্যাংকে প্রবেশ করে ভল্ট ভেঙ্গে অন্তত ১০ কোটি টাকা লুট করে নিযে যায় দুবৃত্তরা

কিশোরগঞ্জের ব্যাংক ডাকাতির মূল হোতা সোহেলকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ান (র‌্যাব)। এসময় উদ্ধার করা হয় পাঁচ বস্তা টাকা।

মঙ্গলবার ঢাকার শ্যামপুরে এক অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

প্রসঙ্গত গত ২৫ জানুয়ারি রাতে কিশোরগঞ্জ শহরের রথখোলা এলাকায় অবস্থিত সোনালী ব্যাংকের ভল্ট থেকে অন্তত ১০ কোটি টাকা লুট করেছে দুর্বৃত্তরা। লুটের জন্য তারা পাশের একটি বাসা থেকে মাটির নীচ দিয়ে একটি সুড়ঙ্গ কাটে।

পুলিশের তথ্যমতে ব্যাংকের পাশের বাসার একটি রুমে সোহেল  ৬ মাস ধরে ভাড়া থাকতো। ঘটনার পর থেকে সোহেল পলাতক ছিলো।

এদিকে এই ঘটনায় গতকাল ওই ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপকসহ ১২ জনকে আটক করে পুলিশ।  ঘটনায় অজ্ঞাতসংখ্যক ব্যক্তিকে আসামি করে গত রোববার রাতে কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় একটি মামলা করেছেন ব্যাংকের উপমহাব্যবস্থাপক শেখ মো. আমানুল্লাহ। এছাড়া অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংকিং বিভাগের অতিরিক্ত সচিব গকুল চাঁদ দাশ ও সোনালী ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপকের নেতৃত্বে পৃথক দুটি কমিটি এ ঘটনা তদন্তে কাজ শুরু করেছে।

কিশোরগঞ্জের ওই ঘটনার পরে সারা দেশে ব্যাংকগুলোর ভল্টের নিরাপত্তা বাড়াতে তিন ধরনের নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নির্দেশনায় কাঠামোগত, প্রযুক্তিগত ও বিমা নিরাপত্তা জোরদারের কথা বলা হয়েছে। গতকাল সোমবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করা যাচ্ছে, ব্যাংকগুলোর ভল্টে রক্ষিত অর্থের যথাযথ নিরাপত্তা নিশ্চিতের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন সময়ে নির্দেশনা দিলেও ব্যাংকগুলো তা যথাযথভাবে পালন করছে না। এতে সম্প্রতি ভল্টের নিরাপত্তাবেষ্টনী ধ্বংস করে ব্যাংকের ভল্টে রক্ষিত অর্থ চুরির ঘটনা ঘটেছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তিন ধরনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার নির্দেশনা দিচ্ছে। এগুলো হলো— কাঠামোগত, প্রযুক্তিগত ও বিমা নিরাপত্তা।

কাঠামোগত নিরাপত্তা বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনায় বলা হয়, ব্যাংকের ভল্ট স্পেস বিশেষভাবে সুরক্ষিত করার জন্য ইস্পাতবেষ্টনী নির্মাণসহ ভল্টে সিকিউরিটি টেস্টেড দরজা স্থাপন করতে হবে। মেঝে ও ছাদসহ ভল্টের চারপাশের নির্মিত দেয়ালের নিরাপত্তার বিষয়টি পুর প্রকৌশলীর কাছ থেকে প্রত্যায়িত হতে হবে।

প্রযুক্তিগত নিরাপত্তা বিষয়ে নির্দেশনায় বলা হয়, ভল্টের অভ্যন্তরে সিসিটিভি স্থাপনসহ ভল্টে সিকিউরিটি অ্যালার্মের সার্বক্ষণিক ব্যবস্থা রাখতে হবে। ভল্টের নিরাপত্তা ব্যবস্থার সঙ্গে ব্যাংকের কেন্দ্রীয় তথ্য ব্যবস্থার (সেন্ট্রাল ইনফরমেশন সিস্টেম) নিরবচ্ছিন্ন সংযোগ ব্যবস্থা রাখতে হবে। সব ভল্টের ভেতর স্বয়ংক্রিয় অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র (অটোমেটেড ফায়ার এক্সটিংগুইশার) স্থাপন করতে হবে।

এছাড়া বিমা নিরাপত্তা বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনায় রয়েছে, ভল্টে রক্ষিত সব অর্থের সম্পূর্ণ বিমা থাকতে হবে।