নতুন মুদ্রানীতি; প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশ হওয়ার আশাবাদ

Bangladesh-Bank-2চলতি ২০১৩-১৪ অর্থবছরে প্রথমার্ধের রাজনৈতিক অস্থিরতাজনিত ক্ষতিগুলো কাটিয়ে সামগ্রিক জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশের আশেপাশেই থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ণর আতিউর রহমান।

তিনি সোমবার চলতি অর্থবছেরর জন্য নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণার সময় তার বক্তব্যে এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

আতিউর রহমান আশা প্রকাশ করে বলেন, বছরের দ্বিতীয়ার্ধে প্রথমার্ধের ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা দুরূহ হবে না, সামনের মাসগুলোতে বড় কোনো বিপর্যয় না হলে জিডিপি প্রবৃদ্ধিও বাড়বে।

তিনি আশা প্রকাশ করেন চলতি অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি  ৬ শতাংশের আশেপাশেই থাকবে।

তার মতে, দেশের অর্থনীতির অভ্যন্তরীণ ও বহিঃখাতের গুরুত্বপূর্ণ সূচকগুলো (কৃষি খাতে সম্ভাব্য উৎপাদন, মূল্যস্ফীতি, বিনিময় হার, বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ, অর্থ ও পুঁজিবাজার ইত্যাদি) অর্থবছর ১৪ এর প্রথমার্ধে সার্বিকভাবে বেশ ইতিবাচক অবস্থায় স্থিতিশীল রয়েছে। এ কারণে এবারের মুদ্রানীতিতে প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশ না হলেও এর আশেপাশে হবে বলে তিনি মনে করেন।

প্রসঙ্গত, চলতি ২০১৩-১৪ অর্থবছরের বাজেটে দেশের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৭ দশমিক ২ শতাংশ। কিন্তু সেসময় বিভন্ন সংস্থা ও সংগঠনের পক্ষ থেকে ওই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব নয় বলে বলা হয়। জুলাই মাসে বাজেট ঘোষণার পর বিশ্ব ব্যাংক, এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংকসহ(এডিবি) বেশ কিছু সংস্থা  প্রবৃদ্ধির ঘোষিত হার (৭.২ শতাংশ) অর্জন করা সম্ভব হবে না বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে।

সর্বশেষ বিশ্ব ব্যাংক তার এক প্রতিবেদনে বলে বছর শেষে প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়াতে পারে ৫ দশিমক ৭ শতাংশ।

এর পর অর্থমন্ত্রী গত ২০ জানুয়ারি চলতি অর্থবছরের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৭ দশমিক ২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৬ দশমিক ৩ শতাংশ  করা হয়েছে বলে ঘোষণা দেন।

এদিকে এ সময় আতিউর রহমান নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণাপত্রের ভোক্তা মূল্যস্ফীতি পরিমিতির লক্ষ্য আগেকার মতো ৭ শতাংশেই অপরিবর্তিত থাকছে বলে জানান।

তার মতে,  জিডিপি প্রবৃদ্ধির নতুন প্রক্ষেপণ ও পূর্ববর্তী প্রক্ষেপণের ব্যবধানও বড়ো নয়। ফলে নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণাপত্রের প্রোগ্রামে, মুদ্রা ও ঋণ প্রবাহ সূচকগুলোর ঊর্ধ্বসীমা ও লক্ষ্যমাত্রাগুলো আগেকার চেয়ে সামান্য মাত্র ভিন্নতর।

এদিকে নীট বৈদেশিক সম্পদের অর্জিত উচ্চ প্রবৃদ্ধির কারণে জুন-২০১৪ নাগাদ প্রবৃদ্ধি আগেকার ৮ দশমিক ৪ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা হয়েছে।

মুদ্রানীতিতে আগামি জুনের মধ্যে মূল্যস্ফীতির হার ৭ শতাংশের মধ্যে রাখার চেষ্টা করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, অভ্যন্তরীণ ও বিশ্ব অর্থনীতির গতিধারার চলমান প্রেক্ষাপটে দেশে ভোক্তা মূল্যস্ফীতি পরিমিত ও স্থিতিশীল রাখায় বাংলাদেশ ব্যাংকের মুদ্রানীতি ভঙ্গির আগাম ধারণা দেবার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ষান্মাসিক ভিত্তিতে এই মুদ্রানীতি ঘোষণাপত্র প্রণয়ন ও প্রকাশ করে থাকে।