শুক্রবার থেকে শুরু হতে যাচ্ছে ৪৯তম বিশ্ব ইজতেমা। ২৪ জানুয়ারি শুক্রবার সকাল থেকে রাজধানীর টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীর ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের আনাগোনায় মুখোরিত হবে। ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের স্বাগত জানাতে প্রস্তুত ইজতেমা প্রাঙ্গণ।ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্র থেকে কয়েক হাজার মুসল্লি ইজতেমা ময়দানে অবস্থান নিয়েছেন।
শুক্রবার বাদ ফজর আম বয়ানের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রথম দফার কার্যক্রম শুরু হবে বলে জানিয়েছেন ইজতেমা আয়োজক কমিটি। রোববার দুপুরে আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে প্রথম দফা শেষ হবে।
ইজতেমা আয়োজক কমিটি জানায়, চার দিন বিরতি দিয়ে ৩১ জানুয়ারি শুরু হবে ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব। আগামি ২ ফেব্রুয়ারি রোববার জোহরের আযানের আগে আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এবারে দু’দফার বিশ্ব ইজতেমা।
টঙ্গীর তুরাগ তীরে ১৬৭ একর আয়তনের ময়দানে ১৯৬৭ সাল থেকে শুরু হওয়া এ ইজতেমায় প্রতি বছর লাখো মানুষের ঢল নামে। লাখো মানুষকে জায়গা দিতে এবারো মাঠজুড়ে তাঁবু টানানো, মিম্বর, হাউজ, টয়লেট, খিত্তা, খিত্তার খুঁটি, মোকাব্বের পয়েন্ট, জুড়নেওয়ালী পয়েন্ট, ওজুখানা, বিদ্যুতের সংযোগ, ঘুমানোর জায়গা তৈরি ও মুরব্বীদের বয়ানের মঞ্চ তৈরির কাজ প্রায় সম্পন্ন হয়েছে। বিদেশি মেহমানদের জন্য ভাষাওয়ারি টেন্ট নির্মাণের কাজও শেষ করেছে কর্তৃপক্ষ।
প্রসঙ্গত, গাজীপুরের তৎকালীন পুলিশ সুপার (বর্তমানে ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি) মাহফুজ নুরুজ্জামানের অনুরোধে তাবলীগ জামাত কর্তৃপক্ষ গত ২০১১ সাল থেকে দু’দফায় বিশ্ব ইজতেমার আয়োজন করে আসছে।
বিশ্ব ইজতেমায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং ইজতেমা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সহায়তা দিতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। ইজতেমায় এবার পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা বলয় গড়ে তুলবে পুলিশ। প্রতি স্তরের দায়িত্বে থাকবেন একজন করে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।
ইজতেমা ময়দানে সরেজমিনে দেখা যায়, ময়দানের বিভিন্ন প্রবেশপথসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে র্যাবের সিসি ক্যামেরা ও ওয়াচ টাওয়ারসহ চেকপোস্ট তৈরির কাজ প্রায় শেষের পথে। টঙ্গী-আশুলিয়া সড়কের সঙ্গে ইজতেমা ময়দানের সংযোগ স্থাপন করতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের সদস্যরা তুরাগ নদীতে আটটি ভাসমান সেতু স্থাপন করেছেন।
র্যাব-১ এর ডিআইডি কবির জানান, তারা এবার অর্ধশতাধিক সিসি ক্যামেরা বসাবেন। প্রথম দিন থেকেই তাদের ৩০ জন কন্ট্রোলার এগুলো পর্যবেক্ষণ করবেন। এছাড়া থাকছে দু’টি কন্ট্রোল রুম ও ৫০টির বেশি চেকপোস্ট। সেই সঙ্গে থাকছে র্যাবের পৃথক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা। নাশকতা প্রতিরোধে ইজতেমা ময়দান এলাকায় আকাশে র্যাবের হেলিকপ্টার টহল ও ময়দানে বোমাস্কোয়াডও মোতায়েন থাকবে।
জেলা পুলিশ সুপার অফিস সূত্রে জানা গেছে, ইজতেমার প্রথম দফায় প্রায় ১২ হাজার ও দ্বিতীয় দফায় প্রায় ১০ হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে।গোয়েন্দা টিমসহ বিভিন্ন টিমও প্রস্তুত রাখা হচ্ছে।
এমআর/কেএফ