
মঞ্চভীতি সবারই থাকে। মঞ্চে উঠে কিছু একটা করতে বা বলতে গিয়ে গলা শুকিয়ে কাঠ হওয়া, হৃদ-স্পন্দন বা ধুকপুকানি বেড়ে যাওয়া, হাতের তালু ঘামা, হাটু কাঁপার মতো পরিস্থিতিতে সবাইকেই কম-বেশি নাকাল হতে হয়। কিন্তু শেষমেশ এর হাত থেকে আর রেহাই পাওয়া যায় না।
অবশ্য এই মঞ্চভীতি কাটিয়ে উঠা নিয়ে নানা পরামর্শই শুনতে হয়। যেমন, পারফর্ম করার আগে গভীর শ্বাস নেওয়াটা ভালো বা একটু পায়চারী করাটা বেশ কাজের কিংবা নিদেনপক্ষে শান্ত থাকার ভান করাটা খুবই ফলদায়ক। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আমরাও এসব পরামর্শ বেশ মেনে চলি। কিন্তু নতুন এক গবেষণার ফলাফল বলছে, এই সব বহুল প্রচলিত মঞ্চভীতি-নাশক-পরামর্শ আদতে কোনো কাজের না, উল্টো ক্ষতিকর পারফর্মকারীর জন্য। তার চেয়ে বরং মঞ্চে উঠে উত্তেজিত স্নায়ুগুলোকে আরও উত্তেজিত করাটা কিম্বা ভয়ার্ত পরিস্থিতিতে আরও ভয় পাওয়াটা অধিকন্তু ফলপ্রদ। এতে মানুষ পরিস্থিতির প্রতি, কাজের প্রতি আরও বেশি মনোযোগী হয়ে উঠতে পারে। নতুন এক গবেষণার বরাত দিয়ে এই নতুন কথাগুলো জানিয়েছে হাফিংটন পোস্ট।
হারভার্ড বিজনেস স্কুলের ব্যবসা প্রশাসনের সহকারি প্রফেসর ডঃ অ্যালিসন উড ব্রুকার মঞ্চভীতি নিয়ে নতুন এ গবেষণা করেন। সম্প্রতি গবেষণার ফলাফল ‘জার্নাল অব এক্সপেরিমেন্টাল সাইকোলজিঃ জেনারেল’ নামক এক অনলাইন পেইজে প্রকাশিত হয়েছে।
ডঃ অ্যালিসন উড বলেন, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সম্ভাব্য ঝুঁকি নিয়ে উত্তেজিত হওয়াটা/ভীত হওয়াটা আদৌ ক্ষতিকর নয়। এতে মানুষ পরিস্থিতির প্রতি আরও মনোযোগী হয়ে উঠতে পারে। আর একটা পর্যায়ে স্নায়ুগুলো উত্তেজিত হতে হতে প্রশমিত হতে শুরু করে। সুতরাং মঞ্চে যত বেশি নিজেকে উত্তেজিত করা যাবে তত বেশি মনোযোগ বাড়বে কাজের প্রতি, পরিস্থিতির প্রতি।
স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটির নিউরোসায়েন্টিস্ট ডঃ ফিলিপ গোল্ডিন হাফিংটন পোস্টকে জানিয়েছেন, উদ্বেগ-উত্তেজনা-ভয় কাজের প্রতি মনোযোগ ফেরাতে সত্যি খুবই ফলপ্রদ।
তিনটি পর্যায়ে এই গবেষণা সম্পাদিত হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে ১৪০ জন, দ্বিতীয় পর্যায়ে ১৮৮ জন এবং তৃতীয় পর্যায়ে ১১৩ জন নারী-পুরুষের উপর এই জরিপ চালানো হয়।