
বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের লংমার্চ কর্মসূচি ঘিরে আবারও মানবিক বিপর্যয়ের স্বীকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ। বিরোধীদল ও সরকারের কর্মসূচি ও এন্টি কর্মসূচিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। এদিকে সম্ভাব্য যেকোনো ধরণের নাশকতা ঠেকাতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাড়তি সতর্কতা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আর তাতেই নিরাপত্তা সংকটে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
শুক্রবার দক্ষিণ অঞ্চলের সব জেলার সাথে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়ার পর বিকেল থেকে ঢাকা অভিমুখে সব ধরণের লঞ্চের চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে কর্তৃপক্ষ। এতে একদিকে ঘরমুখো মানুষ যেমন দুর্ভোগের স্বীকার হয়েছেন তেমনি কাজের সন্ধানে আসা মানুষগুলো আরও বেশি বিপর্যয়ের মুখে পড়েছেন।
মাদারিপুরের কালকীনি উপজেলার কুলসুম বলেন, বিরোধী দলের অবরোধ কর্মসূচির মধ্যেই অসুস্থ মায়ের জন্য বাড়ি যেতে হয় তাকে। মাকে সুস্থ করতে যাবতীয় চিকিৎসা খরচ বহন করে প্রায় খালি হাতেই শুক্রবার ঢাকায় আসেন তিনি। হাতে আছে আর মাত্র কয়েকটি টাকা যা দিয়ে হয়তো একবেলা খেতে পারবেন তিনি। কিন্তু গন্তব্য সাভারে যাওয়ার পরিবহন ব্যবস্থা বন্ধ থাকায় সদরঘাটের পন্টুনেই শীতের রাতযাপন করতে হবে তাকে। কান্নাজড়ানো কন্ঠে তিনি তার উৎকন্ঠার কথা বললেন, “কই ঘুমামু আর কি খামু? হ্যারা কর্মসূচি দেয়, হ্যারা তো আর আমাগো মত গারমেন্সে কাম করে না। আমাগো দুকখো কেউ বুজবোনা”।
একই সমস্যায় আছেন ঢাকা ত্যগী মানুষও। লঞ্চযোগে বাড়ি ফেরার উদ্দেশে সদরঘাট যাওয়ার পরে জানতে পারেন লঞ্চ চলাচল বন্ধ হওয়ার কথা। অন্যদিকে ফিরে আসার জন্য বাস চলাচলও বন্ধ। আছে শুধুমাত্র রিক্সা যার ভড়া বহনে অক্ষম তারা।
এরকম নানা সমস্যার সাথে আছে ৫৪ ধারার ভয়। অথচ তারা জানেন ৫৪ ধারা কি? জাতীয় রাজনীতির মারপ্যাচও তারা জানেন না। শুধুমাত্র দুমুঠো ভাত খেয়ে বেচে থাকার তাগিদেই তাদের ছুটেচলা। কিন্তু সরকার ও বিরোধী দলের টানাপোড়েনে তারা যেন বলির পাঠা।
এসএসআর