
রেকর্ড পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রার মজুত থাকা সত্ত্বেও চলতি অর্থবছরের শুরু থেকেই ডলার কিনে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক।চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে ২৩০ কোটি ডলার কিনেছে তারা। ডলারের বিপরীতে টাকার দাম স্থিতিশীল রাখতেই এই ডলার কেনা হয়েছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে। গত বছরও রেকর্ড ডলার কিনেছিল মুদ্রা বাজার ও ব্যাংকের এ নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্সে উচ্চ প্রবৃদ্ধির বিপরীতে আমদানি কমে যাওয়ায় দেশে ডলারের সরবরাহ অনেক বেশি। আর এ কারণে টাকার বিপরীতে ডলারেরর দাম কমে যাচ্ছে। ডলারের দাম কমে গেলে রপ্তানিকারকরা কিছু সমস্যায় পড়েন। তাই তাদেরকে নীতি সহায়তা দিতে বাজার থেকে ডলার কিনে দাম ধরে রাখার চেষ্টা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
তিনি বলেন, চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতায় আমদানির তুলনায় রপ্তানি কমে যাওয়া এবং উৎপাদনশীল খাতে রেমিটেন্সের ব্যবহার না হওয়ায় বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকের হাতে প্রচুর মার্কিন ডলার এখনও অলস পড়ে আছে।
এর ফলে যদি বাণিজ্যিক খাতগুলো থেকে মুদ্রা আমদানি না করা হয় তবে আগামি মাসগুলোতে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা মজুতের পরিমাণ আরও বেড়ে যাবে বলে আশংকা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
উল্লেখ, গত সপ্তাহে দেশে বৈদেশিক মুদ্রার মজুদের নতুন রেকর্ড হয়েছে। প্রথমবারের মত মজুদ ১৮ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে।
আন্তর্জাতিক নীতি অনুযায়ী,তিন মাসের আমদানি বিল পরিশোধ করার ক্ষেত্র যথেষ্ঠ পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ করা দরকার।
বাংলাদেশ ব্যাংক সুত্র জানায়,এই ১৮ বিলিয়ন ডলার ব্যবহার করে ছয় মাসের আমদানি বিলের চাহিদা পুরণ করতে সক্ষম হবে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ ব্যাংক সুত্রে জানা গেছে,গত বছরে বাংলাদেশী টাকার মুদ্রামান ছিল এক ডলারে ৭১ টাকা,২০১২ সাথে প্রথমার্থে এই মান কমে এক ডলারে ৮৪ টাকা হয়।এ অবস্থায় বাংলাদেশ ব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ বৃদ্ধি করতে শুরু করে।কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে আমদানি ধ্বস ও বাণিজ্যিক খাতের নিম্মগতি হওয়ায় ২০১২ সালের ডিসেম্বরে ডলারের মূল্যমান কমে যেতে শুরু করে।এই অর্থবছরে চারশ ৫৩ কোটি ডলার কেনার পর গত কয়েকমাস ধরে বাংলাদেশী টাকার মুদ্রামান এক ডলারে ৭৭.৭৫ টাকায় স্থিতিশীল রয়েছে বলেও জানান তিনি।