নৌবাহিনীতে চারটি যুদ্ধজাহাজ কমিশনিং করেছেন রাষ্ট্রপতি

  • Emad Buppy
  • December 23, 2013
  • Comments Off on নৌবাহিনীতে চারটি যুদ্ধজাহাজ কমিশনিং করেছেন রাষ্ট্রপতি
president

presidentচট্টগ্রাম নেভাল বার্থে বাংলাদেশ নৌ-বাহিনীর সর্ববৃহৎ যুদ্ধজাহাজ সমুদ্রজয়সহ খুলনা শিপইয়ার্ডে তৈরি তিনটি  যুদ্ধজাহাজের কমিশনিং করেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ।

সোমবার সকালে নেভাল বার্থে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে চারটি যুদ্ধজাহাজ কমিশনিং করার পাশাপাশি নেভাল একাডেমিতে ডাইরেক্ট এন্ট্রি অফিসার পদে নবীন কর্মকর্তাদের কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাষ্ট্রপতি বলেন, মিয়ানমারের সাথে ৩৮ বছরের সমুদ্র বিরোধের মামলা বাংলাদেশ জয়ী হয়েছে।  ২০১৪ সালে ভারতের সাথে সমুদ্র মামলা যে রায় হবে তাও বাংলাদেশ  জয়ী হবে বলে বিশ্বাস করি। মিয়ানমার সমুদ্রসীমা মামলা জয়ের পর বাংলাদেশ বর্ধিত বিশাল জলসীমার সর্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি বিস্তৃত সমুদ্রের মৎস্য ও খনিজসহ অন্যান্য প্রাকৃতিক সম্পদের সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার  বাংলাদেশ নৌ-বাহিনীতে  যোগ হলো চারটি যুদ্ধজাহাজ। যার মাধ্যে খুলনা শিপইয়ার্ডে নির্মিত  হয়েছে পেট্রোল ক্রাফট বানৌজা “অপরাজেয়”, “অদম্য” ও “অতন্দ্রা” নামে তিনটি জাহাজ । যা  বিশেষ করে বঙ্গপসাগর ও উপকূলীয় এলাকায় ডাকাতি বন্ধ, অবৈধ অস্ত্র আটক, মাদক ও মানব পাচার রোধসহ তেল-গ্যাস আনুসন্ধানের জন্য বরাদ্দকৃত ব্লকসমুহে অধিকতর নিরাপত্তা নিশ্চিত করে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

রাষ্ট্রপতি বলেন,  ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু অনেক সীমাবদ্ধ থাকা সত্ত্বেও নৌবাহিনীর ঘাঁটিসমূহ  একযোগে কমিশন করে  ভারত থেকে আমদানি করেন পেট্রোল ক্রাফট পদ্মা ও পলাশ নামে দুটি জাহাজ। সেদিনের তাঁর আন্তরিক প্রচেষ্টা ও সদূর প্রসারী চিন্তার বাস্তবায়নের ফলে সেদিনের সেই ছোট্ট নৌ বাহিনী আজকে এ মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে এসে পৌঁছেছে।  বর্তমান সরকার নৌবাহিনীকে কার্যকর বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা করা হয়েছে। যা ২০৩০ সালের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হবে।

তিনি আরও বলেন, ২০১১ সালে বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে সংযোজিত করা হয়েছে ইতালি থেকে ক্রয়কৃত দুটি মেরিটাইম হেলিকাপ্টার এবং এবছর জার্মনি থেকে ক্রয় করা হয় দুটি মেরিটাইম পেট্রোল এয়ার ক্রাফট। এ সরকারের আমলে হেলিকাপ্টার উদ্দয়নে সক্ষম দুটি করভেট সহ ৭টি জাহাজ কমিশন করা হয়েছে। আজ আরও চার টি জাহাজ সংযোজনের ফলে বাহিনীটি আরও শক্তিশালী, আধুনিকও সক্ষম ত্রিমাত্রিক নৌবাহিনীতে রুপান্তরের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে।

নৌবাহিনীকে আরও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে দুটি করভেট চীনে নির্মাণাধীণ আছে যা ২০১৫ সালে বাংলাদেশে সংযোজিত হবে। চিন থেকে আরও দুটি মিসাইল ফ্রিগেট আগামি জানুয়ারিতে বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে যুক্ত হতে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে দুটি পুরাতন ব্রিটিশ ফ্রিগেট রিপলেস করবে। এছাড়া সাবমেরিন ক্রয়ের প্রক্রিয়াও দ্রুত সম্পন্ন হচ্ছে । পটুয়াখালীর রাবনাবাদ এলাকায় নৌবাহিনীর সর্ববৃহৎ বানৌজা শের-ই- বাংলার কার্যপ্রক্রিয়া ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনের মাধ্যমে শুরু হয়েছে বলেও তিনি জানান।

এর আগে রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশ নেভাল একাডেমির নৌবাহিনীর ডাইরেক্ট এন্ট্রি অফিসার ২০১৩/বি এবং মিডশিপম্যান ২০১২/এ ব্যাচের শীতকালীন কুচকাওয়াজে উ্পস্থিত  থেকে সালাম গ্রহণ করেন। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ৩৪ জন প্যালেষ্টাইন, মালদ্বীপ ও শ্রীলংকার ১০সহ মোট ৪৪ জন মিডশিপম্যান এবং ১৫ জন ডাইরেক্ট এন্ট্রি অফিসারসহ সর্বমোট ৫৯জন নবীন কর্মকর্তা কমিশন লাভ করেন।

এ সময় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফ, নৌ-বাহিনীর প্রধান ভাইস এডমিরাল এম ফরিদ হাবিব এবং চট্টগ্রাম নৌ অঞ্চলের কমান্ডার রিয়ার এডমিরাল এম আখতার হাবীবসহ দেশি-বিদেশি কুটনীতিক এবং সামরিক ও বেসামরিক উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।