
চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার ধকল সামলাতে পোশাক শিল্পের জন্য বিশেষ প্রণোদনা চেয়েছে এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনস অব বাংলাদেশ (ইএবি)। এর মধ্যে রয়েছে উৎসে আয়কর কমানো,নগদ সহায়তার হার বাড়ানো,নগদ সহায়তার টাকা তিন মাসের বদলে এক মাস পর পর ছাড় করা।সব মিলিয়ে ২০ দফা সহায়তার প্রস্তাব করেছে ইএবি।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সঙ্গে সাক্ষাত করে এসব প্রস্তাব তুলে ধরেন ইএবির সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী।
সঙ্কটকালীন সময়ে পোশাক কারখানার শ্রমিক-কমচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধে সহায়তা দিতে ছয়শ কোটি টাকার আপদকালীন তহবিল গঠনের দাবি জানিয়েছে ইএবি।এছাড়া উৎসে আয় কর কমিয়ে দশমিক ২৫ শতাংশ নিধারণ,রিটেনশনকৃত ডলারের বিনিময়ে প্রতি ডলারে ৩ টাকা করে বাড়তি পরিশোধ,ঋণ শ্রেণীকরণের সময় সীমা ৩ মাসের পরিবতে ৬ মাস নিধারণ,হরতাল-অবরোধজনিত কারণে চট্টগ্রাম বন্দরে জমে যাওয়া পণ্যের উপর থেকে বাড়তি ভাড়া প্রত্যাহার,বিমানে পণ্য পরিবহণের ক্ষেত্রে বাড়তি ব্যয় পুষিয়ে নিতে বিশেষ সহায়তার কথা বলেছে সংগঠনটি।
তিনি অর্থসূচককে জানান, আমরা দুপুরে অর্থমন্ত্রীর কার্যালয়ে পোশাক শিল্পের বর্তমান অবস্থা জানিয়ে কিছু প্রস্তাবনা জমা দিয়েছি। এই শিল্পের অবস্থা বিবেচনা করে জরুরি ভিত্তিতে সরকারকে পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানিয়েছি।
তিনি আরও জানান, অর্থমন্ত্রী অন্যান্য রপ্তানিমুখী শিল্পের সঙ্গে পোশাকখাতের সমস্যাগুলোকে সামনে রেখে প্রস্তাবগুলো বিবেচনায় নিবেন বলে আমাদেরকে আশ্বাস্ত করেছেন।
দেশের রপ্তানিমুখী পোশাকশিল্প আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছে বলে উল্লেখ করেন ব্যবসায়ী নেতারা। হরতাল অবরোধে দেশের বড় এই শিল্পখাতে রপ্তানি আদেশ বাতিল, মুল্য ছাড়, বিমান খরচসহ নাশকতায় কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে বলে উল্লেখ করা হয়। তাছাড়া ব্যবসায়ীরা কয়েকগুন ভাড়া বেশি দিয়ে পণ্য রপ্তানি করছে বলে দাবি করা হয়। চলমান পরিস্থিতিতে উৎপাদন ১০ শতাংশ কমে রপ্তানি হ্রাস পেয়েছে। তাতে প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলেও প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়।
প্রস্তাবে তিন মাস অন্তর বিদ্যমান নগদ সহায়তা পরিশোধ করার পরিবর্তে এক মাস অন্তর পরিশোধের ব্যবস্থা করা, ঋণের শ্রেণী বিন্যাস দুই মাসের পরিবর্তে কমপক্ষে ৬ (ছয়) মাস পর করার বিধান ও প্রণয়ন করার দাবি জানানো হয়।
উদ্ভুত পরিস্থিতিতে ২০০৯-১০ অর্থবছরের মতো দশমিক ২৫ শতাংশ উৎসে কর পুনঃনির্ধারণ করা হলে তা শিল্পের জন্য অত্যন্ত সহায়ক হবে বলে মনে করা হয়।
চলমান পরিস্থিতির কারণে শিল্প পরিচালনা করতে অপারগ মালিকদের জন্য শিল্প থেকে বের হওয়ার নীতিমালা প্রনয়ন করার জন্য প্রস্তাবও করা হয়। তাছাড়া শ্রমিকদের বেতনাদি অন্তত ৪ মাস পরিশোধের জন্য সুদ মুক্তভাবে ব্যাংক, বীমাসহ অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সহায়তারও দাবি করা হয়।