‘অভিবাসীর অবদান, সমুন্নত দেশের মান’

migrationday২০১২-১৩ অর্থবছরে প্রবাসী বাংলাদেশিরা রেকর্ড ১৪ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলারের রেমিটেন্স দেশে পাঠিয়েছেন। দেশের অর্থনৈতিক ভিত্তি মজবুত করতে দূর দেশে পাড়ি জমাচ্ছেন দেশের লাখো মানুষ। জীবীকার সন্ধানে যারা বিভিন্ন দেশে গিয়েছেন,কষ্টার্জিত টাকা পাঠাচ্ছেন আজ তাদের শ্রদ্ধা জানানোর দিন। আজ ১৮ ডিসেম্বর, আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস। ‘অভিবাসীর অবদান, সমুন্নত দেশের মান’ এই প্রতিপাদ্য বিষয় নিয়ে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো  নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হচ্ছে।

 

১৯৯৭ সাল থেকে ফিলিপিনো এবং অন্যান্য এশীয় অভিবাসী সংগঠনগুলো এই দিনটিকে ‘আন্তর্জাতিক ঐক্য দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করে। এর ধারাবাহিকতায় মাইগ্র্যান্ট রাইটস ইন্টারন্যাশনাল, ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন অন মাইগ্র্যান্ট রাইটসসহ বিশ্বের অনেক সংগঠন অভিবাসীদের স্বার্থ রক্ষার্থে বৈশ্বিকভাবে প্রচারণা চালাতে থাকে। অবশেষে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ২০০০ সালের ৪ ডিসেম্বর দিনটি পালনের সিদ্ধান্ত নেয়।

বিশ্বজুড়ে বাংলাদেশের কয়েক লাখ অভিবাসী ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। তাদের কষ্টে-ঘামে অর্জিত আয়ে দেশের অর্থনীতির চাকা দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। তাদের অবদান মূল্যায়নের জন্যই প্রতিবছর দিবসটি সরকারিভাবে গুরুত্বের সঙ্গে পালন করা হয়।

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের ১৫৭টি দেশে বাংলাদেশের এক কোটির মতো বাংলাদেশি অভিবাসী রয়েছে। ১৯৭৬ সাল থেকে সৌদি আবর ও আমিরাতের জনশক্তি রপ্তানির মধ্যদিয়ে বাংলাদেশের এই খাতটির সূচনা হয়। বর্তমানে প্রতি বছর গড়ে প্রায় ছয় লাখ কর্মীর বিদেশে কর্মসংস্থান হচ্ছে।

এদিকে আজকের এই দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক পৃথক বানী দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ তার বাণীতে বলেন, ‘বাংলাদেশি কর্মীরা অভিবাসনের মাধ্যমে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে ব্যাপক অবদান রাখছেন। তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমের বিনিময়ে অর্জিত অর্থ দেশে প্রেরণ করে তারা দেশের অর্থনীতির গতি বেগবান করেছেন। এ দিনে তাদের অবদানের কথা আমরা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি।’

অভিবাসন ব্যবস্থাকে স্বচ্ছ ও গতিশীল করতে গত পাঁচ বছরে সরকারের নানামুখী উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেন, ‘প্রবাসী আয়ের দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তম। মালয়েশিয়া এবং দক্ষতা অনুযায়ী অন্যান্য দেশে গমনসহ নারীকর্মীদের বিদেশে গমনের জন্য তিন পর্যায়ে মোট ২০ লাখ কর্মীর রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে। আমরা প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেছি। এর ফলে অভিবাসীগণ সহজ শর্তে ঋণ গ্রহণ করতে পারছেন।’

বুধবার সকালে শোভাযাত্রার মাধ্যমে শুরু হয়েছে অভিবাসী দিবসের কর্মসূচি।

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আলোচনা সভা ও প্রবাসী কর্মীদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে শুভেচ্ছা বিনিময়ের মাধ্যমে অভিবাসন মেলারও আয়োজন করা হয়েছে।

এছাড়া বিভিন্ন বেসরকারি, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও আন্তর্জাতিক সংস্থা অভিবাসন বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।