
মধ্যবয়স্ক নারীদের মধ্যে প্রায় এক-চতুর্থাংশের ঘুমের সমস্যা রয়েছে। আর এই সমস্যার সঙ্গে জীবনমান, দীর্ঘস্থায়ী অসুখ এবং ওষুধের সম্পর্ক রয়েছে। সাম্প্রতিক এক গবেষণা থেকে এসব তথ্য জানা গেছে ।
ফিনল্যান্ডের টুর্কু বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত এই গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়েছেন ড. পাইভি পোলো। তিনি বলেছেন, ‘‘সাধারণত আমরা ধরে নেই রজোনিবৃত্তির কারণে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয় তাই রজোনিবৃত্তিই সব সমস্যার কারণ” ফলে চিকিৎসকরা এটি মাথায় রেখেই চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টা করে বলে মনে করেন পোলো। তিনি তাঁর গবেষণায়, ঘুমের সঙ্গে অন্যান্য জটিলতার সম্পর্ক খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছেন। সুত্র: রয়টার্স।
সাম্প্রতিক গবেষণায় তাই ঘুম সমস্যার অন্যান্য কারণের দিকে নজর দেওয়া হয়েছে। পোলো এবং তাঁর সহকর্মীরা তাদের গবেষণায় ৮৫০ জন মধ্যবয়সি নারীর সহায়তা নিয়েছেন। তাদের বয়স গড়ে ৪২ বছর। এই নারীদের মধ্যে এক-তৃতীয়াংশের ডায়াবেটিস, হৃদরোগের মতো দীর্ঘস্থায়ী অসুখ রয়েছে। আর ২৮ শতাংশ নারী নিয়মিত ওষুধ গ্রহণ করেন।
এই নারীরা প্রায়ই অভিযোগ করেন, রাতের বেলা তাদের ঘুম ভেঙে যায়। ষাট শতাংশের সপ্তাহে অন্তত একবার এই সমস্যা হয়। ষোল শতাংশ নারীর সহজে ঘুম আসে না আর বিশ শতাংশের খুব সকালেই ঘুম ভেঙে যায়। সপ্তাহে অন্তত একদিন এমন হয়।
সকালবেলা ঘুমভাব কাটে না ৪২ শতাংশ নারীর আর সারাদিন ঘুম ঘুম ভাব থেকে যায় ৩২ শতাংশের।
বলাবাহুল্য, ঘুমের সমস্যা যে-কোনো বয়সি মানুষেরই হতে পারে, তবে নারীদের মধ্যে এই সমস্যা একটু বেশি। মাসিক ঋতুচক্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত হরমোনের পরিবর্তন এবং রজোনিবৃত্তিকে এজন্য কিছুটা দায়ী করা যেতে পারে, বলছেন গবেষকরা। তবে তারা মনে করেন, মাঝেমাঝে মদ্যপানের সঙ্গে ভালো ঘুম এবং কর্মস্থলে ঘুমিয়ে না পরার সম্পর্ক রয়েছে।
ঘুমের সমস্যার সঙ্গে মেয়েদের ওজন এবং শারীরিক কর্মকাণ্ডের সম্পর্ক তেমন একটা খুঁজে পাননি গবেষকরা। আসলে গবেষণায় সহায়তাকারী নারীরা সবাই সাধারণ শারীরিক গঠনের অধিকারী ছিলেন। সম্ভবত সেকারণেই এই বিষয়টি উঠে আসেনি। তবে এর আগে পরিচালিত এক গবেষণায় স্থুলতার সঙ্গে নিদ্রাহীনতার সম্পর্ক খুঁজে পেয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা।
ড. পাইভি পোলো বলেন, ‘‘ঘুম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা আমাদের জীবনের এক-তৃতীয়াংশই ঘুমিয়ে কাটাই। আর ঘুমের সমস্যা কোনো রোগের পূর্বলক্ষণ হতে পারে। মানসিক অবস্থার কারণেও এই সমস্যা দেখা দিতে পারে৷ চিকিৎসকদের এসব বিষয় মাথায় রাখতে হবে।”
এসআর/সাকি