
নভেম্বরে ভারতে খাদ্যপণ্যের দাম গত বছরের তুলনায় ১৪.৭২ শতাংশ বেড়েছে। এ নিয়ে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকার আছে অস্বস্তিতে। সোমবার প্রকাশিত হবে পণ্যের পাইকারি দামে মূল্যবৃদ্ধির হার। সেই হারও যদি উর্ধ্বমুখী হয়, তবে ১৮ ডিসেম্বর ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক সুদের হার আবার বাড়াবে।
বৃহস্পতিবার কলকাতায় রিজার্ভ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকের পর সাংবাদিকদের কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম বলেন, খুচরা পণ্যে এই মূল্যবৃদ্ধি মোটেই স্বস্তিদায়ক নয়। এই মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে আমি বেশ চিন্তিত। কারণ, যখন একদিকে শিল্পোত্পাদনের হার কমছে, তখন অন্যদিকে মূল্যবৃদ্ধির হার বাড়ছে। এই পরিস্থিতি মোটেই স্বস্তিদায়ক নয়। এই অবস্থায় সঠিক ঋণনীতি তৈরি করা বেশ কঠিন।
তিনি আরও জানান, সোমবার পাইকারি পণ্যের মূল্যবৃদ্ধিসহ আরও কিছু তথ্য পরিসংখ্যান সামনে আসার আগে আমার পক্ষে ঋণনীতি নিয়ে কোনো মন্তব্য করা সম্ভব নয়। তবে, আমরা যতটা আশংকা করেছিলাম মূল্যবৃদ্ধির গতি তার থেকে মন্থর।
নভেম্বরে খুচরো পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি অক্টোবরের ১০.১৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ১১.২৪ শতাংশ হয়েছে। পাশাপাশি, অক্টোবরে শিল্পোত্পালদন ১.৮ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে। বৃদ্ধির হার উর্ধ্বমুখী করতে এবং মূল্যবৃদ্ধি আটকাতে ঋণনীতির পাশাপাশি সরকারের উচিত সঠিক আর্থিক নীতি প্রণয়ন করা। প্রতি মাসে ডিজেলের দাম বাড়ানোর যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তা স্বল্পমেয়াদে সাহায্য করলেও দীর্ঘমেয়াদে এর কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাবে।
তিন মাস পর অক্টোবরে দেশের শিল্পোত্পাদন আবার নিম্নমুখী হয়েছে। আগের মাসগুলির তুলনায় নভেম্বরে রপ্তানি কমেছে। শিল্পক্ষেত্রে উত্পাোদন কম হওয়ায় এই প্রভাব আগামি মাসে শিল্পোৎপাদন সূচকে প্রতিফলিত হবে। অক্টোবরে ম্যানুফ্যাকচারিং, খনি ও দীর্ঘমেয়াদি ভোগ্যপণ্যের উত্পাদন সংকুচিত হওয়ায় মুখ থুবড়ে পড়েছে শিল্পসূচক। আগামি সপ্তাহে রিজার্ভ ব্যাংক যদি সুদের হার বাড়াতে বাধ্য হয়, তাহলে ইউপিএ সরকারের অস্বস্তি আরও বাড়বে।
এদিকে, মূল্যবৃদ্ধি ও শিল্পোত্পাদনের কারণে অস্বস্তিতে পড়েছেন বিনিয়োগকারীরা।
প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা পর্ষদের প্রধান সি রঙ্গরাজন জানিয়েছেন, আগামি সপ্তাহে রিজার্ভ ব্যাংক সুদের হার অন্তত ০.২৫ শতাংশ বাড়াতে বাধ্য হবে। এই আশংকাতেই ইতোমধ্যে মুম্বাই শেয়ার বাজারে সূচক ও টাকার বিনিময় দর পড়তে শুরু করেছে।
তিনি আরও জানান, ডিসেম্বরে মূল্যবৃদ্ধি অনেকটাই নমনীয় থাকবে।
জানা গেছে, শাকসবজির বাজারে দাম কমতে শুরু করেছে। তাই জানুয়ারি মাসে প্রকাশিত পরিসংখ্যানে মূল্যবৃদ্ধির সূচক উল্টোদিকে ঘুরতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।