
টানা হরতাল-অবরোধের বাজারে ২০ টাকার কাঁচা মরিচ ৮০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। খুচরা ব্যবসায়ীরা পাইকারি বাজারে এর দাম বেশি বলে জানালেও পাইকারি বাজারে দেখা গেছে সম্পূর্ণ উল্টো চিত্র। খুচরা ব্যবসায়ীরা কাঁচা মরিচ বিক্রি করছে পাইকারি বাজারের চেয়ে তিন গুণ বেশি দামে ।
রাজধানীর সর্ব বৃহৎ কাঁচাবাজার যাত্রাবাড়ী ও মতিঝিল এজিবি কলোনী এবং শান্তিনগর বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পাইকারি বাজারে এক পাল্লা (৫ কেজি) কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১২০ টাকায়, যার প্রতি কেজির দাম পরে ২০ থেকে ২৪ টাকা।
অন্যদিকে খুচরা বাজারে ওই একই কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে।
পাইকারি ব্যবসায়ী শাহাদাত হোসেন অর্থসূচককে বলেন, আমরা হরতাল অবরোধের কারণে কাঁচামরিচ ও সবজির ন্যয্যমূল্য পাচ্ছি না। কাঁচা মরিচ বিক্রি করছি ২০ টাকা কেজি। কোনো কোনো সময় এর চেয়ে কম দামে বিক্রি হচ্ছে।
খুচরা ব্যবসায়ী মো. আবদুল বারেক বলেন, পাইকারি বাজার থেকে কিনে এনে গাড়ি ভাড়া, দোকান ভাড়া সব মিলিয়ে বিক্রি করতে হয়।
তিনি বলেন, পাইকারি বাজারে কাঁচামরিচের দাম বেশি তাই এর দামটা একটু বেশি।
ক্রেতারা বলেন, আমরা দেশের মানুষ ব্যবসায়ীদের কাছে জিম্মি। তারা যেভাবে বলে সেভাবে আমাদের কিনে খেতে হয়।
আমাদের দেখার মতো এ দেশে কেউ নেই। সবাই ব্যস্ত নিজেদের ক্ষমতা নিয়ে। তাই এ ব্যাপারে বলেকয়ে কোনো লাভ নেই বলেও তারা উল্লেখ করেন।
হরতাল-অবরোধে পরিবহন সংকটের কারণে সরবরাহ কমে যাওয়ায় এর দাম বেড়েছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
আজকের বাজার চিত্রঃ
কাঁচাবাজারঃ
কাঁচাবাজারে আজ দেখা গেছে, প্রতিকেজি শসা ৪০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৮০ টাকা, লম্বা বেগুন ৪০ টাকা, গোল বেগুন ৫০ টাকা, তাল বেগুন ৭০ টাকা, লাল শিম ৩০ টাক, সবুজ শিম ৩০ টাকা, ঝিঙ্গা ৮০ টাকা, মুলা ৩০ টাকা, আলু ২০ টাকা, নতুন আলু ৪০ টাকা, গাজর ৫০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ টাকা, পটল ৪০ টাকা, পেঁপে ২০ টাকা, কচুর লতি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, কচুর মুখি ৫০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, টমেটো ১২০ টাকা, কাঁচা টমেটো ৫০ টাকা, ওলকপি ৫০ টাকা, শালগম ৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এ ছাড়া প্রতিপিস ফুলকপি ৪০ টাকা, ব্রকলি (সবুজ ফুলকপি) ৬০ টাকা বাঁধাকপি ৩০ টাকা, মিষ্টিকুমড়া ৬০ থেকে ৯০ টাকা ও লাউ ৬০ টাকা, জালি কুমড়া ৪০ থেকে ৫০ টাকা পিস হিসেবে বিক্রি হচ্ছে এবং প্রতিহালি কাঁচকলা ২৫ টাকা ও লেবু ২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া, বাজারে লালশাক, কলমি শাক, লাউ শাক, পালং শাক, মুলা শাক, পুঁই শাক, ডাটা শাকসহ নানা ধরনের শাকের আটি ১০ থেকে ৩৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। পুদিনা পাতা ১০০ গ্রাম ৩০ টাকা, ধনেপাতা প্রতি ১০০ গ্রাম ১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
মুদি
মুদি দোকান ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিকেজি দেশি পুরাতন পেঁয়াজ ১২০ টাকা, নতুন পেঁয়াজ ৯০ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ ১০০ টাকা, চায়না বড় রসুন ৮৫ টাকা, দেশি রসুন ৮০ টাকা, একদানা রসুন ১২০ টাকা, চায়না আদা ১৮০ টাকা, ইন্দোনেশিয়ান আদা ১৫০ টাকা, শুকনা মরিচ ১৮০ টাকা, হলুদ ১২০ টাকা, হলুদের গুঁড়া ১৮০ টাকা, মরিচের গুঁড়া ২০০ টাকা, ধনিয়া ৮০ টাকা, আটা (প্যাকেট) ৪০ টাকা, ময়দা (প্যাকেট) ৫০ টাকা, দারুচিনি ৩০০ টাকা, এলাচি ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকা, জিরা ৩৫০ টাকা থেকে ৪৫০ টাকা, বেশন ৯০ টাকা, দেশি মশুর ডাল ১২৫ টাকা, ভারতীয় মশুর ডাল ৮০ টাকা, খেসারি ডাল ৪৫ টাকা, মুগ ডাল ১২০ টাকা, ছোলা ৫০ টাকা, অ্যাংকর ডাল ৪২ টাকা, মাসকলাই ১২০ টাকা, বুট ৫০ টাকা, খোলা চিনি টাকা, প্যাকেট চিনি ৫৪ টাকা ও প্রতি লিটার সয়াবিন খোলা ১১৫ টাকা ও বোতলজাত সয়াবিন ১২৫ টাকা হিসেবে বিক্রি হচ্ছে।
চাল
আজ চালের বাজারে প্রতিকেজি নাজিরশাইল ৫৮ থেকে ৬০ টাকা, মিনিকেট ৪৮ থেকে ৫০ টাকা, লতা আটাশ ৩৮ থেকে ৪০ টাকা, মোটা চাল ৪২ টাকায়, জিরা নাজির ৫৫ টাকা, আটাশ ৪২ টাকা, পাইজাম ৪০ টাকা, চিনি গুড়া ১১০ টাকা, পারিজা ৩৮ টাকা, বিআর-২৮ ৪০ থেকে ৪৩ টাকা, বিআর-২৯ ৪২ টাকা, হাসকি ৪০ টাকা, স্বর্ণা ৩৬ টাকা থেকে ৩৮ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
ডিম
আজকে বাজারে প্রতি হালি লেয়ার মুরগির লাল ও সাদা ডিম ২৮ টাকা, হাঁসের ডিম ৪০ টাকা, পাকিস্তানি মুরগির ডিম ৪০ টাকা, দেশি মুরগির ডিম ৪০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
মাছঃ
মাছের বাজারে আজ ৮০০ থেকে ৯০০ গ্রাম ওজনের বেশি প্রতিহালি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫০০ টাকা। এক কেজি ওজনের বেশি ইলিশের পিস ৭০০ টাকা ও প্রতিকেজি জাটকা ৩২০ টাকা, চন্দনা ইলিশ ১৫০ টাকা, কাতল মাছ ২৫০ টাকা, রুই মাছ ২৮০ টাকা, তেলাপিয়া ১৪০ টাক, চায়না পুটি ১২০ টাকা, পাঙ্গাস ১২০ টাকা, চিংড়ি (বড়) ১ হাজার ২০০ টাকা, চাষের কৈ ২৫০ টাকা, দেশি কৈ ৫০০ টাকা, টাকি ১৪০ টাকা, সিলভার কার্প ১১০ টাকা, শোল মাছ ৬৫০, মলাঢেলা ২০০ টাকা, বাইলা মাছ ৬৫০ টাকা, কাচকি মাছ ২৫০ টাকা, সুরসা মাছ ১৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
শুটকি মাছঃ
শুটকি মাছ প্রতি ১০০ গ্রাম চিংড়ি শুটকি মানভেদে ৩০ টাকা থেকে ৭০ টাকা, টাকি ৬০ টাকা, কাসকি ৬০ টাকা, লইট্যা শুটকি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, বাইম মাছের শুটকি ৮০ টাকা, চাপিলা শুটকি ৬০ টাকা, পুটি মাছের শুটকি ৬০ টাকা, নলা মাছের শুটকি ৬০ টাকা, চান্দা মাছের শুটকি ৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি কেজি ইলিশ মাছের শুটকি ৭০০ টাকা ও কাইলা শুটকি ৬০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
মাংসঃ
মাংসের বাজারে গরুর মাংস ২৮০ টাকা ও খাসি ৪৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এক কেজি ওজনের প্রতিটি দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩৫০ টাকা, ১৪ ছটাক ওজনের মুরগি ২৮০ টাকা, ব্রয়লার মুরগি কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা থেকে ১১৫ টাকা, লেয়ার মুরগি ১৪০ টাকা, হাঁস ৩০০ টাকা, ভেড়া ও ছাগীর মাংস ৪৫০ টাকা এবং কবুতরের বাচ্চা ২৫০ টাকা জোড়া হিসেবে বিক্রি হচ্ছে।
ফলঃ
আজ ফলের বাজারে আপেল ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা, মালটা ১৫০ টাকা, আঙুর ৪৫০ টাকাও প্রতি ডজন কমলা ২০০ থেকে ২২০ টাকা, বেদানা ২৫০ টাকা, পেয়ারা ১৫০ টাকা, আমড়া ১২০ টাকা, আমলকি ১৫০ টাকা, ছবেদা ৮০ টাকা ও জলপাই ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে
এ ছাড়া প্রতিহালি সাগর কলা ২৫ টাকা, নেপালি কলা ১৫ টাকা, শবরী কলা ২৫ টাকা, চাপা কলা ১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
প্রতিপিস জাম্বুরা ৮০ টাকা থেকে ১২০ টাকা, বেল ৮০ থেকে ১৫০ টাকা, আনারস প্রতিপিস ৫০ থেকে ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এসএস/এআর