ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সরাইল উপজেলার দেওড়া গ্রামের মো. নজরুল ইসলাম টমেটো চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছে। ধান চাষে উৎপাদন খরচ মিটিয়ে কোনও লাভ না থাকায় তিনি গত ইরি- বোরো মৌসুমে তার ৬০ শতাংশ তিনটি ধানের জমিতে ধান চাষ না করে টমেটো চাষ করেন।
টমেটো চাষের শুরুতে প্রতিবেশী অনেক কৃষকই তাকে নিয়ে ঠাট্টা- উপহাস করেছে। কিন্তু নজরুল মনোবল না হারিয়ে দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে টমেটো চাষে আরও মনোনিবেশ করেন।অর্থ বিনিয়োগের পাশাপাশি অনেক শ্রম, ঘাম দিয়ে জমির পরিচর্যা করেন । এতে করে তিনি তার জমিতে পেয়েছেন টমেটোর বাম্পার ফলন।
সরাইলের দেওড়া গ্রামের পশ্চিম পাড়ায় নজরুলের টমেটো জমিতে গিয়ে দেখা যায় সবুজের সমারোহ। এর মধ্যে গাছে গাছে ঝুলে আছে তরতাজা অসংখ্য টমেটো। জমিতে ২-৩ ফুট লম্বা গাছের ডালপালায় লতার মতো ছড়িয়ে আছে টমেটো । প্রতিটি ডালে লাল আর সবুজ রং টমেটো, যা সহজেই সকলের নজর কাড়ার মত।
নজরুল ইসলাম জানান, যে জমিতে টমেটো চাষ করেছি, তার চারপাশে অন্য জমিতে সবাই ধান চাষ করে। ধানের পরিবর্তে টমেটোর চারা রোপন করায় প্রথম প্রথম অনেকেই আমাকে নিয়ে হাসি- ঠাট্টা করে কিন্তু এখন সফলতা দেখে অন্যরাও এই চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছে। তিনি বলেন, ৬০ শতাংশ জমিতে টমেটো চাষ করতে খরচ হয়েছে প্রায় অর্ধ লক্ষ টাকা। সব খরচ মিটিয়ে দেড় থেকে দুই লাখ টাকার মত লাভ হবে বলে তিনি আশাবাদী।
টমেটো চাষের সমস্যার কথা জানতে চাইলে নজরুল ইসলাম বলেন, টমেটোর গাছে মাঝে মাঝে পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা,পেতে কীটনাশক স্প্রে করতে হয়। বাজারে ভেজাল কীটনাশক থাকায় মাঝে মাঝে ক্ষতির শিকার হতে হয়।উৎপাদন খরচ কমাতে কীটনাশকের মূল্য হ্রাস , ভেজাল রোধ ও চাষাবাদের জন্য সহজ শর্তে কৃষি ঋণ প্রাপ্তির ব্যবস্থা করার দাবি জানান।
এদিকে নজুরুলের সফলতা দেখে এলকার যুবকদের মাঝে সবজি চাষে আগ্রহ বেড়েছে। স্থানীয় যুবক আকিজ উদ্দিন বলেন, নজরুল ইসলামের টমেটো চাষ এবং সফলতা দেখে অনেকেই অণুপ্রাণিত হচ্ছে।
এ ব্যাপারে কৃষি কর্মকর্তা বদরুল আলম জানান, সবজি চাষাবাদ এখন লাভজনক। নজরুল ইসলাম যেভাবে সফল হয়েছে তা অনন্য দৃস্টান্ত।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কৃষি কর্মকর্তা বলাই চন্দ্র সাহা জানান, চলতি মৌসুমে জেলায় ৫শ থেকে ৬শ হেক্টর জমিতে টমেটো চাষ করা হয়েছে। কৃষি অফিস সব সময় টমেটো চাষিদের পরামর্শ দিয়ে আসছে।