
মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী আব্দুল কাদের মোল্লার ফাঁসির পর বাংলাদেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর হামলার আশঙ্কা করছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল নামে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা। বৃহস্পতিবার রাতে এক বিবৃতিতে এ আশঙ্কা প্রকাশ করা হয় বলে জানা গেছে।
বিবৃতিতে যুক্তরাজ্যভিত্তিক এই মানবাধিকার সংস্থাটি কাদের মোল্লার ফাঁসিকে উল্লেখ করেছে মানবাধিকারের জন্য ‘অবমাননাকর’ একটি ঘটনা হিসেবে।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক অ্যামন্যাস্টির বাংলাদেশ অঞ্চলের গবেষক আব্বাস ফায়েজ বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে বলেন, কাদের মোল্লার সাজা এভাবে কার্যকর করা কোনোভাবেই উচিত হয় নি। মৃত্যুদণ্ড মানবাধিকার পরিপন্থী। মানবাধিকার লঙ্ঘনের শাস্তি আরেকটি মানবাধিকার লঙ্ঘনের মধ্য দিয়ে হতে পারে না।
বৃহস্পতিবার রাত ১০টা ১ মিনিটে সব আইনি বাধা কাটিয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত জামায়াত নেতা কাদের মোল্লার ফাঁসি কর্যকর করা হয়েছিল।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে কাদের মোল্লাকে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে গত ৫ ফেব্রুয়ারি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছিল। শাস্তি বাড়াতে উচ্চ আদালতে প্রসিকিউশনের এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৭ সেপ্টেম্বর আপিল বিভাগ তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়।
গতকাল অ্যামন্যাস্টির প্রকাশিত বিবৃতিটিতে বলা হয়,
‘নির্বাচনপূর্ব রাজনৈতিক মত বিরোধে রাজপথে টানা বিক্ষোভের কারণে বাংলাদেশ এক সঙ্কটের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে। এর মধ্যে মোল্লার ফাঁসি সহিংসতাকে আরও উস্কে দেবে, যার শিকার হতে পারে বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়।
ফায়েজ বলেন, এই অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে সংখ্যালঘু হিন্দুরা নিপীড়্ন ও হামলার শিকার হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের একজন সাক্ষীরা নিহত হওয়ার বিষয়টিও তিনি মনে করিয়ে দেন।
ট্রাইব্যুনালের আগের রায়গুলোর পর বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনা স্মরণ করে বিবৃতিতে বলা হয়, এখনো তারা ঝুঁকিতে। তাই ঝুঁকিতে থাকা মানুষের নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষকে দিতে হবে। বিশেষ করে, হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিতে বেশি মনোযোগ দিতে হবে। কেননা এর আগে অনেক হিন্দু বাড়ি ঘরে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।