সিনেমা বাস্তব হলো জীবনে !

Shawshank-Redemption3১৯৯৪ সালে নির্মিত আমেরিকান ড্রামা ফিল্ম শাওশাঙ্ক র‌্যাডেম্শন কবে দেখেছিলেন তা এখন আর তার মনে নেই। তবে ভুলতে পারেননি এখনও ফিল্মের গল্পটা। যখন মুভিটা দেখেছিলেন তখন হয়তো ঘূণাক্ষরেও ভাবেননি ক্যারেন পেরিন, এই গল্পের অনুপ্রেরণাই এক শ্বাসরুদ্ধকর মৃত্যু পরিস্থিতির হাত থেকে তাকে রক্ষা করবে একদিন। না ভাবলেও বাস্তবে কিন্তু হলো সেটাই, আতংকিত হয়ে মরে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি থেকে এই মুভির অনুপ্রেরণাই এই মার্কিন নাগরিককে বাঁচিয়ে দিয়েছে কাল।সূত্র –এবিসি নিউজ।

পুরো কাহিনীটা শুনুন তার ভাষ্যে, “ঘটনার শুরু মূলত শুক্রবার রাত ১০ টায়। পরের দিন অফিস বন্ধ, কিছু বাড়তি কাজের সূত্রে আটকা পড়েছিলাম অফিসে। তখন অফিসে আর কেউ ছিলো না । ব্যাপারটা খেয়াল হতেই হাতের কাজগুলো শেষ করে ১০-১৫ মিনিটের মাথায় ফ্রেশ হওয়ার জন্য প্রবেশ করি বাথরুমে। হাত-মুখ ধুয়ে বেরুতে যাবো যখন তখনই পড়ি বিপদে। বাথরুমের দরজা খুলতে গিয়ে দেখি তা বাহির থেকে লক হয়ে আছে।

প্রথমে বিশ্বাসই হচ্ছিলো না ঘটনাটা। তাই আবার ভালো করে হাত ধুয়ে এসে দরজার হ্যান্ডল ধরে কিছুক্ষণ টানাটানি করি, কিন্তু দরজা তো আর খুলে না। পাগল হয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা তখন। ততক্ষণে আতংকে আমার শরীর কাঁপতে শুরু করেছে।

এরপর সেলফোন ছাড়া পুরো আট ঘণ্টা আমি সেখানে কাটাই। এমনটা হতে পারে আমি তা ভাবতেই পারছিলাম না। চিৎকার-চেঁচামেচিঁতে কোন কাজ না হওয়ায় আমি গলা ফাটিয়ে কান্না শুরু করি। একসময় সহায়হীন হয়ে হাত-পা ছুঁড়তে থাকি, কিন্তু তাতেও কি আর কোনো কাজ হয়।”

তিনি বলে চলেন, “হঠাৎ মনে হলো যদি টয়লেট পেপার বাহিরে ছুঁড়ে মারা যায় তাতে হয়তো তা কারো নজরে আসতে পারে। করলামও তাই, কিন্তু অফিসে কেউ না থাকায় এমন ভাবনাতে কোনো কাজ হয়নি। তখনই মাথায় আসে শাওশাঙ্ক র‌্যাডেম্পশন মুভির গল্পটা। গল্পটা মনে আসাতেই বুঝতে পারলাম, কোনোভাবেই উত্তেজিত হওয়া যাবে না, ঠান্ডা মাথায় কিছু করতে হবে।

ভাবনা মতো একটা চেয়ার টেনে বাথরুমের সিলিং পর্যন্ত পৌঁছাই। সেখানে একটা তিন ফুট লম্বা রড খুঁজে পাই। আমার একমাত্র উদ্ধার অভিযান সরঞ্জাম। এই রড দিয়ে অনবরত দরজায় আঘাত করতে থাকি। দুই ঘণ্টার চেষ্টায় আমি দরজায় বড়ো-সড়ো একটা গর্ত করতে সক্ষম হই। এরপর হ্যান্ডলের নাগাল পেতেই দরজা খুলে ফেলি। ফোন হাতে পেয়ে আর বাসা পর্যন্ত পৌঁছুনোর ক্ষেত্রে সমস্যা হয়নি।”

পেরিন সবশেষে বলেন, যদি মরগান ফ্রিম্যান ও টিম রব্বিনসের মুভিটার চিন্তা মাথায় না আসতো, তবে আমি হয়তো মরেই যেতাম।