খাদ্য নিরাপত্তা ইস্যুতে ছাড় দেবে না ভারত: আনন্দ শর্মা

ananad-sharma-paraবিশ্ববাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) দর কষাকষি প্রক্রিয়ায় খাদ্য নিরাপত্তা ইস্যুতে কোনো ছাড় দেবে না ভারত। দেশটি বলেছে, তারা একা নয়। এ ইস্যুতে তাদের সঙ্গে রয়েছে বিশ্বের প্রায় সব দরিদ্র ও স্বল্পোন্নত দেশ। বিশ্বের মোট জনসংখ্যার দুই-তৃতীয়াংশ এসব দেশে বাস করে।

ইন্দোনেশিয়ার পর্যটন নগরী বালি দ্বীপে অনুষ্ঠিত ডব্লিউটিও’র নবম মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনের তৃতীয় দিনে (বৃহস্পতিবার) এক সংবাদ সম্মেলনে এ অবস্থানের কথা জানান ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রী আনন্দ শর্মা।

গত মঙ্গলবার এই সম্মেলন শুরু হয়েছে, কাল শুক্রবার চারদিনের এ সম্মেলন শেষ হবে।

সংবাদ সম্মেলনে আনন্দ শর্মা বলেন, ১২০ কোটি মানুষের দেশ ভারত ৭০ কোটি দরিদ্র মানুষকে তাদের ন্যূনতম খাদ্য চাহিদা পূরণে বিশেষ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। এটি তার দেশের নাগরিকদের আইনসঙ্গত অধিকার। এই ইস্যুতে কোনো আপসের সুযোগ নেই।

তিনি বলেন, কৃষি পণ্যের আন্তর্জাতিক বাজারকে বিকৃত করে রেখেছে উন্নত দেশগুলো। ভর্তুকী দেওয়ার মাধ্যমে তারা বাজার মূল্যকে প্রভাবিত করছে। ভর্তুকীর ক্ষেত্রে তারা কৃষি পণ্যের ২৯ বছর আগের মূল্যকে ভিত্তি মূল্য ধরছে। এটি দরিদ্র ও স্বল্পোন্নত দেশের কৃষকের স্বার্থের পরিপন্থী। তাই এ বাজার ব্যবস্থা ও ভর্তুকী পদ্ধতির সংস্কার জরুরি।

প্রস্তাবিত বাণিজ্য সহজীকরণ (ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন) প্রস্তাবও তার দেশের কাছে গ্রহণযোগ্য নয় বলে স্রেফ জানিয়ে দেন আনন্দ শর্মা। চলমান মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে আলোচনার জন্য এ প্রস্তাব আনা হয়েছে। ভারতসহ কিছু প্রভাবশালী দেশ এ প্রস্তাব পর্যালোচনা করে নতুন প্রস্তাবের দাবি জানিয়েছে। তাদের অভিযোগ, এ প্রস্তাবনা উন্নত দেশের পক্ষে যায়। দরিদ্র দেশগুলোর মানুষের স্বার্থ সংরক্ষিত হচ্ছে না, তাতে ভারতের এ একগুঁয়ে অবস্থানের কারণে বালি সম্মেলন ব্যর্থ হতে পারে-উন্নত দেশগুলোর এমন অভিযোগকে বাস্তবতাহীন বলে উড়িয়ে দেন আনন্দ শর্মা। তিনি পাল্টা অভিযোগ করেন, স্বল্পোন্নত দেশগুলোর দরিদ্র মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবির বিরোধিতা দুঃখজনক।

তিনি বলেন, উন্নত দেশগুলো দারিদ্র্য বিমোচন ও বিশ্ববাসীর জীবন মান উন্নয়নে সহস্রাব্দের লক্ষ্যমাত্রা বা এমডিজি ঘোষণায় অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে। কিন্তু তারাই এখন দরিদ্র মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা ইস্যুর বিরোধিতা করছে। এটা চরম স্ববিরোধিতা। উন্নত দেশগুলোর এ অবস্থান এমডিজির সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

মার্কিন এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রী বলেন, মন্দ চুক্তি হওয়ার চেয়ে, কোনো চুক্তি না হওয়া ভালো। তিনি বলেন, ভারত বালি সম্মেলনের সাফল্য চায়। এ সম্মেলনের প্রস্তাবনাগুলো গৃহীত হোক-তাও চায় তারা। কিন্তু এসব হতে হবে ন্যয্য, যুক্তিসঙ্গত ও ভারসাম্যপূর্ণ।

আনন্দ শর্মা অভিযোগ করেন, উন্নত দেশগুলোর ভর্তুকীর কারণে দরিদ্র দেশগুলোর কৃষকরা উৎপাদিত পণ্যের ন্যয্য মূল্য পায় না।

এআর