মার্চেন্ট ব্যাংকের সঞ্চিতি সংরক্ষণে সময় বাড়লো এক বছর

bsec-logo

bsec-logoপুঁজিবাজারে বিনিয়োগ থেকে সম্ভাব্য ক্ষতির বিপরীতে সঞ্চিতি (প্রভিশন) সংরক্ষণে আরও এক বছর সময় বাড়িয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি)। আজ মঙ্গলবার কমিশনের নিয়মিত ৫০১তম সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

 

বিএসইসি সূত্রে জানা যায়, চলতি ডিসেম্বরে সঞ্চিতি সংরক্ষণের সময় শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।

এ সিদ্ধান্তের ফলে আগামি বছরের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট চারটি প্রান্তিকে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ থেকে সম্ভাব্য ক্ষতির বিপরীতে সঞ্চিতি সংরক্ষণের সময় পেল মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো। একই সঙ্গে গ্রাহকের অনুকূলে মার্জিন ঋণের ক্ষেত্রে মার্চেন্ট ব্যাংকের যে ক্ষতি হয়েছে, তার জন্যও একই ধরনের প্রভিশনিং সুবিধা পাওয়া যাবে। স্টক এক্সচেঞ্জের সদস্য প্রতিষ্ঠান স্টক ব্রোকার ও ডিলাররাও একই সুবিধা পাবে।

মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে চলতি বছরের ২৯ জানুয়ারিতে মার্চেন্ট ব্যাংকের নিজস্ব পোর্টফোলিওতে ধারণ করা শেয়ার থেকে সম্ভাব্য ক্ষতির বিপরীতে সঞ্চিতি পাঁচ ধাপে সংরক্ষণের সুবিধা দেয় বিএসইসি। পরে ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ফেব্রুয়ারিতে স্টক ব্রোকার ও ডিলাররা একই সুবিধা পায়। এতে ২০১২ সালে মার্চেন্ট ব্যাংক, স্টক ব্রোকার ও স্টক ডিলারদের নিজস্ব পোর্টফোলিওতে ধারণ করা শেয়ারে সম্ভাব্য ক্ষতির বিপরীতে সঞ্চিতি সংরক্ষণের জন্য এ সুবিধা দেওয়া হয়। ওই সময় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ-সংক্রান্ত একটি সিদ্ধান্ত পর্যালোচনা করে প্রতিষ্ঠানগুলোকে এ সুবিধা দেয় বিএসইসি।

গত ২৯ জানুয়ারিতে দেয়া বিএসইসির নির্দেশনা অনুযায়ী, পুঁজিবাজারের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে মার্চেন্ট ব্যাংক, স্টক ব্রোকার ও স্টক ডিলারদের নিজস্ব পোর্টফোলিওতে ধারণ করা শেয়ারের পুনর্মূল্যায়ন জনিত ক্ষতির বিপরীতে যে সঞ্চিতি সংরক্ষণ করতে হয়, তা পাঁচ ধাপে পূরণের সুবিধা দেয়া হয়। এক্ষেত্রে ২০১২ সালের চতুর্থ প্রান্তিক থেকে ২০১৩ সালের চতুর্থ প্রান্তিক পর্যন্ত মোট পাঁচ প্রান্তিকে সমান হারে (২০ শতাংশ) সঞ্চিতি সংরক্ষণ করার সুযোগ দেয়া হয়েছিল। এ সুবিধা শুধু ২০১২ সালের সমাপ্ত হিসাব বছরে মার্চেন্ট ব্যাংকের নিজস্ব পোর্টফোলিওতে থাকা শেয়ারে সম্ভাব্য ক্ষতির সঞ্চিতির জন্য প্রযোজ্য ছিল। তবে বাজার পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানই নির্দেশনা অনুযায়ী সঞ্চিতি সংরক্ষণে ব্যর্থ হয়েছে। মার্জিন ঋণ সংকটের কারণে চলতি বছরও ঋণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর বড় ধরনের লোকসানে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ কারণে আবারও সঞ্চিতি সংরক্ষণের জন্য সময় বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।

প্রসঙ্গত, মার্জিন ঋণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান মার্চেন্ট ব্যাংক ও স্টক ব্রোকারদের গ্রাহকের অনুকূলে বণ্টনকৃত মার্জিন ঋণের মাধ্যমে ক্রয়কৃত শেয়ারের পুনর্মূল্যায়ন জনিত অনাদায়কৃত ক্ষতির বিপরীতে রক্ষিতব্য সঞ্চিতি ২০১২ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০১৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত একইভাবে সংরক্ষণের ঐচ্ছিক সুবিধা দেয়া হয়।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে দেশের সব বাণিজ্যিক ব্যাংক ও ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ থেকে সম্ভাব্য ক্ষতির বিপরীতে ধাপে ধাপে সঞ্চিতি সংরক্ষণের সুবিধা দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এজন্য ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে নগদ লভ্যাংশের পরিবর্তে বোনাস শেয়ার ইস্যুর বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়। মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রে সঞ্চিতি সংরক্ষণের সুবিধার বিপরীতে একই বাধ্যবাধকতা আরোপ করেছে বিএসইসি।

 

জিইউ