
বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) নবম মন্ত্রী পর্যাযের সম্মেলন ইন্দোনেশিয়ার বালি শহরে মঙ্গলবার শুরু হয়েছে। চারদিনের এই সম্মেলন চলবে ৬ ডিসেম্বর, শুক্রবার পর্যন্ত। এ সম্মলনকে ঘিরে সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে এবারই সবচেয়ে কম আশাবাদ সদস্য দেশগুলোর মধ্যে।কারণ রাজনৈতিক মত ভিন্নতায় সম্মলেনর আগে কোনো খসড়াই প্রণয়ন করা যায় নি।
সম্মেলনের আগে খসড়া প্রণয়ন এবং তার উপর মূল আলোচনা কেন্দ্রীভূত রাখাই ছিল এতদিনের রীতি। তারপরও সম্মেলন নিয়ে আশাবাদের কথা শুনিয়েছেন সংস্থার মহাপরিচালক রবার্তো আজাভেদো।
রবার্তো আজাভেদো বলেছেন, বিশ্ব বাণিজ্যকে গতিশীল করতে সবাই ছাড় দিয়ে হলেও সমঝোতায় আসার গুরুত্ব উপলব্ধি করবে।প্রথম দিনের বিভিন্ন সেশন শেষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মলনে ডব্লিউটিও’র মহাপরিচালক রবার্তো আজাভেদো উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোকে সমঝোতায় আসার তাগিদ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, বালি প্যাকেজ ব্যর্থ হলে বিশ্ব বাণিজ্য গতি হারাবে।
পর্যটন শহর বালির নুসা দুয়া আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টারে (বিএনডিসিসি) চলমান এই সম্মেলন উদ্বোধন করেন ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট ড.সুসিলো বামবাঙ্গ। তিনি সবাইকে একটি সমঝোতায় আসার আহ্বান জানান।
সুসিলো বামবা বলেন, ডব্লিউটিও-র সদস্য দেশগুলোর সামনে নতুন সুযোগ এসেছে। অসমাপ্ত ও প্রলম্বিত বৈশ্বিক বাণিজ্য আলোচনাকে একটি পরিণতির দিকে নিয়ে যাওয়ার।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইন্দোনেশিয়ার বাণিজ্যমন্ত্রী ও সম্মেলনের চেয়ারম্যান গিতা বীরজওয়ান ও ডব্লিউটিওর মহাপরিচালক রবার্তো আজেভেদো ।
গিতা বীরজওয়ান তার বক্তব্যে আশা প্রকাশ করেন, বিশ্ব নেতারা সম্মলেনে তাদের রাজনতৈকি সদচ্ছিা প্রকাশ করবেন। আর এটি সম্ভব হলেই সম্মেলন কাঙ্খিত সাফল্য পাবে। নতুন সম্ভাবনার সঞ্চার হবে বিশ্ব অর্থনীতিতে। তিনি সব পক্ষকে ছাড় দিয়ে হলেও বালি প্যাকেজ গ্রহণে সমঝোতায় আশার তাগিদ দেন।
উল্লেখ, বালি প্যাকজে ৪ টি ইস্যু রয়েছে। এগুলো হচ্ছে- শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত বাজার সুবিধা, সেবা খাতের বাণিজ্য এলডিসির জন্য ছাড়, রুলস অব অরিজিন বা রপ্তানি পণ্যের কাঁচামালের উৎস সম্পর্কিত র্শত শিথিল করা এবং তুলা ইস্যু।”
ডব্লিউটিও’র সম্মেলনে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতা বাণিজ্য সচিব মাহবুব আহমেদ বলেন, সব পণ্যে কোটা ও শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা নিশ্চিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সদিচ্ছা জরুরী। দেশটি আফ্রিকার দেশগুলোকে এ সুবিধা দিলেও তা ডব্লিউটিও’র আওতায় দিচ্ছে না। ফলে বাংলাদেশসহ অন্যান্য স্বল্পোন্নত দেশের সব পণ্য কোটামুক্ত সুবিধা পাওয়া নিশ্চিত হচ্ছে না।
বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে ডব্লিউটিওর মহাপরিচালক রবার্তো আজেভেদো সবাইেক হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেন, বালি প্যাকেজে সমঝোতা হলে সবাই লাভবান হবে। অন্যদিকে এটি ব্যর্থ হলে সবার জন্য দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতির কারণ হবে। বিশ্ব বাণিজ্যে গতি সঞ্চার, কর্মসংস্থান তৈরি, দারিদ্র বিমোচন সবই এতে ব্যাহত হবে।
তিনি বলেন, সমঝোতার পথে একমাত্র বাধা রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব। এ মত পার্থক্য দূর করা গেলে বালি প্যাকেজকে এগিয়ে নেওয়া দুরুহ কিছু হবে না।