
হেলালের সবচেয়ে বড় শক্তি তার উদ্যম ও পরিশ্রম। নতুন কিছু করতে পছন্দ করে সে। সবাই যা করে তার চেয়ে ব্যতিক্রম কিছু করার চিন্তা করে সে। আর এ থেকেই নিজের জমিতে আদা ফলানোর উদ্যোগ নেয় হেলাল। আর অর্থকরী এ ফসল বদলে দিয়েছে বগুড়ার মকামতলার গণেশপুর গ্রামের হেলালের জীবনকে।
হেলাল প্রথমে ছোট আকারে এক বিঘা জমিতে শুরু করে আদা চাষ। পরে জানতে পারে অর্থকরী ফসল চাষের জন্য ব্যাংক থেকে ঋণ পাওয়া যায়। ২০১৩ সালে ব্র্যাক ব্যাংকে আবেদন করার সাথে সাথেই এক লাখ টাকা ঋণ পায় সে। ঋণ সহায়তা পেয়ে এ মৌসুমে বৃহৎ আকারে তিন বিঘা জমিতে আদার চাষ করে সে।
জমির ফসলকে সে সন্তানের মতই যত্ন করে। সাত জন শ্রমিক তার সাথে ফসলের যত্ন নেয়, সময় মত সার দেয়। এখন আদা তোলার সময় হয়েছে। আশা করছে এ বছর ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা আয় করতে পারবে। তার সাফল্যে উৎসাহিত হয়ে এলাকার অনেক কৃষক এ আদা চাষে আগ্রহ হয়ে ওঠেছে।
বাংলাদেশ ব্যুরো অব স্ট্যাটিসটিক্স-এর তথ্য অনুযায়ী প্রতিবছর দেশে প্রায় ২২,০০০ একর জমিতে ৭৪,০০০ মেট্রিক টন আদা উৎপাদিত হয়। হেলালের মত উদ্যমী কৃষকরা এ ফসল চাষাবাদ শুরু করলে উৎপাদন আরও বেড়ে যাবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী আমদানি বিকল্প মসলা জাতীয় ফসল চাষে রেয়াতী হারে কৃষকদের ঋণ প্রদান করছে ব্র্যাক ব্যাংক।
ব্যাংকিং সুবিধার বাইরে থাকা অপ্রচলিত বিভিন্ন খাতে ঋণ সুবিধা প্রদান করে ব্র্যাক ব্যাংকের এস.এম.ই ব্যাংকিং বিভাগ যা দেশের টেকসই উন্নয়নে ভূমিকা রাখে। ব্যাংকিং সুবিধার বাইরে থাকা হেলালের মত উদ্যোক্তাদের স্বপ্ন পূরণের সাথে থাকে ব্র্যাক ব্যাংক।
কৃষকদের অর্থায়নে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে ব্র্যাক ব্যাংক। দেশে প্রথমবারের মত ‘কৃষক কার্ড’ চালু করে ব্র্যাক ব্যাংক। ট্রাক্টর অর্থায়নে কাজ করছে ব্র্যাক ব্যাংক। কৃষিপণ্য উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাতকরণে উদ্যোক্তাদের ঋণ সুবিধা প্রদানের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের দাতাসংস্থা ইউএসএআইডি’র সাথে কাজ করছে ব্র্যাক ব্যাংক। এস.এম.ই প্রধান ব্যাংক হিসেবে কৃষি, কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ ও কৃষিভিত্তিক ব্যবসায় অর্থায়নে প্রাধান্য দেয় ব্র্যাক ব্যাংক। এখন পর্যন্ত ৪০,০০০ উদ্যোক্তাকে ৩০০ কোটি টাকা ঋণ প্রদান করা হয়েছে। আর বর্তমানে আউট স্ট্যান্ডিং আছে ১৬০ কোটি টাকা।
কৃষক হেলালের স্বপ্ন তিন কন্যাকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করা। আরও স্বপ্ন ভবিষ্যতে সে ফসলের একটা গোডাউন ও একটি সুন্দর বাড়ি করবে।