প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধী নেতার সঙ্গে দেখা করবে পোশাকশিল্প মালিকরা

শিল্প মলিকেরা

bgmea_meetingসম্প্রতি গাজীপুরের স্ট্যান্ডার্ড সোয়েটার কারখানার আগুনে কোম্পানিটির ক্ষতিপূরণ, দেশের চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা থেকে পোশাক শিল্পকে রক্ষা করতে  প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধী দলীয় নেত্রীর সাথে দেখা করবে বিজিএমইএ, বিকেএমইএ ও বিটিএমইএর নেতারা। সোমবার রাজধানীর বিজিএমইএর সভাকক্ষে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অবস্থা ও স্ট্যান্ডার্ড গার্মেন্ট-এ নাশকতামূলক অগ্নিসংযোগের ফলে উদ্ভূত বিষয়ে জরুরি মতবিনিময় সভায় এ কথা জানানো হয়।

এ সময় তারা উভয়কেই স্বারকলিপি দেবে। এ জন্য প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করতে একটি দল ইতোমধ্যে প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।

এছাড়া আগামি বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে  পোশাক খাতকে চলতি নৈরাজ্য থেকে রক্ষার দাবীতে মানববন্ধন  করবেন ব্যবসায়ীরা।

আতিকুল ইসলাম বলেন, আমরা রাজনৈতিক দুরাবস্থার মধ্যে পড়তে চাই না। আজই ব্যবসার এই নাজুক পরিস্থিতির জন্য প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধী দলের নেতার কাছে স্মারকলিপি দেবো।

আজ শুধু স্ট্যান্ডার্ড সোয়েটার কারখানার ১২০০ টাকার ক্ষতি হয়নি। দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে বলে মনে করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, বিদেশি ক্রেতারা এই ঘটনার ব্যবস্থা নিয়ে জাতির সামনে পেশ করার জন্য সাফ জানিয়ে দিয়েছেন।কারখানায়  আগুনের কারণে ১৮ হাজার শ্রমিক আজ রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে।

নিম্নতম মজুরি ইস্যু নিয়ে পোশাক কারখানাগুলো ২১ দিন বন্ধ ছিলো। এতে অনেক অর্ডারসহ পণ্য পরিবহন ও জাহাজীকরণ হয়নি বলে জানান তিনি।এসময় স্ট্যান্ডার্ড সোয়েটার কারখানায় আগুন ও সার্বিক পরিস্থিতির কারণে বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বেলা ১২টায় ব্যবসায়ীদের নিয়ে মানববন্ধন করা হবে জানান তিনি।

মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন, ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন (এফবিসিসিআই)এর সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দীন আহমেদ, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি সবুর খান, স্ট্যান্ডার্ড সোয়েটার কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, হাইওয়ে পুলিশের (ডিআইজি)আক্তারুজ্জামান, বিটিএমএর সভাপতি জাহাঙ্গীর আলামিন, বিকেএমইএর সহ সভাপতি মুহাম্মাদ হাতেম, বিজিএমইএ সাবেক সভাপতি আব্দুস সালাম মোর্শেদী, শফিউল ইসলাম মহিউদ্দীন, পারভেজসহ বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ এবং অন্যান্য ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ।

অনুষ্ঠানে এফবিসিসিআই সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দীন বলেন, সরকার অতীতে এই জাতীয় ঘটনার বিচার করেনি বলে আজ এতো বড় কারখানা আগুনে পুড়লো। এটা সরকারের অকৃতকার্যতা। এর দায় সরকার এড়াতে পারেনা বলে মনে করেন তিনি।

পোশাক খাত নিয়ে দেশি ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র চলছে দাবি করে তিনি দুই নেত্রীকে উদ্দেশ্যে  বলেন, দেশ ধবংস হয়ে গেলে তারা প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধী দলের নেতা হবেন কি করে।

ডিসিসিআই সভাপতি সবুর খান বলেন, এই ঘটনার সমাধান না করা গেলে  ব্যবসা খাত ধবংস হয়ে যাবে। কোনও ভাবেই এই শিল্পকে ধরে রাখা যাবে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।

এর আগে মালিকেরা তাদের বক্তব্যে বলেন, আজ পরিকল্পিতভাবে পোশাক খাতকে ধবংস করা হচ্ছে। আগুনে জ্বলছে কারখানা। তারপরও সরকার ও শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের কোনও প্রকার বিবৃতি নেই  বলে অভিযোগ করেন তারা। এর জন্য বিজিএমইএসহ সব মালিক সংগঠনকে কার্যকরি পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান তারা।

দুর্ঘটনার জন্য যত দিন কারখানা বন্ধ থাকবে তত দিনের বেতন শ্রমিকদের দেওয়া হবে না বলে জানান তারা। তাছাড়া পোশাক শিল্পের জন্য আলাদা মন্ত্রণালয় করার দাবি ও জানান নেতারা।

বিজিএমইএ সাবেক সভাপতি আনোয়ারুল আলম পারভেজ বলেন, আমরা কেউ ভালো নেই।  এতো বড় খাত ধবংস হলে দেশ মুখ থুবড়ে পড়বে বলে মনে করেন তিনি।তিনি মনে করেন যতক্ষণ সমঝোতা না আসবে ততক্ষণ নাশকতা চলতে থাকবে।তাই ব্যবসায়ী সমাজের নিরাপত্তা দাবি করেন তিনি।

সাবেক সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দীন বলেন, একাত্তরের দোষীদের মতো স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল গঠন করে এই ঘটনার বিচার করতে হবে।দেশে সহিংস রাজনীতি বন্ধ না হলে ব্যবসা খাতের প্রবৃদ্ধি আরও কমবে বলে জানান তিনি।