
গত বৃহস্পতিবার রাতে গাজীপুরের স্ট্যান্ডার্ড সোয়েটার কারখানার আগুনে কোম্পানিটির প্রায় ১২০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেন। আর এই ঘটনায় দেশের বাৎসরিক ৩০ কোটি মার্কিন ডলার রপ্তানি আয়ও হুমকির মুখে পড়েছে। এ সময় তিনি একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন তদন্ত কমিটি গঠন করে এই ঘটনায় জড়িতদের যথাযথ বিচার দাবী করেন।
তিনি শনিবার ক্ষতিগ্রস্ত কারখানা ভবনের বিষয়ে বিজিএমইএ ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন।
তিনি এ সময় কান্না জড়িতে কণ্ঠে বলেন, আমি চেয়েছিলাম দেশের ও মানুষের কল্যানে কাজ করতে অথচ তার প্রতিদানে আজ আমাকে নিস্ব হতে হলো।
তিনি বলেন, আমি অত্যন্ত ব্যতীত। এদেশে বৈদেশিক মুদ্রা আয় ও গরীব মানুষের কর্মসংস্থান বাড়ানোর জন্য ইঞ্জিনিয়ারং ফেলে পোশাক খাতে নেমে ছিলাম। চেয়ে ছিলাম এদেশের সেবা করতে। তার প্রতিদান আজ আমি এটা পেলাম। আমি এখন সর্বশান্ত হয়ে গেছি। কান্না ছাড়া এখন আমার আর কোনো ভাষা নেই।
এই সব ঘটনা কারা ঘটিয়েছে তাদের টিহ্নিত করে শাস্তি না দিলে পোশাক খাত সর্বশান্ত হয়ে যাবে বলে মনে করেন তিনি। সঙ্গে সঙ্গে তিনি ঘটনা তদন্তের জন্য উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন কমিটি গঠন করার দাবিও জানান। যাতে তিনি ন্যায় বিচার পান।
ঘটনা ঘটার আগে রাত সাড়ে ১০ টায় কে বা কারা মসজিদের মুয়াজ্জিনের গলা ছুরি ধরে মাইকের চাবি নিল। কারা গুজব ছড়ায়ে শান্ত শ্রমিকদের রাস্তায় নামালো। কারা রাস্তায় গাছের গুড়ি ফেলে ফায়ার সার্ভিস, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রবেশকে বাধাগ্রস্ত করলো।এ নানা প্রশ্নের জবাব সাংবাদিকদের মাধ্যমে সরকার, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও দেশের জনগণের কাছে জানতে চান।
সংবাদ সম্মেলনে বিজিএমইএর সভাপতি আতিকুল ইসলাম বলেন, পোশাক শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে আমরা যখন নিরন্তর সংগ্রাম করছি, তখন বিভিন্ন ইস্যু , মিথ্যা গুজব সৃষ্টি করে এই খাতকে আরও অস্থির করা হচ্ছে।
শান্ত শ্রমিক গোষ্ঠীকে উস্কানি দিয়ে অশান্ত করা হচ্ছে। এতে করে পোশাক খাতকে ক্রমান্বয়ে আরও অগ্নিগর্ভ অবস্থার দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে বলে মনে করেন তিনি।
পোশাক শিল্পকে নিয়ে যারা ষড়যন্ত্র করছে, তাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিতে সরকার, রাজনৈতিক দল ও সুশীল সামাজের প্রতি অনুরোধ করেন। যাতে করে পোশাক শিল্পকে নিয়ে আর কেউ ছিনিমিনি খেলতে না পারে।
এসময় তিনি পোশাক শিল্পের নিরাপত্তা দাবি করে করেন।এছাড়া পোশাক শিল্পের জন্য আলাদা সেক্টর ও আইন করার জন্য সরকারের প্রতি দাবিও জানান।
তিনি বলেন, নাশকতা কমাতে সরকারের কোনো স্বদিচ্ছা নেই। থাকলে এতোক্ষণে এর ব্যবস্থা নেওয়া হতো। অতীতে যদি কোনো ঘটনার যথাযথ কারণ উৎঘাটন করা হতো তবে পরবর্তীতে আর এমন হতো না বলে দাবি করেন তিনি।
সাবেক সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দীন বলেন, এখানে সরকার আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার দায়িত্ব আছে। সবাই মিলে যদি আমরা এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে চাই তবেই খাতটি টিকে থাকবে বলে মনে করে তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে সাবেক সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী, শহীদুল্লাহ আজীম, এস এম, মান্নান কচি, রিয়াজ বিন মাহমুদ, স্ট্যান্ডার্ড গ্রুপের মালিকের দুই ছেলে হাসনাত ও ফাইমসহ বিজিএমইএর নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।