অনিশ্চিত হলো স্ট্যান্ডার্ডের ১৫ হাজার শ্রমিকের ভবিষ্যত

: ফাইল ছবি

standard_fireগত রাতে গাজীপুরের স্ট্যান্ডার্ড সোয়েটার কারখানার আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ১৩ ঘণ্টার চেষ্টায় এ আগুন নিয়ন্ত্রনে আনেন। গত রাতের শুরু হওয়া ওই অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে গেছে কারখানার প্রায় সকল কিছু। সেই সাথে পুড়লো ১৫ হাজার শ্রমিকের ভবিষ্যতও।

কারণ কারখানার যে অবস্থা তাতে এই কারখানা আবার কবে চালু হবে সে বিষয়ে নিশ্চিত না মালিক পক্ষ এবং পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারদের সংগঠন বিজিএমইএ। আর এই অবস্থায় অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে ওই কারখানার ১৫ হাজার শ্রমিকের জীবন।

শ্রমিকরাই এই আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ করে তাদের পুর্নবাসনে মালিক পক্ষের কিছু করার নেই বলেও জানিয়েছেন বিজিএমইএর সহসভাপতি শহীদুল্লাহ আজীম। স্থানীয় কিছু সন্ত্রাসী ও স্বার্থান্বেষী শ্রমিক নেতাদের উস্কানিতে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।

সেই সাথে এই ঘটনায় তিনি গভীর উদ্বেগও প্রকাশ করেন। তিনি দেশে ব্যবসার পরিবেশ নেই বলে মন্তব্য করে বলেন, ‘দেশে কোনো চেইন অব কমান্ড নেই। এই যে ভয়াবহ ক্ষতির ঘটনাটি ঘটে গেল তার নালিশ আমরা কার কাছে করবো?’

দেশে বর্তমানে এই নালিশ শোনারও কেউ নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

এদিকে শ্রমিকদের দাবি যে প্রতিষ্ঠানে তারা কাজ করেন, যে প্রতিষ্ঠান তাদের খাবার যোগায় সেই প্রতিষ্ঠানে তারা আগুন দেয় নি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শ্রমিক জানান, খুব ভোরে তিনি যখন শুনতে পান তার কারখানা আগুনে পুড়ছে, তিনি ছুটে এসেছেন। হতবিহ্বল হয়ে তাকিয়ে দেখেছেন তার প্রিয় কর্মস্থলে জ্বলতে থাকা লেলিহান শিখা।

প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার রাতে কোনাবাড়ির জরুন এলাকার মজুরি বাড়ানোসহ বিভিন্ন দাবি নিয়ে রাতে বৈঠকে বসে স্ট্যান্ডার্ড সোয়েটার কারখানার শ্রমিকরা। খবর পেয়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার শেল এবং রাবার বুলেট ছোড়ে পুলিশ। সেসময় গুলিতে দুই  শ্রমিক মারা গেছে এমন গুজব ছড়ালে রাত সাড়ে ১১টায় কয়েকটি গাড়ি ও কারখানায় আগুন দেয় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের একটি অংশ। এতে দশতলা ওই কারখানার সব কয়টি ফ্লোরই পুড়ে যায় আর রপ্তানির জন্য প্রস্তুত করে রাখা কয়েক গাড়ি তৈরি পোশাক এবং গুদামে রাখা কাচামালও ভষ্মিভুত হয়।

সব মিলিয়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনও নির্ধারণ সম্ভব না হলেও কারখানার আর কিছুই কাজে লাগানোর উপযোগি নেই বলে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা জানিয়েছেন।

খবর পেয়ে দমকল বাহিনী সেখানে পৌঁছালেও শ্রমিক বিক্ষোভের মুখে প্রায় এক ঘন্টা পর কাজ শুরু করে তারা। পরে দীর্ঘ ১৩ ঘণ্টা চেষ্টার করে ১২ টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে ফায়ার সার্ভিস।