
দেশের সম্ভাবনাময় পর্যটন শিল্পকে হরতাল-অবরোধের আওতামুক্ত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন এ খাতের ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তারা। তারা বলেছেন, অন্য যে কোনো শিল্পের চেয়ে এ শিল্প অনেক বেশি সংবেদনশীল। মানুষ মনের আনন্দ ও বিনোদনের জন্য দেশ-বিদেশ ঘুরে বেড়ায়। কিন্তু সামান্য নিরাপত্তাহীনতা দেখা দিলে তারা এ ঝুঁকি নিতে চায় না।
উদ্যোক্তারা বলেছেন, এ শিল্পের বিকাশে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিলে অর্থনীতির চেহারা বদলে দেওয়া সম্ভব। কিন্তু নানা সংকটে সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো যাচ্ছে না।
বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক পর্যটন মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তারা এ কথা বলেন। দেশের পর্যটন শিল্পকে এগিয়ে নিতে ও বিশ্ব দরবারে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার লক্ষ্যকে সামনে রেখে রাজধানীতে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী ৩য় বাংলাদেশ-আন্তর্জাতিক পর্যটন মেলা। পর্যটন শিল্পকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের দ্বিতীয় থাত উল্লেথ করে একে টিকিয়ে রাখতে এ খাতকে হরতাল ও অবরোধদের আওতামুক্ত রাখার আহ্বান জানিয়েছে পর্যটন শিল্পের সাথে জড়িত বিভিন্ন সংগঠন।
বৃহস্পতিবার বিকেল রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রী রুহুল আমিন হাওলাদার এ মেলার উদ্বোধন করেন। তিন দিনব্যাপি এ মেলা চলবে আগামী ৩০ নভেম্বর শনিবার পর্যন্ত।
বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন ফর ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট,বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়,বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড,ফেডারেশন অফ বাংলাদেশ চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ,বাংলাদেশ ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন এবং বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক হোটেল অ্যাসোসিয়েশন এ মেলার আয়োজন করে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী রুহুল আমিন হাওলাদার ছাড়াও ইন্দোনেশিয়া,মিয়ানমার, মালদ্বীপ,ভুটান ও শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রদূত,বেসরকারি বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব খুরশেদ আলম চৌধুরী এবং এফবিসিসিআই সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
মেলার উদ্বোধন শেষে বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করে রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন,বাংলাদেশে পর্যটন শিল্পের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। এ দেশের পর্যটন কেন্দ্রগুলোর পরিচিতি সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে দেশের বাহিরে ছড়িয়ে দিতে পারলে তৈরি পোশাক শিল্পের পরেই এ শিল্প দেশের অর্থনীতিতে ভুমিকা রাখেতে পারবে।
মেলার আয়োজকরা বলেন,বাংলাদেশে পর্যটনের যে সুযোগ রয়েছে তার পৃষ্ঠপোষকতা ও প্রচারণা যথার্থ হলে এদেশের শিল্পটি অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারবে। পর্যটন মানে ঘুরে-ফিরে বেড়ানো নয়, এ মেলার মাধ্যমে বাংলাদেশ বিশ্বের কাছে পরিচিতি পাবে। একই সঙ্গে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ট্যুরিজম ভাল ভূমিকা রাখতে পারে। তবে দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে এ শিল্প বর্তমানে পিছিয়ে পড়েছে উল্লেখ করে পর্যটকদের যানবাহন হরতাল অবরোধের আওতামুক্ত রাখার আহ্বান জানান তারা।
টোয়াবের সভাপতি তৌফিক উদ্দিন আহমেদ বলেন,ট্যুরিজম নিয়ে মেলার আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য হলো ভ্রমণকারীদের সাথে বিভিন্ন বেসরকারী ট্রাভেলস ও ট্যুর এজেন্সির সেতুবন্ধন তৈরি করা। একই সাথ দেশের পর্যটনের সাথে কাজ করা প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানগুলোকে উৎসাহ দেওয়া। তাদেরকে বিশ্ব দরবারে পরিচয় করিয়ে দেওয়া।
মেলার প্রথম দিনে স্টলগুলো ঘুরে দেখা যায়,এতে ইউরোপ,মধ্যপ্রাচ্য এবং এশিয়ার বিভিন্ন দেশ অংশ নিয়েছে। ট্রাভেল এজেন্টস,ট্যুর অপারেটরস, হোটেল,রিসোর্টস, হাসপাতাল,শিক্ষা প্রতিষ্ঠান,জাতীয় ট্যুরিজম প্রতিষ্ঠান,বিমান সংস্থা,আর্থিক সংগঠন এবং অন্যান্য পর্যটন সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান মেলায় অংশ গ্রহণ করেছে।মেলায় ১৫৫টি স্টল রয়েছে। প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানই মেলা উপলক্ষ্যে ১০-৫০ শতাংশ ছাড়সহ র্যাফেল ড্রয়ের মাধ্যমে বিনা খরচে দেশ-বিদেশ ভ্রমণের অফার দিয়েছে। মেলার প্রবেশ মূল্য রাখা হয়েছে ২০ টাকা।