
দেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থার নড়বড়ে অবস্থা কাটেনি।ব্যাংকগুলোর সব সূচক এখন নিম্নমুখী। ঋণ বিতরণ কমে গেছে।বেড়েছে খেলাপী ঋণ।আমদানি কমে যাওয়ায় বৈদেশিক বাণিজ্যের অর্থায়নেও কমেছে আয়।কিন্তু এতো কিছুর মধ্যেও নাটকীয়ভাবে পুঁজিবাজারে বাড়ছে ব্যাংকের শেয়ারের দাম।গত তিন সপ্তাহে সর্বনিম্ন ১৫ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ৬৯ শতাংশ পর্যন্ত বাদ বেড়েছে বিভিন্ন ব্যাংকের শেয়ারের দাম।
পুঁজিবাজারে বর্তমানে ৩০ ব্যাংক তালিকাভুক্ত আছে।গত তিন সপ্তাহে সবগুলো ব্যাংকেরই শেয়ারের দাম বেড়েছে।এদের মধ্যে ২০ শতাংশের বেশি দাম বেড়েছে ২১ টি ব্যাংকের শেয়ারের দাম বেড়েছে ২০ শতাংশের বেশি।আর ৩০ শতাংশের বেশি বেড়েছে ১৬ টি ব্যাংকের শেয়ারের দাম।পাঁচটি ব্যাংকের শেয়ারের দাম বেড়েছে প্রায় ৪০ শতাংশ।
শেয়ারের দামে প্রবল উর্ধগতি দেখা গেলেও ব্যবসায় ভাল করতে পারছে না ব্যাংকগুলো।বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে ৪৮ ভাগ কোম্পানির মুনাফা কমেছে।চারটি ব্যাংক লোকসান দিয়েছে।গত প্রান্তিকে দেশের ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে চার হাজার কোটি টাকার বেশি।বিভিন্ন খাতে ঋণ বিতরণও কমছে।গত প্রান্তিকে শুধু শিল্প খাতে ঋণ বিতরণ কমেছে প্রায় ৯ শতাংশ।গত বছর প্রথম প্রান্তিকে ব্যাংকগুলো শিল্প খাতে নয় হাজার ৭৬০ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করেছিল।এবার তা কমে আট হাজার ৮৮১ টাকায় নেমে এসেছে।
কিন্তু সব সূচক নিম্নমুখী হওয়া সত্ত্বেও ধেই ধেই করে বাড়ছে বিভিন্ন ব্যাংকের শেয়ারের দাম।যে ব্যাংকগুলো ভাল পারফরম করতে পারছে না,গত প্রান্তিকে যাদের মুনাফা কমেছে সে সব ব্যাংকের শেয়ারের দামও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়েছে।এমনকি লোকসানি ব্যাংকগুলোও এ ধারা থেকে বাদ পড়েনি।
ব্যাংকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে আইএফআইসি ব্যাংকের শেয়ারের।গত ২৪ অক্টোবর এ ব্যাংকের শেয়ারের দাম ছিল ২১ টাকা ২০ পয়সা।মাত্র তিন সপ্তাহের ব্যাবধানে এর শেয়ারের দাম বাড়ে ১৪ টাকা ৯০ পয়সা।গত ১৪ নভেম্বর ব্যাংকটির শেয়ারের দাম ছিল ৩৬ টাকা ১০ পয়সা।অবশ্য গত প্রান্তিকে এ ব্যাংকটি মুনাফায় বেশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে।
এ সময়ে ৪৯ শতাংশ দর বৃদ্ধি নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসে মার্কেন্টাইল ব্যাংক।এর শেয়ারের দাম ১১ টাকা ৮০ পয়সা থেকে বেড়ে হয় ১৭ টাকা ৬০ পয়সা।
ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের শেয়ারের দাম গত তিন সপ্তাহে ৪৬ শতাংশ বেড়েছে।গত ২৪ অক্টোবর এ ব্যাংকের শেয়ারের দাম ছিল ১১ টাকা ৩০ পয়সা ১৪ নভেম্বর তা বেড়ে ১৬ টাকা ১৫ পয়সা দাঁড়ায়।
সিটি ব্যাংকের শেয়ারের দাম গত ২৪ অক্টোবর ছিল ১৬ টাকা ২০ পয়সা।গত ১৪ নভেম্বর তা বেড়ে হয়েছে ২২ টাকা ৩০ পয়সা।দাম বেড়েছে ৩৭ টাকা ৬৫ শতাংশ।
প্রিমিয়ার ব্যাংকের শেয়ারের দাম এ সময়ে বেড়েছে ৪২ শতাংশ। এর শেয়ারের নয় টাকা থেকে বেড়ে ১২ টাকা ৮০ পয়সা হয়েছে।
আলআরাফা ইসলামী ব্যাংকের শেয়ারের দাম ৩৬ শতাংশ বেড়ে ১৪ টাকা ৬০ পয়সা থেকে বেড়ে ১৯ টাকা ৮০ পয়সা হয়।
এ সময়ে এবি ব্যাংকের শেয়ারের দাম ২১ শতাংশ বেড়েছে।অন্য ব্যাংকগুলোর মধ্যে ব্যাংক এশিয়া নয় শতাংশ,ব্র্যাক ব্যাংক ১৫ শতাংশ,ঢাকা ব্যাংক ছয় শতাংশ,ডাচ বাংলা ১২ শতাংশ,ইবিএল ১৩ শতাংশ,এক্সিম ২৭ শতাংশ,আইসিবি ইসলামী ব্যাংকের ১৯ শতাংশ,ইসলামী ব্যাংকের দুই শতাংশ,যমুনা ব্যাংকের ২৩ শতাংশ,এমটিবিএলের ৭ শতাংশ,এনবিএলের ২৫ শতাংশ, এনসিসি ব্যাংকের ২৬ শতাংশ,ওয়ান ব্যাংকের ২৭ শতাংশ,প্রাইম ব্যাংকের শেয়ারের দাম ২০ শতাংশ . . শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের শেয়ারের দাম ৩৩শতাংশ,এসআইবিএলের শেয়ারের দাম ৩২ শতাংশ, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের শেয়ারের দাম ২৩ শতাংশ, ট্রাস্ট ব্যাংকের শেয়ারের দাম ১৫ শতাংশ, উত্তরা ব্যাংকের শেয়ারের ২৭ শতাংশ এবং ইউসিবিএলের শেয়ারের দাম ২৯ শতাংম বেড়েছে।