
বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণে কমিশন গঠনসহ ৯ দফা দাবি বাস্তবায়নে সরকারকে সময় বেধে দিয়েছে ভাড়াটিয়াদের সংগঠন বাংলাদেশ ভাড়াটিয়া কল্যাণ সমিতি। এ ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দেবে সংগঠনটি।
রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই আল্টিমেটামের কথা জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, চলতি বছরের ১ জুলাই বাড়ির মালিক ও ভাড়াটিয়াদের সার্বিক সমস্যা নিরসনে একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিশন গঠনের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
ওই নির্দেশে বলা হয়, কমিশন সুপারিশ না করা পর্যন্ত ১৯৯১ সালের বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইনের ৩ ধারা অনুযায়ী সরকারের আর্থিক সক্ষমতাসাপেক্ষে প্রতিটি ওয়ার্ডে বাড়িভাড়া –সংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য একজন করে নিয়ন্ত্রক, অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রক ও উপনিয়ন্ত্রক নিয়োগের উদ্যোগ নেবে।
এসময় বাড়িওয়ালা-ভাড়াটিয়াদের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে বাংলাদেশ ভাড়াটিয়া কল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকে ৯ দফা সুপারিশ তুলে ধরা হয়।
সুপারিশগুলো হলো:
এক. জাতীয় সংসদের অধিবেশনে বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রন কমিশন গঠনসহ বাড়িওয়ালা ও ভাড়াটিয়া নীতিমালা প্রনয়ণের বিল পাশ করতে হবে।
দুই. বাড়িভাড়া আইন বাস্তবায়ন করতে জেলা প্রসাশক, বিভাগীয় প্রশাসক, সিটি কর্পোরেশন, এলজিআরডি মন্ত্রণালয় এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়কে দায়িত্ব দিতে হবে।
তিন. বাড়িভাড়া স্ট্যান্ডিং করতে সিটি কর্পোরেশনসহ জেলা পৌরসভা ও উপজেলা প্রশাসককে নির্দেশ দিতে হবে। সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক মনোনীত ভাড়ার তালিকা অনুযায়ী ভাড়া গ্রহণের ক্ষেত্রে বাড়িওয়ালাদের জন্য সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে।
চার. বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইন ১৯৯১ ও বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ প্রনীত বিধিমালা ১৯৬৪ এর যথাযথ বাস্তবায়ন, কার্যকর ও সংস্কার করতে হবে।
পাঁচ. বাড়িভাড়ার সাথে সরকারের সরাসরি হোল্ডিং ট্যাক্স নয়, রাজস্ব আয় জড়িত তাই রাজস্ব বিভাগ, সিটি কর্পোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও দপ্তরকে জড়িত করতে হবে।
ছয়. বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়ন ও কার্যকর করতে জাতীয় সংসদে বিশেষ কমিটি গঠন ও ভ্রাম্যমাণ আদালত গঠনের আইন পাশ করাতে হবে।
সাত. দেশের ৭টি বিভাগীয় শহরে বাড়িওয়ালা ও ভাড়াটিয়া পরিদর্শন টিম গঠনসহ প্রত্যেক সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা ও জেলা সদরে মৌজা রেট অনুযায়ী বাড়িভাড়া সুনির্দিষ্ট নমুনা নির্ধারণ করে দিতে হবে।
আট. দুর্নীতি দমন কমিশনের অধীনে বাড়িভাড়া ও ভাড়াটিয়া দ্বন্দ্ব দূর করতে একটি শক্তিশালী মনিটরিং সেল করতে হবে।
নয়. সাধারণ নাগরিকদের বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইন সম্পর্কিত সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ বা দপ্তর থেকে রাষ্ট্রীয়ভাবে বিভিন্ন মিডিয়ার মাধ্যমে নিয়মিত বিজ্ঞাপণ ও বিজ্ঞপ্তি প্রচারের ব্যবস্থা করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সভাপতি মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী,সহ সভাপতি শাহনেওয়াজ আলী মির্জা, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ তৌকির আহমেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক ইফতেখার উদ্দিন প্রমুখ।
অর্থসূচক/মাইদুল