
উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা নারীদের চেয়ে পুরুষের বেশি নাকি পুরুষের চেয়ে নারী- এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা চালিয়ে আসছেন চিকিৎসাবিদরা।
অবশেষে উত্তর ক্যারোলিনা ভিত্তিক ওয়েক ফরেস্ট ব্যপটিস্ট মেডিকেল সেন্টারের কয়েকজন চিকিৎসাবিজ্ঞানী নিশ্চিত হতে পেরেছেন- এতে পুরুষের চেয়ে নারীরাই বেশি ঝুঁকির সম্মুখীন হন।
ভারতের গণমাধ্যম সংস্থা দি টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
গবেষকরা জানিয়েছেন, উচ্চ রক্তচাপ প্রায়ই একটি স্থায়ী রোগ হিসেবে বিবেচিত। কম বেশি সবারই এ রোগ থাকে। তবে এতে পুরুষের চেয়ে নারীরাই বেশি আক্রান্ত হয়। কারণ তারাই সবচেয়ে বেশি উত্তেজনা ও দুশ্চিন্তায় ভোগে। থিরাপিউটিক এ্যডভ্যান্স ইন কারডিওভাসকুলার ডিজেস নামক এক গবেষণায় এ তথ্য তুলে ধরেছেন তারা।
অন্যান্য রোগ তেমন নেই অথচ উচ্চ রক্তচাপে ভুগছে এমন ৫৩ বছর বয়সী পুরুষ ও নারীদের ওপর গবেষণা চালিয়ে এ ফলাফল পান। গবেষণায় বলা হয়, উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের হার্ট অথবা ব্লাড ভেসেল তাদের উত্তেজনা ও উদ্বিগ্নতা কিংবা দুশ্চিন্তাকে বাড়িয়ে দেয়।
গবেষণায় আরও বলা হয়, ব্লাড প্রেসারের রোগীদের ক্ষেত্রে পুরুষের তুলনায় নারীদের ভ্যাসকুলার রোগের মাত্রা ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ বেশি। এ ছাড়া রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে নারীদের হরমোনের মাত্রাও পুরুষের তুলনায় ভিন্ন। এর ফলে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও বেশি থাকে।
যুক্তরাষ্ট্রে গত দুই দশকে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে পুরুষের মৃত্যুর সংখ্যাও বেড়ে গেছে। একই সময়ে নারীদের মৃত্যুও বেড়েছে সমভাবে।
এই গবেষণার পরিচালক কার্লোস ফেরারিটও জানান, এর জন্য চিকিৎসা ও প্রতিরোধ দুটোই জরুরি। তা না হলে বিভিন্ন জটিলতা, এমনকি হঠাৎ মৃত্যুরও ঝুঁকি থাকে। এছাড়া বিভিন্ন বয়সের সঙ্গে সঙ্গে একেকজন মানুষের শরীরে রক্তচাপের মাত্রা ভিন্ন এবং একই মানুষের ক্ষেত্রে বিভিন্ন সময়ে স্বাভাবিক এই রক্তচাপও বিভিন্ন রকম হতে পারে। উত্তেজনা, দুশ্চিন্তা, অধিক পরিশ্রম ও ব্যায়ামের ফলে রক্তচাপ বাড়তে পারে।
তিনি আরও জানান, আমাদের এই গবেষণা নারীদের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। এখন আমাদের দরকার এ রোগ নিয়ন্ত্রণে বা প্রতিরোধে ওষুধ তৈরি করা, গবেষণা করে দেখা পুরুষের ক্ষেত্রে কিংবা নারীর ক্ষেত্রে আরও কোনো নতুন ওষুধের ডোজ দেওয়া যায় কিনা।